Thursday 18 February 2016

রেজিষ্ট্রেশন আইন

প্রশ্ন-৯ যেসব কারণে একটি দলিল রেজিষ্ট্রিকরণে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করা যায় তা অলোচনা কর। এরুপ অস্বীকৃতির বিরুদ্ধে কি কি প্রতিকার পাওয়া যায়? কারা হস্তান্তর দলিল উপস্থাপন করার যোগ্য?
যে সব কারণে একটি দলিল রেজিষ্ট্রিকরণে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করা যায় তার অলোচনা:
কোন দলিল রেজিষ্ট্রি করার জন্য রেজিষ্ট্রি অফিসে দাখিল করলে রেজিস্ট্রিকারী অফিসার বা সাব-রেজিস্ট্রার রেজিষ্ট্রেশন আইনের বিধান মোতাবেক উক্ত দলিলের রেজিষ্ট্রেশন করবেন এটাই সাধারন নিয়ম। তবে নিম্ন বর্নিত কারনে রেজিস্ট্রিকারী অফিসার কোন দলিল রেজিষ্ট্রেশন করতে অস্বীকার করতে পারেন:
ক) যদি কোন দলিল রেজিস্ট্রিকারী অফিসারের বোধগম্য ভাষায় বা জেলায় সচরাচর ব্যবহ্নত ভাষায় লিখিত না হয়ে থাকেকিংবা উক্তরুপ লিখিত হয়ে থাকলে তার একটা হুবহু অনুবাদ সহ দাখিল করা না হযে থাকে ,তবে রেজিস্ট্রেশন আইনের ১৯ ধারার বিধান মতে এ দলিলের নিবন্ধন অস্বীকার করা যায়।
খ) দলিলে অর্ন্তবর্তী লাইন, শূন্যস্থান মুছে ফেলা বা কোন পরিবর্তন থাকলে দলিল সম্পাদনকারী যদি সেখানে তার দস্তখত দ্বারা সত্যায়ন না করেন। (ধারা-২০)
গ) অসম্পূর্ণ বিবরণ সম্বলিত স্থাবর সম্পত্তি রেজিষ্ট্রি করতে রেজিষ্ট্রেশন অফিসার অস্বীকার করতে পারেন। (ধারা-২১)
ঘ) উইল ছাড়া স্থাবর সম্পত্তির দলিলে সম্পত্তিটি সনাক্তকরণে বিবরণ না থাকলে।
ঙ) উইল ছাড়া স্থাবর সম্পত্তির দলিল সম্পাদনের ৪ মাসের মধ্যে নিবন্ধনের জন্য উপস্থাপন করা না হলে।ধারা-২৩
চ) দেশে সম্পাদিত কোন দলিল বা প্রদত্ত ডিক্রি বা হুকুমনামার নকল অপরিহার্য কারনে ৪ মাস পর উপস্থাপন করা হলে সে ক্ষেত্রে যদি নির্ধারিত জরিমানা প্রদান না করা হয়ে থাকে। (ধারা-২৫)
ছ) রেজিস্ট্রিকারী অফিসারের এখতিয়ারভূক্ত এলাকায় সেই সম্পত্তি না হলে বা এর অধিকাংশ সম্পত্তি সেই এলাকায় না হলে। (ধারা-২৮)
জ) দলিলের সম্পাদনকারী যদি রেজিস্ট্রিকারী অফিসারের বিবেচনায় নাবালক.হাবা বা পাগল বিবেচিত হয় তাহলে তিনি দলিলটি রেজিস্ট্রি করতে অস্বীকার করতে পারেন। [ধারা -৩৫]
সুতরাং উপরোক্ত কারনে রেজিস্ট্রার বা সাব-রেজিস্ট্রার একটি দালিল নিবন্ধনের জন্য অস্বীকার করতে পারেন।
এরুপ অস্বীকৃতির বিরুদ্ধে কি কি প্রতিকার পাওয়া যায়:
এ বিষয়ে যাবতীয় বিধানাবলী ১৯০৮ সালের রেজিস্ট্রেশন আইন এর ৭১ থেকে ৭৭ ধারা পর্যন্ত বর্ণিত হয়েছে।
৭১ ধারানুযায়ী প্রত্যেক সাব রেজিস্টার দলিলের কোন সম্পত্তি তার এলাকাধীন নয় এই কারণ ব্যতীত কোন কারণে দলিল রেজিস্ট্রি করতে অস্বীকার করলে এ মর্মে লিখিত আদেশ দিবেন এবং ২ নং বহিতে অস্বীকৃতির কারণ এবং দলিলের উপর রেজিস্ট্রিকরণে অস্বীকৃতি কথাগুলি লিপিবদ্ধ করবেন এবং এই আদেশ দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি কর্তৃক দরখাস্ত করা হলে বিনা খরচে অবিলম্বে রেজিস্ট্রিকরণ অস্বীকারের কারণ সম্বলিত একটি নকল দিবেন।
৭২ ধারানুযায়ী সম্পাদনের অসম্মতি ব্যতীত অন্য কোন কারণে সাবরেজিস্টার কর্তৃক রেজিস্ট্রির জন্য দলিল গ্রহণে অস্বীকার করলে এরুপ আদেশ প্রদানের তারিখ হতে ৩০ দিনের মধ্যে তার উর্ধ্বতন রেজিস্টারের নিকট উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে আপীল করা যাবে এবং রেজিস্টার প্রয়োজন বোধে বিতর্কিত আদেশ পাল্টাইতে বা পরিবর্তন করতে পারবেন। রেজিস্টার যদি দলিলটি রেজিষ্ট্রি হবে বলে আদেশ দেন এবং তৎপর দলিলটি যদি এই প্রকার আদেশের তারিখ হতে ৩০ দিনের মধ্যে সাবরেজিস্ট্রারের নিকট রেজিস্ট্রির জন্য দাখিল হয়, তবে তিনি উর্ধ্বতন অফিসারের এই আদেশ পালন করবেন এবং দলিলটি রেজিস্ট্রি করবেন।
