Thursday 18 February 2016

দন্ড বিধি,1860

প্রশ্ন-১ অপরাধের সংজ্ঞা দাও। অপরাধ করার প্রচেষ্টা ও অপরাধ প্রস্তুতির মধ্যে পার্থক্য উদাহরণসহ ব্যাখ্য কর। দন্ডবিধিতে কোন কোন ক্ষেত্রে অপরাধের প্রস্তুতি অপরাধ হিসেবে গন্য হয়?
অপরাধের সংজ্ঞা:
অপরাধকে সভ্যতার অবদান বলা হয়। যতদিন সভ্যতা ছিল না ততদিন অপরাধও ছিল না। যে যাকে খুশি মারত যাকে খুশি টেনে হেসরে নিয়ে যেতে পারত তারপর একদিন সভ্যতা এল। মানুষ দেখল এরকম হতে দেয়া যায় না। তারা অনেক কাজকে অপরাধ বলে চিহ্নিত করল। তারা বলে দিল অপরাধ করলে সাজা হবে। সেই থেকে অপরাধের শুরু।
সভ্যতা এসে অপরাধ বা ক্রাইমকে চিহ্নিত করে। এর আগে কেউ অপরাধকে অপরাধ হিসাবে জানত না,বুঝত না অর্থাৎ অপরাধ কি এটিই মানুষ জানত না। অপরাধ শব্দটি দন্ডবিধি এবং ফৌজদারী কার্যবিধির একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
“অহু ধপঃ ড়ৎ ড়সরংংরড়হ ঢ়ঁহরংযধনষব নু ষধ”ি
অপরাধ বলতে সামাজিক ,ধর্মীয় এবং নৈতিকতা বিরোধী অন্যায় কাজকে বুঝায়।
বিভিন্ন দেশের সমাজ ব্যবস্থা, ধর্মীয় আচার এবং নৈতিকতা বোধ একরকম নয় তাই অপরাধের ধারণাও সমাজভেদে ভিন্ন রকম আবার যুগের সাথে সাথে মানুষের ধ্যান ধারণার পরিবর্তনের সাথে সাথে ন্যায় অন্যায় বোধের পরিবর্তন হয়।
সাধারন ভাবে অপরাধ বলতে আইন লংঘন কে বোঝায়। অপরাধ শব্দটির সঠিক ও যথাযথ সংজ্ঞা নিরুপনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ১৮৬০ সালের দন্ডবিধিই যথেষ্ট নয়। বরং ১৮৯৮ সালের ফৌজদারী কার্যবিধি ও ১৮৭১ সালের গবাদি পশুর অনধিকার প্রবেশ আইন ও অন্যান্য প্রচলিত আইনের আলোকে অপরাধের স্বরুপ সংজ্ঞা নিরুপন করা হয়। দন্ড বিধিতে অপরাধের কোন সংজ্ঞা দেয়া হয়নি। তবে সমস্ত অন্যায় কাজকে আইনে অপরাধ হিসাবে গন্য করা হয় না। আইনের দৃষ্টিতে শাস্তিযোগ্য অন্যায় কাজকেই কেবল অপরাধ হিসাবে ধরা হয়।
তাই অন্যায় কাজ বা অফেন্স এবং অপরাধ একই অর্থ বহন করে না। যার যা অধিকার এবং দায়িত্ব তার বাইরে যাওয়ার নামই অপরাধ। যেখানে অধিকার এবং দায়িত্ব নেই সেখানে অপরাধও নেই।
সুতরাং সভ্যতার যে স্তরে মানুষের অধিকার ও দাযিত্ব স্বীকৃত সেই স্তরে কোন কাজকে অপরাধ বলে ঘোষনা করা যায়।
কাজ বলতে যেমন কোন কিছু করা বোঝায় আবার তেমনি কিছু না করাও বোঝায়, যা করা অনুচিত তা করা যেমন অপরাধ যা করা উচিত তা না করাও তেমনি অপরাধ।
এই করা বা না করা মানুষের অভিপ্রায় উপর নির্ভরশীল সেজন্য দন্ডবিধিতে অভি প্রায় কথা বারবার এসেছে।
সুতরাং আইনে যে কর্ম বা কর্মবিরোধী সমূহকে অপরাধ বলে চিহ্নিত করেছে কেবরমাত্র সেগুলিকেই অপরাধ বলা হয়।
অপরাধ হচ্ছে এটা একটি অন্যায় কাজ সমাজের দৃষ্টিতে ক্ষতিকর এবং আইনের দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ সেজন্য রাষ্ট্র ইচ্ছা করলে শাস্তিও দিতে পারেন। সুতরাং অপরাধ বলতে সে সকল কার্য বা কার্যবিরোধী যা বর্তমান বলবৎ কোন আইনে শাস্তিযোগ্য এবং যা সমাজের পক্ষে ক্ষতিকর ও আইনে নিষিদ্ধ এবং রাষ্ট্র ইচ্ছা করলে শাস্তি  প্রদান করতে পারে।
১৫ ডিএলআর ৪২৪ মামলায় বলা হয়েছে যে, সকল অপরাধই অন্যায়ের পর্যায়ভুক্ত তবে সমস্ত অন্যায় কাজ অপরাধ নয়।
অতএব অপরাধ বলতে সেই সমস্ত কাজকে বোঝায় যা করা হলে বা করা হতে বিরত থাকলে তা সমাজের প্রতি ক্ষতির কারণ হয় এবং এজন্য অপরাধীকে আদালত শাস্তি প্রদান করতে পারেন।
দন্ডবিধির ২,৩ এবং ৪০ ধারায় অপরাধ বলতে দন্ডনীয় কোন বিষয়কে বুঝানো হয়েছে।
১৮৯৮ সালের ফৌজদারী কার্যবিধির ৪(১) নং ধারায় বলা হয়েছে যে, অপরাধ বলতে সেই সকল কাজ করা বা করা হতে বিরত থাকাকে বুঝায় যা করলে বা করা হতে বিরত থাকলে বর্তমানে প্রচলিত কোন আইনের দ্বারা দন্ডনীয় হবে।
১৮৭১ সালের গবাদি পশুর অনধিকার প্রবেশ আইনের ২০ ধারাও এর অর্ন্তভূক্ত হবে।
অপরাধ করার প্রচেষ্টা ও অপরাধ প্রস্তুতির মধ্যে পার্থক্য:
দন্ডবিধিতে বর্ণিত অপরাধগুলি সংঘটনের জন্য অপরাধীকে শাস্তি প্রদানের বিধান রয়েছে। কতিপয় ক্ষেত্রে অপরাধটি সংঘটিত না হলেও শুধু সংঘটনের প্রচেষ্টা নিলেই এমনকি শুধু প্রস্তুতি নিলেও তা শাস্তিযোগ্র বিবেচিত হয়।
নি¤েœ অপরাধ করার প্রস্তুতি ও অপরাধের প্রচেষ্টার মধ্যে পার্থক্য উদাহরন সহ দেখানো হল-
ক্র:নং    পার্থক্যের কারণ    অপরাধের প্রস্তুতি    অপরাধ করার প্রচেষ্ট/উদ্যোগ
১    সংজ্ঞাগত পার্থক্য    অপরাধ সংঘটনের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরন সংগ্রহ এবং আনুষঙ্গিক ব্যবস্থাদি গ্রহণ করাকে অপরাধের প্রস্তুতি বলে।    প্রস্তুতি গ্রহণের পর অপরাধটি সংঘটনের জন্য কোন বাস্তব ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করাকে অপরাধ করার প্রচেষ্টা বলে।
২    পূর্বশর্ত    প্রস্তুতিকে প্রচেষ্টার পূর্বশর্তবলা হয়। যেমন- সিদ কেটে কারো ঘরে ঢুকতে হলে সিঁদ কাটার জন্য প্রয়োজনীয হাতিয়ার সংগ্রহ করা হচ্ছে অপরাধের প্রস্তুতি।    প্রস্তুতি যেখানে শেষ হয় তারপর হতে প্রচেষ্টার সুত্রপাত। যেমন- সিঁদ কাটার জন্য সেই হাতিয়ার প্রয়োগ করাই হলো অপরাধের প্রচেষ্টা।
৩    দূরবর্তী ও নিকট    অপরাধ সংঘটনের পর্যায় থেকে দূরবর্তী কার্যকলাপ হল প্রস্তুতি অর্থাৎ উদ্যোগের ঠিক আগের কর্মটি হল প্রস্তুতি।     পক্ষান্তরে অপরাধ সংঘটনের আসন্ন সন্নিকটবর্তী কার্যটি হল  প্রচেষ্টা/ উদ্যোগ। এটি অপরাধ সংঘটনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত।
৪    নির্দোষ    প্রস্তুতিকালে অপরাধীর মনোভাব বদলের সম্ভাবনা থাকে-ফলে,অপরাধটি নাও ঘটতে পারে। নির্দোষ মনেও প্রস্তুতি সম্ভব।    পক্ষান্তরে প্রচেষ্টা/উদ্যোগে অভিপ্রায় বা মনোভাব বদলের সুযোগ নাই। উদ্যোগ নির্দোষ হতে পারে না।
৫    শাস্তি    সাধারণত প্রস্তুতি শাস্তিযোগ্যনয়।    পক্ষান্তরে প্রচেষ্টা/উদ্যোগ শাস্তি যোগ্য।

দন্ডবিধিতে কোন কোন ক্ষেত্রে অপরাধের প্রস্তুতি অপরাধ হিসেবে গন্য হয়:
নি¤œলিখিত ক্ষেত্রে অপরাধের প্রস্তুতিই অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে, যেমন-
১) জালমুদ্রা:দন্ডবিধির ২৪২ধারা মোতাবেক জালমুদ্রা কারো দখলে থাকলে তা প্রতারণার প্রস্তুতি হিসেবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচিত হয়। একইভাবে ২৪৫ ধারার বিধান মোতাবেক জাল মুদ্রা তৈরীর যন্ত্রাদি কারো দখলে থাকলেও উহা শাস্তি যোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে। এছাড়া জাল স্ট্যম্প তৈরী করার যন্ত্র,ওজনে কম রাখা বাটখারা ইত্যাদি অপরাধের প্রস্তুতি হিসেবে দন্ডযোগ্য অপরাধ হিসেবে গন্য হয়।
২) অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র:দন্ডবিধির ১২০ বি ধারা বিধান মোতাবেক অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের লক্ষ্যে কতিপয় ব্যক্তির মতেক্যে উপনীত হওয়াই একটা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়।