৭৩ ধারানুযায়ী দলিলটি যদি সম্পাদন অস্বীকার করার কারণে রেজিস্ট্রিকরণ অস্বীকৃত হয়ে থাকে, তবে এই প্রকার রেজিস্ট্রিকরণ অস্বীকার আদেশের তারিখ হতে ৩০ দিনের মধ্যে উর্ধ্বতন রেজিস্ট্রারের নিকট ক্ষুদ্ধ ব্যক্তি দলিল রেজিস্ট্রির জন্য দরখাস্ত দিতে পারবেন। এই প্রকার দরখাস্ত সত্যায়িত এবং লিখিতভাবে রেজিস্ট্রিকরণ অস্বীকৃতির নকল সহ দিতে হবে।
৭৪ ধারানুযায়ী এভাবে সাবরেজিস্ট্রার কর্তৃক রেজিস্ট্রিকরণ অস্বীকারের বিরুদ্ধে কোন দরখাস্ত দাখিল হলে অথবা রেজিস্ট্রারের নিকট সরাসরি কোন দরখাস্ত দাখিল হলে তিনি অনুসন্ধান করে দেখবেন
    দলিলটি যথার্থই সম্পাদিত হয়েছে কিনা এবং
    অত্র আইনে বর্ণিত অন্যান্য শর্তাদি দরখাস্তকারী কর্তৃক পালিত হয়েছে কিনা এবং দরখাস্তকারী দলিলটি রেজিষ্ট্রি হওয়ার আদেশ পাবারযোগ্য কিনা।
৭৫ ধারানুযায়ী রেজিস্ট্রার যদি দেখেন যে, দলিলটি সত্যই সম্পাদিত হয়েছে এবং শর্তাবলী যথারীতি পালন করা হয়েছে,তাহলে তিনি দলিলটি রেজিস্ট্রি করতে আদেশ দিবেন। এই আদেশে দানের ৩০ দিনের মধ্যে দলিলটি রেজিস্ট্রিকারী অফিসারের নিকট দাখিল হলে তিনি রেজিস্ট্রারের আদেশ মোতাবেক দলিলটি রেজিস্ট্রি করবেন। রেজিস্ট্রারের আদেশই ৭৬ ধারা অনুযায়ী চুড়ান্ত বলে গন্য হবে এবং এ আদেশের বিরুদ্ধে কোনরুপ আপীল চলবে না।
তবে ৭৭ ধারার বিধান মতে দেওয়ানী আদালতে মামলা রুজু করা যাবে।
রেজিস্ট্রেশন আইনের ৭৭ ধারায় বলা হয়েছে যে, যেক্ষেত্রে ৭৫ বা ৭৬ ধারা অনুযায়ী দলিল রেজিস্ট্রি করার আদেশ দিতে অস্বীকার করেন সেক্ষেত্রে ঐ দলিল মোতাবেক দাবিদার বা তার প্রতিনিধি উক্ত অস্বীকৃতির ৩০ দিনের মধ্যে যে দেওয়ানী আদালতের অফিস বা মৌখিক এখতিয়ারাধীনে উক্ত রেজিস্ট্রি অফিসে অবস্থিত সেই আদালতের ঐ দলিলটি রেজিস্ট্রি করতে হবে এই মর্মে ডিক্রি প্রাপ্তির জন্য মামলা দায়ের করতে পারেন। উক্ত দলিলই এরুপ মামলায সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহনযোগ্য হবে।
 সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ২৭ ধারা অনুযায়ী দলিল সম্পাদনের তারিখ হতে ৩ বছরের রেজিস্ট্রি কবলা পাওয়ার জন্য চুক্তি প্রবলের মামলাও করতে পারে।
কারা হস্তান্তর দলিল উপস্থাপন করার যোগ্য:[ধারা -৩২/৩৩]
১৯০৮ সালের রেজিষ্ট্রেশন আইনের ৩২ ধারায়  বিধান রয়েছে যে, ৮৯ ধারায় উল্লেখিত ক্ষেত্র ছাড়া এই আইনের রেজিষ্ট্রেশনযোগ্য প্রত্যেক দলিল এর রেজিষ্ট্রেশন বাধ্যতামূলক হোক বা না হোক নি¤œলিখিত ব্যক্তি দ্বারা সঠিক রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল দাখিল করতে হবে:
ক) দলিল সম্পাদনকারী বা দলিলের দাবিদার এমন কোন ব্যক্তি অথবা কোন ডিক্রি বা হুকুমনামার নকলের ক্ষেত্রে উক্ত ডিক্রি বা আদেশনামার দাবিদার।
অথবা
খ) উপরিউক্ত ব্যক্তিগণের প্রতিনিধি বা তাদের মনোনীত ব্যক্তি;অথবা
গ) অত:পর বর্ণিত পদ্ধতিতে সম্পাদিত এবং যথার্থভাবে প্রমাণিত আম-মোক্তারনামা দ্বারা ঐসকল ব্যক্তি কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রদত্ত প্রতিনিধি বা  তাদের মনোনীত ব্যক্তি রেজিষ্ট্রি অফিসে রেজিষ্ট্রির জন্য দাখিল করতে পারবেন।
বাধ্যতামূকভাবে নিবন্ধন যোগ্য দলিল নিবন্ধন করা না হলে আইনগত ফলাফল:
বাধ্যতামূলক রেজিষ্ট্রিযোগ্য দলিল রেজিষ্ট্রি না করা হলে ৪৯ ধারা অনুযায়ী নি¤েœাক্ত পরিনতি হবে:
    দলিলে বর্ণিত সম্পত্তিতে এর কোন প্রভাব হবে না।
    পোষ্য গ্রহন করতে কোন ক্ষমতা প্রদান করবে না।
    উক্ত সম্পত্তির কোন লেনদেন বা ক্ষমতা প্রদান সম্পর্কে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রাহ্য হবে না।







প্রশ্ন-১০ নিবন্ধন আইনে দলিল নিবন্ধনের গুরুত্ব আলোচনা কর। সম্পাদনের তারিখ হতে কত সময়ের মধ্যে একটি দলিল নিবন্ধনের জন্য উপস্থাপন করতে হয? এই নিয়মটির ব্যতিক্রম কি? আমমোক্তার নামা কি? ইহা সম্পাদন ও রেজিস্ট্রেশনের বিধান কি?