৩) সংক্রামক ব্যাধির উৎস:কোন ব্যক্তি যদি তার নিজের ভুমিতে এমন কোন কার্যক্রম চালায় যার ফলে উক্ত স্থান হতে সংক্রামক ব্যাধি ছড়িয়ে মানুষের জীবন বিপন্ন হবার সম্ভাবনা থাকে , যদিও বাস্তবে এমন সংক্রমন না ছড়ায়, তবুও সেক্ষেত্রে দন্ডবিধির ২৭০ধারা অনুযায়ী উক্ত কর্মকান্ড শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
৪) ভেজাল খাদ্য,ঔষধ ইত্যাদি: ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে খাদ্যদ্রব্যে কোন ভেজাল মেশানো হলে উহা দন্ডবিধির ২৭২ ধারা মোতাবেক অপরাধ হিসেবে গন্য হবে। এই নিয়ম অনুযায়ী ওষধ,পানীয় ইত্যাদিতে ভেজাল মেশানোর প্রস্তুতিও অপরাধের প্রস্তুতি হিসেবে শাস্তি যোগ্য।
৫) ডাকাতির প্রস্তুতি:ডাকাতি করা উদ্দেশ্যে প্রস্তুতি গ্রহন করলে দন্ডবিধির ৩৯৯ ধারা মতে শাস্তি যোগ্য অপরাধ। বস্তুত, এ সকল অপরাধের প্রস্তুতি নেয়াই অপরাধ সয়ঘটনের প্রচেষ্টা বা সংঘটন হিসেবে গন্য হয় এর এর জন্য দন্ড বিধিতে শাস্তি বিধান রয়েছে।
৬) খুনকরার চেষ্টা: খুন করা যেমন অপরাদ তেমনি অপরাধী প্রকৃত খুন না করে খুন করার চেষ্টা করলেও তা অপরাধ।(ধারা-৩০৭)
৭) আতœহত্যার চেষ্টা:যদি কেউ আতœ হত্যার প্রচেষ্টা চালায় ও এরুপ অপরাধ সংঘটনের উদ্দেশ্যে কোন কাজ করে থাকে তবে সেক্ষেত্রে দন্ডবিধির ৩০৯ ধারা অনুযায়ী তাকে ১ বৎসর পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদন্ডঅথবা জরিমানা বা উভয় প্রকার শাস্তি প্রদানের বিদান আছে। তবে আতœহত্যা সংঘটিত হলে এ অপরাধ শাস্তিযোগ্য নয়। তাই বলা হয়ে থাকে যে, আতœহত্যা করা অপরাধ নয় বরং আতœ হত্যার প্রচেষ্টা চালানোও অপরাধ।























প্রশ্ন-২ অপরাধের যৌথ দায়িত্ব নীতিটি দন্ডবিধির ৩৪ ধারা অনুসারে উদাহরনসহ ব্যাখ্যা কর। করিম ও রহিম একত্রিত হয়ে কালামকে আঘাত করল পরে প্রকাশ হয় যে কালাম একজন সরকারী কর্মকর্তা এবং ঐ সময় তিনি সরকারী দায়িত্ব পালনে ছিলেন যা শুধু করিম জানত। এ ক্ষেত্রে করিম ও রহিমের দায় দায়িত্ব আলোচনা কর।
ভূমিকা:
দন্ডবিধির ৩৪ ধারা ঈড়সসড়হ রহঃবহঃরড়হ সম্পর্কীয় বিধানাবলী আলোচিত হয়েছে।এই মতবাদের মাধ্যমে যৌথ সমর্থক (ঔড়রহঃ ফবভবহফবৎ) এবং যৌথ দায়িত্ব ( ঔড়রহ ষরধনরষরঃু)  এর নীতি ব্যখ্যা করা হয়েছে। ইধৎধহফৎধ কঁসধৎ এযড়ংব াং ঞযব ঊসঢ়বৎড়ৎ নামক মামলাটির রাযের মধ্য দিয়ে সাধারণ উদ্দেশ্য সম্পর্কীয় মতবাদের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কোন সাধারণ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য একাধিক ব্যক্তি পরস্পরের সহযোগীতায় কোন অপরাধমূলক কাজ করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণ উক্ত অপরাধের জন্য সবাই মূল অপরাধী হিসাবে সমভাবে দায়ী হবে। দন্ডবিধির ৩৪,৩৫,৩৭, ১২০(ক)এবং ১৪৯ ধারায় যৌথ দায় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
অপরাধের যৌথ দায়িত্ব নীতিটি দন্ডবিধির ৩৪ ধারা অনুসারে উদাহরণ সহ ব্যাখ্যা:
১৮৬০ সালের দন্ডবিধির ৩৪ ধারায় ঈড়সসড়হ রহঃবহঃরড়হ) সম্পর্কীয় বিধানাবলী সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে যে,”ডযবহ ধ পৎরসরহধষ ধপঃ রং ফড়হব নু ংবাবৎধষ ঢ়বৎংড়হং রহ ভঁৎঃযবৎধহপব ড়ভ ঃযব পড়সসড়হ রহঃবহঃরড়হ ড়ভ ধষষ, বধপয ড়ভ ংঁপয ঢ়বৎংড়হং রং ষরধনষব ভড়ৎ ঃযধঃ ধপঃ রহ ঃযব ংধসব সধহহবৎ ধং রভ রঃ বিৎব ফড়হব নু যরস ধষড়হব.”
যখন কতিপয় ব্যক্তি একত্রিত হয়ে তাদের সকলের একই অভিপ্রায় সাধনকল্পে অপরাধমূলক কাজ সম্পাদিত করে, তখন অনুরুপ ব্যক্তিগনের প্রত্যেকেই উক্ত কাজের জন্য এইরুপে দায়ী হবেন যেন উক্ত কাজ উক্ত ব্যক্তি দ্বারা সম্পাদিত হয়েছিল।
অর্থাৎ যখন কিছু লোক একত্রিত হয়ে তাদের সকলের ইচ্ছানুযায়ী অপরাধমূলক কোন কাজ সম্পাদন করে, তখন প্রত্যেকেই উক্ত কাজের জন্য একইরুপে দায়ী হবেন, যেন ঐ অপরাধ কর্মটি তিনি একাই করেছেন।
তবে এ ক্ষত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে:
১) অপরাধটি কোন ফৌজদারী অপরাধ ছিল কিনা;
২) একাধিক ব্যক্তি কোন অপরাধমূলক কাজ করেছেন কিনা;
৩) তারা সকলেই ইচ্ছাপোষন করেছেন,তারা ঐ অপরাধমূলক কাজটি করবেন;
৪) সকলের অভিপ্রায়কে সার্থক করার জন্য ঐ অপরাধটি করা হয়েছিল কিনা;
৫) অপরাধ সংঘটনে অপরাধরি পূর্বপরিকল্পনা ছি কি না এবং
৬) সর্বোপরি ,একই সাধারণ উদ্দেশ্য সিদ্ধিকল্পে অপরাধীদের প্রত্যেককেই অপরাধ সংগঠনে অংশগ্রহন করেছিল কিনা।
এই সমস্ত বিষয় বিবেচনা করে অপরাধ সম্পাদনের সময় উপস্থিত না থেকেও সমান অপরাধে অপরাধী বলে ধরে নেওয়া হয়।
চার্জ গঠনঃ
কোন অসামীর বিরুদ্ধে অত্র ধারার অধীনে চার্জ গঠন করতে হলে উপরোক্ত উপাদানের যেকোন একটি বিদ্যমান থাকতে হবে।
অব্যাহতিঃ
কোন আসামী যদি সহ-আসামীদের উদ্দেশ্য বা পূর্বপরিকল্পিনা সম্পর্কে অবগত না থেকে থাকলে উক্ত আসামী এই ধারার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাবে।
উদাহরণ সরূপ বলা যায়:-
কামাল-জামাল, জমির ও রফিক একটা ব্যাংকের টাকা লুট করতে যায়,
কামাল-জামাল ব্যাংকের গেটে পাহারারত থাকে এবং রফিক ব্যাংকের ভিতরে প্রবেশ করে টাকা গণনারত ক্যাশিয়ার কে টাকাগুলো রফিককে দিয়ে দিতে বলে, ক্যাশিয়ার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে রফিক তার পকেটে থাকা পইন্ট ফোর ক্যালেভারের পিস্তল বের করে উক্ত ক্যাশিয়ার কে গুলি করে হত্যা করে টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়, পালিয়ে যাওয়ার সময় জনতার হাতে কামাল ধরা পরে।
এক্ষেত্রে কামাল উক্ত ক্যাশিয়ারকে গুলি করে হত্যা না করলেও উক্ত খুনের অপরাধ সংঘটনের জন্য দন্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারা মতে দোষী বলে গন্য হবে।
কারণ কামাল,জামাল,জমির ও রফিকের পরিকল্পনা ছিল ব্যাংক লুট করা, এবং কেউ বাধা দিলে তাকে গুলি করে হত্যা করা হবে এটিও তাদের উদ্দেশ্যের অন্তর্গত হবে।
উল্লেখিত আলোচনা হতে ইহা সুস্পষ্ট হয়ে উঠে যে, দুই বা ততোধিক ব্যক্তি একই উদ্দেশ্য সাধন কল্পে যখন একই ধরণের কোন অপরাধ করে,তখন তারা প্রত্যেকেই সেই অপরাধের জন্য যুক্তভাবে দায়ী হবে।, যেমন তারা ব্যক্তিগতভাবে কৃত অপরাধের জন্য দায়ী হয়। এ প্রসঙ্গে ডধৎুধস ঝরহময াং ঈৎড়হি(১৫৪১)ওখজ নামক মামলাটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
সাধারণ অভিপ্রায় সম্পর্কে একটা প্রখ্যাত প্রিভিকাউন্সিলের সিন্ধান্ত রয়েছে যা এখনও অনুসরণ করা হয়। এটা হচ্ছে বরেন্দ্রকুমার ঘোষ বনাম সরকার (ইধৎধহফৎধ কঁসধৎ এযড়ংব াং ঞযব ঊসঢ়বৎড়ৎ)মামলা।
এই মামলায় আসামী বরেন্দ্র কুমার ঘোষকে শঙ্করী তোলা পোষ্ট অফিসের পোষ্ট মাস্টারকে হত্যার জন্য দায়ী করা হয়,যদিও সে নিজে তাকে গুলি করেনি। ঘটনাটি ঘটে ১৯২৩ সালের ৩রা আগষ্ট। ঐদিন উক্ত পোষ্ট মাস্টার যখন পোস্ট অফিসে বসে টাকা গুনতেছিল ,তখন ৩ ব্যক্তি সেখানে উপস্থিত হল এবং সমস্ত টাকা দিতে বললে সে উহা দিতে অস্বীকার করেন। আসামী বরেন্দ্র কুমার ঘোষও সেখানে ছিল। টাকা দিতে অস্বীকার করলে বরেন্দ্র কুমারের অপর সঙ্গীগন গুলি করে পোষ্ট মাস্টারকে নিহত করে। অসামী বরেন্দ্র কুমার ঘোষ যেহেতু পোষ্ট মাস্টারকে গুলি করেনি, সেহেতু কলিকাতা হাইকোর্টের দায়রা বিভাগ আসামী বরেন্দ্র কুমার ঘোষকে খুনের জন্য সে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবী করে। এ মামলায় সাক্ষ্য প্রমান গ্রহন করে মাননীয় জুরিদের নির্দেশ দেন যে, তারা যদি এই মর্মে সন্তষ্ট হন