রেজিষ্ট্রেশনের বিষয়বস্তু হচ্ছে দলিল। এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তির অনুকূলে তার সম্পত্তি হস্তান্তর করতে চাইলে এই হস্তান্তরের শর্তাবলী একটি দলিলে লিপিবদ্ধ করতে হয়। এই শর্তবলী যেন কেউ ইচ্ছামত পরে পরিবর্তন করতে না পারে সেজন্য দলিলটি রেজিষ্ট্রেশন আইনের মাধ্যমে সাব-রেজিষ্টার অফিসে রেজিষ্ট্রি করার বিধান করা হয়েছে। রেজিষ্ট্রিকরণের মাধ্যমে হস্তান্তর গ্রহীতার উপর সম্পত্তির স্বত্ব বর্তায়। ফলে সম্পত্তির মালিককে তা সহজে জানা যায় না। এছাড়া রেজিষ্ট্রেশনের আর একটি উদ্দেশ্য হলো প্রচারনা। প্রচারনার মাধ্যমে সকলকে জানানো হয় হস্তান্তরিত সম্পত্তিটি কার নিকট হস্তান্তর করা হলো। এছাড়া ভূমি বা অন্যান্য স্থাবর সম্পত্তির মালিকান নিয়ে যেনো অযথা বিরোধের সৃষ্টি না হয় সেজন্য রেজিষ্ট্রেশন আইনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। কেননা রেজিষ্ট্রিকৃত দলিলই হচ্ছে সম্পত্তির বলিষ্ঠ সাক্ষ্য।
এছাড়াও ১৯০৮ সালের রেজিষ্ট্রেশন আইন নি¤েœাক্ত উদ্দেশ্যগুলি সাধন করে-
(১) দলিলের বিশুদ্ধতার নিশ্চয়তা নিশ্চয়তা প্রদান করে;
(২) সম্পত্তি হস্তান্তর সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে প্রচার করা।
(৩) জাল-জালিযাতি করে সম্পত্তি হস্তান্তর বন্ধ করা।
(৪) একটি সম্পত্তির ইতিপূর্বে কোন বিধি-ব্যবস্থা হয়েছে কিনা উহা নির্ণয়ের সুযোগ প্রদান করা; এবং
(৫) স্বত্ব-দলিলের নিরাপত্তা বিধান করা এবং মূল দলিল হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে সে ক্ষেত্রে স্বত্ব প্রমাণের সুযোগ বিধান করা।
রেজিষ্ট্রেশন আইন সৃষ্টির এই উদ্দেশ্যসমূহ যদি যথাযথভাবে উপলব্ধি করা সম্ভব হয়, তবে আইন প্রণয়নের দুই শতাব্দী কাল পরেও রেজিষ্ট্রেশন আইন আজ যে বিকশিত অবস্থায় আছে, সেই অবস্থায় উহা সঠিকভাবে অনুসরণ করলে, আইন সম্পর্কে আগ্রহী ব্যক্তিদের নিকট এই আইনের বিভিন্ন ধারার তাৎপর্য স্পষ্টভাবেই প্রতিভাত হবে।
১) হস্তান্তরিত সম্পত্তি রেজিষ্ট্রেশন করে নেওয়া
২) কোন কোন দলিল রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে আর সেই সমস্ত দলিল রেজিষ্ট্রেশন না করলে কি পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে তাই হচ্ছে রেজিষ্ট্রেশন আইনের মূল উদ্দেশ্যে।
৩) কোন দলিলকে দাখিল করলে, কোথায দাখিল করতে হবে তাও রেজিষ্ট্রেশন আইনের উদ্দেশ্য।
৪) জমি রেজিষ্ট্রি করা দায়িত্ব ক্রেতা না বিক্রেতার তাও রেজিষ্ট্রেশন আইনে আলোচনা করা হয়।
৫) সময়মত রেজিষ্ট্রি করে নেওয়াও রেজিষ্ট্রেশন আইনের উদ্দেশ্য।
সম্পাদনের তারিখ হতে কত সময়ের মধ্যে একটি দলিল নিবন্ধনের জন্য উপস্থাপন করতে হয়:
প্রতিটি মানুষের মধ্যেই এক খন্ডনিষ্কন্টক জমির মালিক হওয়ার স্বপ্ন সব সময়ই বিরাজমান। কিন্তু এই স্বপ্ন পূরণ হবে তখনই যখন দলিলটি সম্পাদিত হবে। দলিল সম্পাদন বলতে বুঝায় দলিল দাতার স্বাক্ষর বা টিপসহি প্রদান। জমির বিক্রেতা বা দাতা যে তারিখে ও সময়ে দলিলে স্বাক্ষর করবেন সেই তারিখ ও সময় থেকেই দলিলটি সম্পাদিত হবে বলে গণ্য হবে।
১৯০৮ সালের রেজিস্ট্রেশন আইনের ২৩ হতে ২৭ ধারায় রেজিস্ট্রেশনের জন্য দলিল দাখির করার সময় সম্পর্কিত বিধান রয়েছে।
২৩ ধারায় বলা হয়েছে যে,২৪,২৫,২৬ ধারার বিধানসাপেক্ষে-