যে,উক্ত পোষ্ট মাস্টারের হত্যার পিছনে তাদের একটি সাধারণ উদ্দেশ্য ছিল। তবে আসামী বরেন্দ্র কুমার গুলি করুক বা না করুক তাকে অপরাধী বলে গণ্য করা যাবে। কারণ ,সে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল এবং একই সাধারণ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য সেখানে গিয়েছিল। ফলে, এই মামলায় জজ সাহেব জুরিদের সাথে একমত হয়ে আসামী বরেন্দ্র কুমার ঘোষকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন। মামলাটিশেষ পর্যন্ত প্রিভি কাউন্সিলে যায় এবং সেখানেও উক্ত রায় বহাল থাকে।
এভাবে বরেন্দ্র কুমার ঘোষের মামলায় এই সিন্ধান্ত গ্রহন করা হয় যে, একই উদ্দেশ্য নিয়ে কতিপয় ব্যক্তি যদি একত্রে কোন অপরাধ কবে, তবে সে অপরাধের জন্য প্রত্যেককেই সমানভাবে দায়ী ও দোষী হবে এবং আইনে ধরা হবে যে প্রত্যেককেই স্বতন্ত্রভাবে উক্ত অপরাধ করেছে।
কতিপয় ব্যক্তি একই সাধারণ অভিপ্রায় পূরণকল্পে কোন অপরাধ সংগঠন করে তা উল্লেখ আছে ৩৪ ধারায়। এতে সাধারণ অভিপ্রায়ের কথা বলা হয়েছে কমপক্ষে ২ জন ব্যক্তি না হলে ৩৪ ধারা কার্যকরী হবে না। এ অপরাধ সংগঠনের জন্য একাধিক ব্যক্তির প্রয়োজন। যে কোন শ্রেণীর ব্যক্তির ক্ষেত্রে এ ধারা প্রযোজ্য হবে। এ ধারার সর্বোচ্চ শাস্তি মূল অপরাধের শাস্তির ন্যায় হবে।
দন্ডবিধির ৩৪ ধারায় যৌথ দায়িত্বেও যে নীতি প্রতিফলিত হয়েছে তার সাথে নি¤েœাক্ত ধারাগুলিও সম্পর্কিত বিধায় এগুলিও বিশেষভাবে প্রভিধান যোগ্য:
৩৫ ধারায় বলা হয়েছে যে, যে কাজ অপরাধমূলক অভিপ্রায়ে সম্পাদিত হবার দরুণ অপরাধ বলে গন্য হয়,এমন কাজে যদি সেরুপ অভিপ্রায়ে কতিপয় ব্যক্তি অংশগ্রহন করে তাহলে তাদেও প্রত্যেকে সেরুপ দায়ী হবে যেরুপ একা করলে হতো।
৩৭ ধারায় বলা হয়েছে যে,যখন কোন একটি অপরাধ কতিপয় কাজের ফলে সংঘটিত হয় এবং এরুপ অপরাধ সংঘটনে যারা ঐ সকল কতিপয় কাজের যে কোন একটির দ্বারা তারা সকলে ঐ প্রধান অপরাধের জন্য দায়ী হবে।

দন্ডবিধির ১৮৬০ এর ৩৮ ধারার বিধান অনুযায়ী কোন অপরাধজনক কাজে কতিপয় ব্যক্তি জড়িত থাকলে ঐ কাজের জন্য তাদের অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে বিভিন্ন অপরাধের জন্য দায়ী হতে পারে।
যেমন- উদাহরণ স্বরুপ বলা যায় যে, একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে প্রচন্ড উত্তেজনায় ক,খ কে আক্রমন করে এবং তাকে হত্যা করে। এরুপ অবস্থায় ক খুনের জন্য দায়ী না হয়ে আইনের বিধান মতে, অপরাধমূলক নরহত্যা যা খুন নয় এই দোষে দোষী হতে পারে। কিন্তু গ ,খ এর বিরুদ্ধে পূর্ব শক্রুতা থাকায় এবং তার উত্তেজনার কোন কারণ না থাকা স্বত্বেও ক কে এই হত্যায় সহায়তা করে। এক্ষেত্রে ক এবং গ দুইজনে খ কে হত্যা করে। তাহলে ক ও গ দুই জনে খ কে হত্যা করলে ক অপরাধমূলক নরহত্যা এবং গ খুনের জন্য দায়ী হবে। এ ক্ষেত্রে যৌথ দায়িত্ব নীতি প্রযোজ্য হবে না এবং দন্ডবিধির ৩২৩,৩২৪, ও ৩২৫ ধারায় আওতায় সাজা হবে। 
আলোচ্য প্রশ্নে দেখা যায় যে,করিম ও রহিম একত্রিত হয়ে কালামকে আক্রমন করে। কালাম একজন দায়িত্ব পালনরত সরকারী কর্মচারী যা শুধু করিম এর জানা ছিল কিন্তু রহিম জানত না। তবে এ ক্ষেত্রে আঘাত করার অভিপ্রায় উভয়েরই একি ছিল। সে জন্য সাজা একই হবে।। সরকারী কর্মচারীকে দায়িত্ব পালনরত অবস্থা শাস্তির মাত্রা কিছুটা বেশী যা দন্ডবিধির ৩৩২ বা ৩৩৩ ধারার আওতায় পড়ে। কিন্তু সাধারণ ব্যক্তিকে আঘাত করলে তা দন্ড বিধির ৩২৩ বা ৩২৪ ও ৩২৫ ধারার আওতায় পড়ে। এক্ষেত্রে যৌথ দায়িত্ব নীতটি প্রযোজ্য হবে। কিন্তু সরকারী কর্মচারীকে আঘাত করার ক্ষেত্রে যৌথ দায়িত্ব নীতিটি অর্থাৎ ৩৪ ধারা প্রযোজ্য হবে না।
উপসংহার:
উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি যে,,দন্ডবিধির ৩৪ ধারায় বর্ণিত নীতি অনুযায়ী অপরাধীগন প্রত্যেকে সমগ্র অপরাধটির জন্য যৌথভাবে দায়ী হয়। কারণ এক্ষেত্রে অপরাধীগণ সকলেই সম্মিলিতভাবে সংশ্লিষ্ট অপরাধমূলক কার্যটি সম্পাদন করে থাকেন।ওঃ রং ধ পড়সসড়হ ঝবপঃরড়হ.
প্রশ্ন-৩ প্ররোচনা বলতে কি বুঝ? প্ররোচিত করেনি এমন কোন কোন ক্ষেত্রে প্ররোচনাকারীর শাস্তি হতে পারে?
শহীদকে গুরুতর জখম করার জন্য করিম রহিমকে প্ররোচিত করে প্ররোচনার ফলস্বরুপ রহিম শহিদকে গুরুতর জখম করে এবং এর ফলে শহীদ মারা যায় কে কোন অপরাধ করল?
ভূমিকা:
অনবঃসবহঃ রং ধষংড় ধহ ড়ভভবহপব. অর্থাৎ অপরাধে সহায়তাও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
দন্ডবিধির ১০৭ থেকে ১২০ ধারা পর্যন্ত অপরাধে সহায়তা বা প্ররোচনার বিধানগুলো বর্ণনা করা হয়েছে। এমনকি কোনো অপরাধ সংঘটনের তথ্য জানার পরও তা প্রকাশ না করাকেও আইনে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
প্ররোচনা,ষড়যন্ত্র কার্য বা কার্যবিরতি দ্বারা এরুপ দুষ্কর্মের সহায়তামূলক অপরাধকে ক্ষুদ্রাপরাধ হিসেবে গণ্য করা যায় না-বরং ইহা মূল অপরাধের ন্যায় গুরুত্বপূর্ণ। তাই চখউ ১৯৬১খধয.২১২ পাতায় যথার্থই বলা হয়েছে যে,  “অনবঃসবহঃ রং হড়ঃ ধ সরহড়ৎ ড়ভভবহপব রিঃযরহ ঃযব সবধহরহম ড়ভ ংবপঃরড়হ ২৩৮ ,ঈৎচঈ” সাথে সাথে সহায়তাকৃত কার্য হতে ভিন্ন কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে সহায়তাকারীর দায়িত্ব কিভাবে নির্ণীত হবে, উহাই আমাদের  আলোচ্যতব্য প্রশ্নটির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় এ প্রসঙ্গে একথা উল্লেখ্য যে,“ঊাবৎু সধহ রং ঢ়ৎবংঁসবফ ঃড় রহঃবহফ ঃযব হধঃঁৎধষ পড়হংবয়ঁবহপবং ড়ভ যরং ধপঃ”
প্ররোচনার সংজ্ঞা:
যখন কোন ব্যক্তি কোন অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করে,তখন তাকে প্ররোচনামূলক কার্য বলে। সুতরাং অপরাধ সংঘটনের প্রচেষ্টায় সক্রিয়ভবে অংশগ্রহন করাই প্ররোচনা (অনবঃসবহঃ )। এই ধারা মোতাবেক যে ব্যক্তি প্ররোচনা দেয় তাকে দুষ্কর্মের সাহায্যকারী অনবঃঃবৎ) হিসেবে অভিহিত করা হয়। এরুপ প্ররোচনা বিভিন্নভাবে হতে পারে। যেমন-অপরাধ করতে প্ররোচনা দেওয়া,অপরাধ করবার কাজে জড়িত থাকা বা ইচ্ছা করে কোন ব্যক্তিকে অপরাধে সাহায্য করা। তাই,অনফঁষ খধঃরভ াং ঞযব ঈৎড়হি,৮ উখজ ২৩৮ পাতায় যথার্থই বলা হয়েছে যে, “ঞযব অনবঃসবহঃ সঁংঃ নব ধহ ধপঃ ভধপরষষধঃরহম ঃযব পড়সসরংংরড়হ ড়ভ ঃযব ড়ভভবহপব.”
দন্ডবিধির ১০৭ ধারায় কোন কুকর্মে সহায়তা/ প্ররোচনামূলক অপরাধের সংজ্ঞা ও ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে। উক্ত ধারায় তিন প্রকার প্ররোচনা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। অতএব, এ ধারা অনুসারে নি¤œবর্ণিত তিনটি ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তি প্ররোচনা দিয়েছে বলে বিবেচিত হয়-
ক) যদি কোন ব্যক্তি অপর কোন ব্যক্তিকে কোন কাজ করবার জন্য প্ররোচিত করে, তবে ঐ ব্যক্তি প্ররোচনা দিয়েছে বলে গন্য হয়।
খ) ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়া: যদি কোন ব্যক্তি কোন বিষয়ে বা কার্য সম্পাদনের জন্য এক বা একাধিক ব্যক্তি বা ব্যক্তি বর্গের সাথে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় এবং উক্ত ষড়যন্ত্র অনুসারে যদি কোন কার্য করা হয় বা কার্য হতে বেআইনিভাবে বিরত থাকা হয় এবং অনুরুপ কার্য সম্পাদনের জন্য তা করা হয় তবে ঐ ব্যক্তি কোন কার্যে প্ররোচনা দান করেছে বলে বিবেচিত হবে।
গ) সাহায্যের মাধ্যমে প্ররোচনা: সর্বোপরি যদি কোন ব্যক্তি কোন কার্য সম্পদনের মাধ্যমে বা বেআইনি ভাবে ঐ কাজ করা হতে বিরত থেকে কোন অপরাধ সংঘটনে ইচ্ছাকৃতভাবে সাহায্য করে তবে ঐ ব্যক্তি প্ররোচনা দান করেছে বলে গন্য হবে।