উইল ব্যতীত অন্যান্য সকল দলিল সম্পাদনের তারিখ হতে ৩ মাসের মধ্যে রেজিস্ট্রির জন্য রেজিস্ট্রি অফিসারের নিকট পেশ করতে হবে। ৩ মাস সময় অতিবাহিত হয়ে গেলে উক্ত সম্পাদিত দলিল রেজিস্ট্রির জন্য গ্রহণযোগ্য হবে না। তবে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যদি কোনো আদালতের কোনো রায় (ঔঁফমবসবহঃ) ডিক্রি (উবপৎবব)/আদেশ (ঙৎফবৎ) থাকলে এবং উক্ত রায় বা ডিক্রির বিরুদ্ধে কোনো আপিল হলে তা নিষ্পত্তির ৩ মাসের মধ্যে দলিলটি রেজিস্ট্রেশনের জন্য দাখিল করতে হবে।
২৪ ধারার বিধান মতে,যেক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যক্তি বিভিন্ন সময়ে কোন দলিল সম্পাদন করে সেক্ষেত্রে উক্ত দলিল রেজিস্ট্রিকরণ এবং পু:রেজিস্ট্রিকরণের জন্য প্রত্যেকটি সম্পাদনের তারিখ হতে ৪ মাসের মধ্যে দাখিল করতে হবে।
২৬ ধারায় বলা হয়েছে যে, দলিল সম্পাদনকারী সকলে বা তাদের কোন একজন দেেেশর বাইরে যদি দলিল সম্পাদন করে এবং উক্ত দলিল যদি রেজিস্ট্রিকরণের জন্য নির্ধারিত সময় উত্তীর্ণ হওয়ার আঘে দাখিল করা না হয় এবং রেজিস্ট্রিকরণ অফিসার যদি সন্তুষ্ট হন যে,
ক) দলিলটি প্রকৃত পক্ষে উক্তরুপেই সম্পাদিত হয়েছে ,এবং
খ) দেশে পৌঁছার ৪ মাসের মধ্যে এই দলিল রেজিস্ট্রিকরণের জন্য দাখিল করা হয়েছে, তাহলে উপযুক্ত ফিস দেয়ার পর তিরি রেজিস্ট্রি করার জন্য উক্ত দলিল গ্রহণ করতে পারবেন।
উইল রেজিস্ট্রি করার জন্য কোন সমযসীমা নির্ধারণ করা হয়নি,যে কোন সময়ে তা দাখিল করা যাবে।

আমমোক্তার (চড়বিৎ ড়ভ অঃঃড়ৎহবু):
প্রকৃত মালিকদ্বারা ক্ষমতাপাপ্ত হয়ে কোন বিশেষ কাজ বা সাধারণ কাজ করার জন্য যথাযথ দলিলের মাধ্যমে যদি কাউকে ক্ষমতাঅর্পণ করা হয় তাহলে এরুপ ক্ষমতা প্রদানকে আমমোক্তরনামা বলা হয়।
আমমোক্তার বা চড়বিৎ ড়ভ অঃঃড়ৎহবু বলতে আমরা সহজভাবে বুঝি কাউকে কোন কাজ করার ক্ষমতা অর্পন করা। অর্থাৎ আমার অবর্তমানে কেউ আমার পক্ষে কাজটি সম্পাদন করতে পারবে যদি তাকে আমি সেই ক্ষমতাটি আমমোক্তার এর মাধ্যমে নিযুক্ত করি বা আমমোক্তার এর মাধ্যমে করার অনুমতি দিই। সাধারনত আমার অবর্তমানে কোন ছোটখাট কাজ করার ক্ষেত্রে আমমোক্তার বা (চড়বিৎ ড়ভ অঃঃড়ৎহবু) নোটারী করে সম্পাদন করতে পারে। তবে জায়গা জমি বেচাকেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই আমমোক্তার রেজিস্টার্ড হতে হয়।
পাওয়ার-অব-এটর্ণি বলতে এমন এক দলিল কে বোঝায় যার মাধ্যমে কোন ব্যক্তি তার পক্ষে উক্ত দলিলে বর্নিত কার্য-সম্পাদনের জন্য আইনানুগভাবে অন্য কোন ব্যক্তির নিকট ঢ়ড়বিৎ প্রদান করেন। সুতরাং,পাওয়ার-অব-এটর্নি'র অধীনে ঢ়ড়বিৎ প্রাপ্ত ব্যক্তি মূল মালিকের ন্যায় প্রায় এক-ই ঢ়ড়বিৎ বহলড়ু করে থাকে।
ইহা সম্পাদন ও রেজিস্ট্রেশনের বিধান কি:
যে সকল ব্যক্তি রেজিস্ট্রি করার জন্য দলিল দাখিল করতে পারবেন তার বিধান রেজিস্ট্রেশন আইনের ৩২ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে। এই ধারা অনুযায়ী যথাযথ পদ্ধতিতে সম্পাদিত ’আম-মোক্তারনামা’ দ্বারা ক্ষমতা প্রাপ্ত ব্যক্তিও এ উদ্দেশ্যে দলিল দাখিল করতে পারবেন।
কিরুপ পদ্ধতিতে আম-মোক্তরনামা করতে হবে তা এই আইনের ৩৩ ধারায় বর্ণনা করা হযেছে। এই ধারা অনুযায়ী,যদি কোন ব্যক্তি একটি জেলায় বা উপজেলায় বসবাস করেন তবে সেই জেলা বা উপজেলায় রেজিস্টার বা সাব-রেজিস্টারের সম্মূখে আম-মোক্তরনামা সম্পাদন করতে হবে এবং উক্ত রেজিস্ট্রার বা সাব-রেজিস্ট্রার কর্তৃক এর বিশুদ্ধতা প্রমানিত হতে হবে।
আবার আম-মোক্তারনামা দাতা দেশের বাইরে অবস্থান করলে তাহলে উক্ত আম-মোক্তার নামা কোন জজ বা ম্যাজিষ্ট্রেটের সম্মুখে সম্পাদিত এবং সত্যায়িত হতে হবে।
তবে এই আইন নি¤œবর্ণিত ব্যক্তিদেরকে ব্যক্তিগত উপস্থিতি হতে রেহাই প্রদান করেছে:
    যেব্যক্তি ভীষণভাবে অসুস্থ এবং শারীরিকভাবে অক্ষম;
    যে ব্যক্তি ফৌজদারী বা দেওয়ানী আইনের বিধান মোতাবেক কারাগারে রয়েছেন;
    যে ব্যক্তি ব্যক্তিগতভাবে আদালত বা অন্য অফিস হতে উপস্থিত হওয়া হতে যথাযথ ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক রেহাই পেয়েছে।
তাকে নোটারী পাবলিক বা ম্যাজিষ্ট্রেটের সম্মুখে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হবার প্রয়োজন হবে না।
প্রয়োজন মনে করলে সাব রেজিস্ট্রার,রেজিস্ট্রার বা ম্যাজিস্ট্রেট স্বেচ্ছায় আম-মোক্তরনামা সম্পাদিত হয়েছে কিনা তা অনুসন্ধান করতে পারবেন,অথবা উক্ত ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়ার জন্য কমিশন প্রেরণ করতে পারেবেন।





প্রশ্ন-১১ নিবন্ধনের উপর প্রতারণার ফলাফল কি? একাধিক জেলা ও উপজেলায় অবস্থিত সম্পত্তির দলিল রেজিস্ট্রির যথাযথ স্থান উল্লেখ কর। কোন কোন দলির নিবন্ধন বাধ্যতামূল ও ঐচ্ছিক? দলিল নিবন্ধনের আইনগত আনুষ্ঠানিকতা বর্ণনা কর।
কোন দলিল রেজিষ্ট্রিশন করার সময় কোন পক্ষ সত্য ঘটনা গোপন করে অর্থাৎ মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে কোন দলিল রেজিষ্ট্রি করলে তাকে রেজিষ্ট্রেশন সম্পর্কে শঠতা বলা যায়।
ইহা আইনের একটি সুপরিচিত ও অনুমোদিত নীতি যে প্রতারনার আশ্রয় গ্রহন করে কেউ স্থাবর সম্পত্তিতে স্বত্বের অধিকারী হতে পারে না। প্রতারনার আশ্রয় গ্রহন করবার উদ্দেশ্যে কোন অধিকারের প্রাধান্য দেওয়া আইন পরিষদের নহে বরং সংশ্লিষ্ট পক্ষদ্বয় সৎমনোভাবের সাথে কার্য করলে সেক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তিকেই প্রাধান্য দেওয়া উচিত হবে যিনি রেজিষ্ট্রিকৃত দলিল মূলে দাবী করেছেন এবং উহা ন্যায়পরতা ও আইন উভয় দিক হতে সঙ্গত।
শীনাথ বনাম রামকুমার মামলায প্রিভিকাউন্সিলের মাননীয় বিচারপতিগন বলেন যে, ”যতক্ষন পর্যন্ত দলিল গ্রহীতার পক্ষে কোন প্রবঞ্চনা কিংবা প্রতারণার আশ্রয় গ্রহন করা হয়েছিল এমন কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এনে তা প্রমান না করা যায়,ততক্ষণ পর্যন্ত রেজিষ্ট্রিকৃত যে দলিলটিকে প্রাধান্য বা অধিকার দান করা হয়েছে, তা হতে উহাকে বঞ্চিত করা চলে না এবং বর্তমান ক্ষেত্রে,কোন প্রবঞ্চনা বা প্রতারণার অভিযোগ আনয়ন করা হয়নি এবং নিশ্চয়ই অমুক দলিল গ্রহীতার বিরুদ্ধে কোন প্রতারণা প্রমানিতও হয়নি। কোন ক্রেতা একটি সম্ভাব্য দাবী ক্রয় করে- কেবল অত্র যুক্তিতে ঐ ক্রেতা প্রতারণার আশ্রয় গ্রহন করেছেন- এমন দাবী করা যুক্তি সঙ্গত হবে না এবং মানণীয় বিচারপতিগণ যতদুর লক্ষ্য করেছেন তাতে দেখা যায যে, উহার বাহিবে অভিয়োগ কিংবা প্রমান কোন দিক হতেই কথিত দলিল গ্রহীতার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আণয়ন করা চলে না।
রেজিস্ট্রেশন আইন অনুযায়ী কোন দলিল রেজিষ্ট্রি করার স্থান সম্পর্কে বিধি বিধান আলোচনা:[ ধারা ২৮,২৯,৩১]
রেজিষ্ট্রেশণ আইনের ২৮ ধারা মতে,