উদাহরণ:’ক’ একজন সরকারি কর্মকর্তা। ’চ’ কে গ্রেপ্তার করার জন্য তাকে একটি পরোয়ানার মারফত আদালত হতে ক্ষমতা দেয়া হয়। খ এই বিষয়টি অবগত হয়ে এবং গ যে চ নয় সে সম্পর্কে অবহিত থাকা স্বত্বেও ইচ্ছাপূর্বক  ক এর কাছে গ-কে চ বলে পরিচয় দেয় এবং এইভাবে ইচ্ছাপূর্বক ক-কে দিয়ে গ-কে গ্রেফতার করায়। এই ক্ষেত্রে খ প্ররোচনা সংঘটনে সহায়তা করেছে বলে পরিগণিত হয়।
এই ধারাটি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, প্ররোচনা বলতে বোঝায়-
ক) একটি অপরাধজনক কার্যে উৎসাহিত বা প্ররোচিত করা;বা
খ) অপরাধ করার জন্য চক্রান্ত করা বা
গ) ইচ্ছাকৃতভাবে কাউকে এ কাজে সহায়তা করা বা ইচ্ছাকৃতভাবে কোন কাজ করা হতে বিরত থাকা যেনো অপরাধমূলক কাজটি করা যায়।
বিভিন্ন আদালতের সিন্ধান্ত অনুযায়ী দেখা যায় যে,-
ক) ভীতি প্রদর্শন বা জবরদস্তির মাধ্যমে কোন কিছু করানোকে প্ররোচনা বলে না।(২৬ ডিএরআর ৪১৯)
খ) মূল অপরাধির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হলে প্ররোচনাকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ টিকে না(২২ ডিএল আর ৫৭২)
গ) প্ররোচনার জন্য দায়ী হতে হলে সংশ্লিষ্ট অপরাধমূলক কাজটি সংঘটিত হতে হবে এমন প্রয়োজন নেই (অওজ ১৯৬৭ঝঈ ৫৫৩)
ক খকে হত্যা করিবার জন্য গ কে প্ররোচিত করে কিন্তু গ রাজি হয় না তাথাপি ক খুন করার উদ্দেশ্যে প্ররোচিত করার জন্য দোষী হবে।
১১৫ ধারা অনুযায়ী ৭ বৎসর পর্যন্ত সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হবে এবং তাকে অর্থদন্ডেও দন্ডিত করা যাবে।
ক খ কে হত্যা করবার জন্য গ কে প্ররোচিত করে গ খ কে আঘাত করে কিন্তু হত্যা করে না । ক এর সহায়তার ফলে যদি খ কোনরুপ আঘাত প্রাপ্ত হয় তবে ক শাস্তি ১১৫ ধারা অনুযায়ী ১৪ বৎসর কারাদন্ড হতে পারে এবং তদুপরি অর্থ দন্ডেও দন্ডিত করা যাবে।।
দন্ডবিধি, ধারা ১০৮। দুষ্কর্মে সহায়তাকারী বা প্ররোচনা দাতা (অনবঃঃড়ৎ):
কেউ যদি অন্য কোনো ব্যক্তিকে অপরাধ করতে বা কোনো দুষ্কর্ম করতে সহায়তা করে বা প্ররোচনা দেয় অথবা এমন একটি কাজে সহায়তা করে যে কাজে সাহায্যকারী ব্যক্তির ন্যায় একই উদ্দেশ্য বা অবগতি সহকারে অপরাধ সংঘটনের জন্য আইনত যোগ্য বলে বিবেচিত কোন ব্যক্তি কর্তৃক সম্পাদিত হলে অপরাধ বলে গণ্য হত, তাহলে অপরাধটি যে ব্যক্তি করেছে সেই লোকটির সমান অপরাধ, সহায়তাকারী বা প্ররোচনাদানকারী করেছে বলে বিবেচিত হবে।
দন্ডবিধি, ধারা ১০৮-ক। বিদেশে সংঘটিত অপরাধে দেশের অভ্যন্তরে থেকে সহায়তা বা প্ররোচনা দান (অনবঃসবহঃ রহ ইধহমষধফবংয ড়ভ ড়ভভবহপবং ড়ঁঃংরফব রঃ):
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সংঘটিত হলে যে কাজ অপরাধ হিসেবে গণ্য হতো, সে কাজ দেশের বাইরে ঘটলে এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থেকে বিদেশের অপরাধীকে প্ররোচিত করলেও অপরাধ হবে।
উদাহরণঃ 'ক' বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একজন বিদেশি নাগরিক 'খ'-কে একটি খুনের অপরাধ সংঘটনে প্ররোচনা দিলে 'ক' খুনের অপরাধে সহায়তার জন্য অপরাধী হবে।
ধারা ১০৯। দুষ্কর্মে সহায়তার ফলে সহায়তাকৃত কাজটি সম্পাদিত হলে এবং যে ক্ষেত্রে সহায়তা প্রদানের শাস্তির কোন স্পষ্ট বিধান নাই, সে ক্ষেত্রে দুস্কর্মে সহায়তার শাস্তি (চঁহরংযসবহঃ ড়ভ ধনবঃসবহঃ রভ ঃযব ধপঃ ধনবঃঃবফ রং পড়সসরঃঃবফ রহ পড়হংবয়ঁবহপব ধহফ যিবৎব হড় বীঢ়ৎবংং ঢ়ৎড়ারংরড়হ রং সধফব ভড়ৎ রঃং ঢ়ঁহরংযসবহঃ):
কোন ব্যক্তি কোন অপরাধে সহায়তা করলে যদি সহায়তার ফলে সহায়তাকৃত কাজটি সম্পাদিত হয় এবং এই বিধিতে অনুরূপ দুষ্কর্মে সহায়তার শাস্তি বিধানার্থে কোন স্পষ্ট বিধান না থাকে, তবে ওই সংঘটিত অপরাধের জন্য যে দন্ডের বিধান রয়েছে সহায়তাকারী ও সেই দন্ডে দন্ডিত হবে।