কোন সম্পত্তি রেজিষ্ট্রেশন করতে হলে উক্ত সম্পত্তি যে সাবরেজিষ্ট্রি অফিসের ভৌগোলিক সীমারেখার মধ্যে অবস্থিত সেই সাবরেজিষ্ট্রি অফিসেই তার দলিল রেজিস্ট্রেশনের জন্যে দাখিল করতে হবে। উল্লেখ্য ,যে রেজিষ্ট্রেশন আইন অনেক মূল্যের সম্পত্তি এবং কম মূল্যের সম্পত্তির মধ্যে কোন পার্থক্য করে না। কোন সম্পত্তি কোন সাবরেজিষ্ট্রি অফিসের এখতিয়ারাধীন থাকলেই উক্ত সম্পত্তি রেজিষ্ট্রি করার ক্ষমতা সেই সাবরেজিষ্ট্রি অফিস লাভ করে থাকেন। আর যখন কোন দলিল সকল পক্ষের প্রকৃত ভুলের জন্যে ভূল স্থানে রেজিস্ট্রিকৃত হয়ে থাকে এবং এক্ষেত্রে কোন প্রতারণার কোন প্রভাব থাকে না তখন চারমাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও সঠিক রেজিষ্ট্রি অফিসে উক্ত দলিল দাখিল করে পুন: রেজিষ্ট্রি করা যায়।
    
২৯ ধারাতে বলা আছে ২৮ ধারায় বর্ণিত দলিল,ডিক্রি বা আদেশের নকল ব্যতীত অন্যান্য দলিল যেখানে সম্পাদন হয় তথায় বা সম্পাদনকারীদের সকলে যেখানে ইচ্ছা করিলে  বাংলাদেশের অভ্যান্তরেই সাবরেজিষ্ট্রি অফিসে তা রেজিষ্ট্রির জন্য দাখিল হইতে পারিবে। স্থাবর সম্পত্তি সম্পর্কিত ডিক্রি বা আদেশের নকল যেখানে প্রথম ডিক্রি বা আদেশ হয়েছিল সেখানে রেজিষ্ট্রি হবে। স্থাবর সম্পত্তি সম্পর্কিত না হলে ডিক্রি বা বা আদেশের নকল সকল দাবিদার পক্ষের ইচ্ছানুযায়ী বাংলাদেশের যে কোন সাবরেজিষ্ট্রি অফিসে রেজিষ্ট্রি করা চলবে।
রেজিষ্ট্রেশন আইনের ৩১ ধারা মতে, দলিল রেজিষ্ট্রির জন্য সাধারণত আইনে নির্ধারিত রেজিষ্ট্রেশন অফিসে দাখিল করতে হবে তবে কোন বিশেষ কারণে রেজিষ্ট্রিকারী অফিসার দলিল দাখিলকারীর বাসস্থানে গিয়েও দলিল রেজিষ্ট্রির জন্য গ্রহণ করতে পারেন।
আইন অনুযায়ী কোন কোন দলিল নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক:
১৯০৮ সালের রেজিষ্ট্রেশন আইনের ১৭ ধারায় ও ১৭(এ) ধারায়  বলা হয়েছে যে,কোন কোন দলিল আবশ্যিকভাবে নিবন্ধন করতে হবে। যেসকল দলিল বাধ্যতামূলকভাবে নিবন্ধন করতে হবে তা হলো-
১) স্থাবর সম্পত্তির দান পত্র বা হেবানামা দলিল।
২) মুসলমানদের ব্যক্তিগত আইন অনুযায়ী প্রদত্ত হেবা সম্পর্কিত ঘোষনা।
৩) উইল ব্যতীত অন্যান্য সম্পত্তি সংক্রান্ত দলিল যেগেুলোর মাধ্যমে কোন স্থায়ী সম্পত্তিতে বর্তমান বা ভবিষ্যত কোন অধিকার বা স্বত্ব বা সুযোগ সুবিধা জন্মায়,ঘোষনা করে অপন করে। সীমাবদ্ধ করে বা বিলোপ করে এই সকল দলিল অবশ্যই নিবন্ধন করাতে হবে।
৪) উইল ব্যতীত অন্যান্য দলিল পত্র যা কোন বিনিময় মূল্য স্বরুপ কোন কিছু পাওয়া যায় বা প্রদান করা যায়।
৫) এক বছর অথবা অধিক সময়ের জন্য ইজারা দলিল।
৬) আদালতের আদেশ বা ডিক্রি অথবা রোয়েদাদ যা কোন স্থাবর সম্পত্তিতে কোন অধিকার স্বত্ব অথবা স্বার্থ বর্তমানে বা ভবিষ্যতে সুজন কওে এমন দলিল।
৭) সম্পত্তি হস্তান্তর আইন ১৮৮২ এর ধারা ৫৯ অনুযায়ী বন্ধকী দলিল।
৮) স্ব-স্ব ব্যক্তিগত ধর্মীয় আইন অনুযায়ী প্রাপ্য ওয়ারিশী স্থাবর সম্পত্তি বন্টন বিষয়ক দলিল।
৯) ৯৬ ধারার অধীনে অগ্রক্রয় মামলায় আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে বিক্রয় দলিল।
১০) সরকার কর্তৃক কোন স্থাবর সম্পত্তি অনুদান;
১১) কোন রাজস্ব অফিসার কর্তৃক কোন বাটোয়ারা দলিল;
১২) বায়না দলিল
দান দলিল,হেবা,অগ্রক্রয়,পার্টিশন,বন্ধকী,বন্টন,ইজারা ,তাৎক্ষণিক অধিকার সৃষ্টি করতে পারে এমন দলিল,বায়না পত্র দলিল
কোন দলিল সমূহ রেজিষ্ট্রি করা ঐচ্ছিক:
১৯০৮ সালের রেজিষ্ট্রেশন আইন অনুযায়ী সকল দলিল রেজিষ্ট্রিযোগ্য নয়। অত্র আইনের ১৭ ধারায় যে সমস্ত দলিলের বিবরণ প্রদত্ত হয়েছে শুধুমাত্র সে সকল দলিল রেজিষ্ট্রেশন বাধ্যতামূলক অন্যান্য দলিলসমূহের রেজিষ্ট্রেশন ঐচ্ছিক।
১) উইল ছাড়া ১০০ টাকা বা আরো কম মূল্যের কোন বর্তমান বা ভবিষ্যত বা সম্ভাব্য কোন অধিকার বা সুযোগ সম্পর্কিত যে কোন দলিল।
২) কোন প্রকার সোলেনামা।
৩) বায়নানামা দলিল
৪) জয়েন্ট স্টক কোম্পানির শেয়ার বিষয়ক দলিল।
৫) জয়েন্ট স্টক কোম্পানির ইস্যুকৃত ঋণপত্র/উবনবহঃঁৎব
৬) কোন আদালতের ডিক্রি (উবপৎবব), রায় ( ঔঁফমবসবহঃ) বা আদেশ (ঙৎফবৎ)
৭) সরকার কর্তৃক মঞ্জুরীকৃত কোন স্থাবর সম্পত্তির দলিল।
৮) রাজস্ব কমকর্তা কর্তৃক প্রদত্ত কোন বাটোয়ারা দলিল।
৯) এক বছরের কম সময়ের জন্য কোন ইজারা দলিল।
১০) কোন সম্পত্তি নিলামে বিক্রয় হওয়ার পর আদালত বা রাজস্ব অফিসার কর্তৃক ংধষব পবৎঃরভরপধঃব.
১১) কোন ১৮৮৫ সালের কৃষি ঋণ আইনের ,১৯৭৩ সালের কৃষিব্যাংক আদেশ বা কৃষিজকার্যের জন্য
১২) সমবায সমিতি কর্তৃক প্রদত্ত কোন ঋণ পরিশোধের জন্য জামানত প্রদানকারী কোন দলিল।
সর্বোপরি ১৮৭১ সালের খধহফ ওসঢ়ৎড়াবসবহঃ অপঃ বা ১৯৮৩ সালের ওসঢ়ৎড়াবসবহঃ খড়ধহং অপঃ অনুযায়ী ঋণ প্রদানের বা ঋন পরিশোধর জন্য জামানত ঘোষনাকারী কোন আদেশপত্র।
জেলা বা জেলার অংশে সম্পাদিত ৫ বছরের কম মেয়াদি ইজারা বা এর বার্ষিক খাজনা ৫০ টাকা বেশী না হলে,যদি সরকার এ মর্মে গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাকে বাধ্যতামূলক নিবন্ধনের আওতা বহির্ভূত রাখে।

রেজিষ্ট্রি দলিলের আবশ্যকীয় শর্তাবলী:
একটি রেজিষ্ট্রি দলিলে নিম্নবর্ণিত শর্তাবলী পালন করতে হয় অন্যথায় দলিলটি স্বয়ং সম্পূর্ণ হবে না:
১। শিরোনামঃ দলিলটি কোন ধরণের দলিল তা প্রথম বর্ণনায় উল্লেখ করতে হবে। যেমন: সাফকবলা, বায়নাপত্র আম- মোক্তারনামা ইত্যাদি।
২। পক্ষগণের পরিচয়ঃ দান গ্রহীতা, প্রথম পক্ষ, দ্বিতীয় পক্ষ ইত্যাদি। নাম বা প্রতিষ্ঠানের নাম, পিতার নাম, পেশা, ধর্ম, জাতীয়তা বাসস্থান ইত্যাদি। অর্থাৎ কোন কোন পক্ষের মধ্যে দলিলটি সম্পাদন ও রেজিষ্ট্রি হচ্ছে তার বর্ণনা।
৩। বিক্রীত স্বত্বের বর্ণনাঃ স্বত্বের ইতিহাস, পূর্বের দলিল নম্বর ইত্যাদি। অর্থাৎ বিক্রেতা সম্পত্তিটি কোন সূত্রে অর্জন করেছেন তার বিবরণ। তা নামে খতিয়ান ও জমা খারিজ আছে কিনা।
৪। পণঃ পণ ব্যতিরেকে কোন চুক্তি বৈধ হয় না। মনে রাখা আবশ্যক পনের লেনদেন স্বাভাবিক রীতি অনুযায়ী হতে হবে। অবাস্তব, অবিশ্বাস্য বা সন্দেহজনক পনের বিনিময়ে কোন সম্পত্তি হস্তান্তরিত হলে পরিনামে দলিলটি বাতিল হতে পারে।
৫। দখলঃ বিক্রিত সম্পত্তির দখল বুঝে দেওয়া হলো কিনা তা দলিলে উল্লেখ করতে হবে। দখল না বুঝে দিলে দলিলের প্রধান শর্ত অপূর্ণ রয়ে গেল।
৬। রক্ষিত শর্তাবলীঃ দাতা গ্রহীতার অর্জিত সম্পত্তির অধিকারসমূহের কিয়দংশ সংরক্ষিত রেখে দলিল সম্পাদন করতে পারেন।
৭। দন্ড বিষয়ক অংশঃ জমি জমার ক্রয় বিক্রয়ের ব্যাপারে প্রতারণার নজির ভুরি ভুরি রয়েছে। তাই প্রতারণামূলক কার্যের বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ হিসাবে দন্ড বিষয়ক ব্যবস্থাদির দলিলে লিপিবদ্ধ রাখতে হয়।
৮। তারিখঃ দলিলে অবশ্যই তারিখ থাকতে হবে। দলিলে তারিখ না থাকলে উহা বাতিল বলে গণ্য হয়। বাংলা তারিখের সহিত ইংরেজি তারিখও দেওয়া উচিত।
৯। তফসিল বর্ণনাঃ বিক্রয়াধীন সম্পত্তির তফসিল বর্ণনা দলিলের নির্দিষ্ট অংশে উল্লেখ রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইহাতে ভুল থাকলে সমস্ত দলিলের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হইতে বাধ্য। তফসিলে জমির পরিমাণ, মৌজা, থানা, রেজিষ্ট্রী অফিস, জেলা, খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর, জমির শ্রেণী, তৌজি, জমির চৌহদ্দি অর্থাৎ উত্তরে, দক্ষিণে, পূর্বে ও পশ্চিমে অবস্থানকারী ব্যক্তি ও সম্পত্তির নাম, খাজনা ও করের পরিমাণ সম্পত্তির কোন হোল্ডিং নম্বর ও ওয়ার্ড নম্বর থাকলে তাহাও দলিলে উল্লেখ করতে হয়।
১০। দস্তখতঃ দলিল দাতা দলিলের উপরিভাগ দক্ষিণ পার্শ্বে ও শেষ পৃষ্ঠায় নীচে স্বাক্ষর করবেন। কোন কোন দলিলে একাধিক পক্ষের দস্তখত দিতে হয়। দলিলে পক্ষগণের স্বাক্ষর বা টিপ পর্ব শেষ হবার পর দলিল লেখকের নাম, সাকিন ও দুই তিন জন সাক্ষীর নাম ও সাকিন লিখতে হবে।
১১। কৈফিয়তঃ দলিল লিখবার সময় কোন স্থানে ভুল, কাটা, মোছা বা অস্পষ্ট হলে উহার পৃষ্ঠা ও লাইন ক্রম উল্লেখ করে দলিলের শেষাংশে কৈফিয়ত হিসাবে তাহা লিখে দলিল লিখক তাহার নীচে সহি করবেন।
১২। বিবিধঃ দলিল পরিস্কার ও পরিচ্ছন্নভাবে লিখিত হওয়া আবশ্যক। দলিল লিখতে ভাল কালি ব্যবহার করা দরকার। তবে বর্তমানে কম্পিউটার প্রযুক্তি ব্যবহৃত হওয়ায় লিখিত দলিল খুব কমই রেজিষ্ট্রেশনের জন্য উপস্থাপিত হচ্ছে।
১৩। বিক্রেতার নামে খতিয়ান থাকতে হবে। বিক্রিত সম্পত্তির নক্শা ম্যাপ ইত্যাদি থাকলে তাহা অনুচ্ছেদ স্বরূপ মূল দলিলের সহিত যুক্ত করে দিতে হবে।

কখন দলিল পুন:রেজিষ্ট্রেশনের প্রশ্ন দেখা দেয়? নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে দলিল রেজিষ্ট্রির জন্য উপস্থাপন করতে পারে নাই এমন ব্যক্তির কি প্রতিকার আছে?
উত্তর:
পুন:রেজিষ্ট্রেশনের প্রশ্ন কখন উঠে:
রেজিষ্ট্রেশন আইনে ২৩(ক) ধারায় দলিলের পুন:রেজিষ্ট্রিকরণ সম্পর্কে নি¤েœাক্ত বিধান রয়েছে:
যদি কোন ক্ষেত্রে দলিল দাখিল করার ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ রেজিষ্ট্রিকরণযোগ্য দলিল রেজিষ্ট্রার বা সাব রেজিষ্ট্রারের নিকট দাখিল করে এবং তা রেজিষ্ট্রি হয়ে থাকে; তবে দলিলের প্রকৃত দাবিদার কোন ব্যক্তিএরুপ রেজিষ্ট্রেশনের জন্য দলিল দাখিল সম্পর্কিত বিধান অনুযায়ী জেলায় যে রেজিষ্ট্রারের দফতরে দলিলটি প্রথম রেজিষ্ট্রিকৃত হয়েছিল ঐ রেজিষ্ট্রারের দফতরে দলিলটি পুনরায় রেজিষ্ট্রিকরণের জন্য দাখির করতে হবে এবং রেজিষ্ট্রর যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, দলিলটি দাকির করার প্রকৃত ক্ষতা প্রাপ্ত ব্যক্তি ব্যততি অন্র ব্যক্তির নিকট হলেত দলিলটি রেজিষ্ট্রিকরণের জন্য গৃহতি হয়েছেল তবে সে দলিরটি পুন;রেজিষ্ট্রিকরণের ব্যাপাওে এরুপ অগ্রসর হবেন যেন উহা পূর্বে রেজিষ্ট্রিকৃত হয়নি।
নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে দলিল রেজিষ্ট্রির জন্য উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হলে তার প্রতিকার:
সম্পাদিত কোন দলিল বা প্রদত্ত কোন ডিক্রি বা হুকুমনামার নকল যদি কোন অপরিহার্য কারণে উপরোক্ত সমযের মধ্যে দাখিল করা না হয় এবং দাখিল করতে যদি ৩ মাসের অধিক কাল বিলম্ব না হয় তবে রেজিষ্ট্রিকরণ ফিসের অনর্ধ্ব ১০গুন টাকা জরিমানা স্বরুপ প্রদত্ত হলে ২৫ ধারার বিধান মতে রেজিষ্ট্রার উক্ত দলির রেজিষ্ট্রিকরণের জন্য গ্রহন করতে নির্দেশ দিতে পারেন।

No comments:

Post a Comment