উদাহরণঃ 'ক' যদি 'খ'-কে হত্যার জন্য 'গ'-কে সহায়তা দেয় বা প্ররোচিত করে তবে 'গ' অপরাধটি করার জন্য যে শাস্তি ভোগ করবে, 'ক'ও সেই শাস্তি ভোগ করবে।
প্ররোচিত করেনি এমন কোন কোন ক্ষেত্রে প্ররোচনাকারীর শাস্তি হতে পারে:
যে অপরাধমূলক কার্যের জন্য প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে সে কার্য সম্পন্ন না হয়ে অন্য কার্য সম্পন্ন হলে প্ররোচনাকারী কতটুকু দায়ী হবে সে সম্পর্কে দন্ডবিধির ১১১ ও ১১৩ ধারায় বিধান রয়েছে-
ক) যে কাজের জন্য সহাযতা করা হয়েছে সে কাজ ভিন্ন অপর কোন কাজ সম্পাদিত হলে সেক্ষেত্রে সহায়তাকারীর দায়িত্ব:দন্ডবিধির ১১১ ধারা অনুসারে যেক্ষেত্রে একটি কাজের জন্য সহাযতা করা হয়েছে কিন্তু সে কাজটি ছাড়া যদি অন্য একটি কাজ সম্পন্ন করা,তবে সে ক্ষেত্রে সহায়তাকারী সম্পাদিত কাজের জন্য এরুপ এবং এ পরিমান দায়ী হবে, যেন সে উহাতে সরাসরি সহায়তা করেছে।
উদাহরণ- ক একটি শিশুকে খ- এর খাদ্যে বিষ মেশানোর জন্য প্ররোচিত করে তার হাতে বিষ তুলে দিল। কিন্তু ভুল বশত:গ-এর খাদ্যের মধ্যে ঐ বিষ মেশানো হলো।এখানে শিশুটি যদি  ক- এর প্ররোচনার প্রভাবেই কাজটি কওে থাকে এবং শিশুটি যে কাজটি করলে তা যদি তৎকালরি অবস্থাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে সহায়তার ফলেই করা হয়ে থাকে, তবে ক শিশুটিকে প্রত্যক্ষভাবে গ- এর খাদ্যে বিষ মিশাতে প্ররোচিত করলে তজজন্য এবং যতদুর পর্যন্ত বিহিত দন্ডে দন্ডিত হত, এক্ষেত্রে ক ঠিক সেভাবে এবং ততদুর পর্যন্ত দন্ডে দন্ডিত হবে।
খ) অভিপ্রেত পরিনতি হতে ভিন্ন পরিনতির ক্ষেত্রে প্ররোচকের দায়িত্ব:
দন্ডবিধির ১১৩ ধারার বিধান মোতাবেক যে ক্ষেত্রে কোন বিশেষ পরিনতি ঘটাবার জন্য প্ররোচকের(অনবঃড়ৎ) উদ্দেশ্য অনুযায়ী কোন কার্যে সহায়তা করা হয এবং কার্যের জন্য প্ররোচক কর্তৃক অভিষ্ট পরিনতি হতে উন্নতর পরিনতি ঘটায় সে ক্ষেত্রে প্ররোচক সংঘটিত পরিনতির জন্য এরুপে ও এই পরিমানে দায়ী হবে যেন সে উক্ত পরিনতি ঘটানোর উদ্দেশ্যে উক্ত কার্যে সহায়তা করেছিল। অবশ্য এই শর্তে যে, তার জানা থাকতে হবে যে, প্ররোচিত কার্যের উক্ত পরিনতি ঘটাবার সম্ভাবনা ছিল।
উদাহরণ-ক,খ-কে গুরুতর আঘাত করার জন্য গ-কে প্ররোচিত করে। উক্ত প্ররোচনার ফলে গ,খ-কে গুরুতররুপে আঘাত করে। ইহার ফলে খ এর মৃত্যু ঘটে। এ ক্ষেত্রে যদি ক এর জানা থাকে যে, তার দ্বারা প্ররোচিত গুরুতর আঘাতে মৃত্যু ঘটার সম্ভাবনা ছিল , তবে ক খুনের জন্য নির্দিষ্ট দন্ডে দন্ডনীয় হবে।
উপসংহার:
উল্লেখিত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, প্ররোচনা হল এমনই একটি অপরাধমূলক কার্য যা মূল অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করে। তাই যে ব্যক্তি অপরাধ অনুষ্ঠানে সহায়তা করে, সেই ব্যক্তিকে দুষ্কর্মের সহাযতাকারী হিসেবে গন্য করা হয। প্ররোচনা,ষড়যন্ত্র কার্য করা  ও কার্যে সহায়তা করে এরুপ অপরাধ সংঘটিত করে।সর্বোপরি ,কোন অবস্থায় প্ররোচনাকারী যে, অপরাধের প্ররোচনা দিয়েছিল তা ব্যতীত অন্য অপরাধের জন্য শাস্তি পেতে পারে- উহার বিধানাবলী আমাদের আলোচিত বক্তব্যের মাধ্যম্যে মূর্তমান হয়ে উঠেছে।



প্রশ্ন-৪ নারী ধর্ষনের সংজ্ঞা দাও। নারী ধর্ষণ অপরাধের উপাদানগুলি কি কি? কখন একজন পুরুষ তার স্ত্রীকে ধর্ষণের দায়ে দায়ী হন? নারী ধর্ষণের শাস্তি কি?
ভূমিকা:
ধর্ষণ এক মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি, যা কেবল নারীকেই নয়, গোটা সমাজকে করে তোলে এক অসহনীয় যন্ত্রণার প্রতিচ্ছবি। বিকৃত মানসিকতার কিছু প্রানির ক্ষেত্রেই সম্ভব নারীর ওপর এমন বীভৎস নির্যাতন চালানো। ভারতে তোলপাড় ফেলে-দেওয়া দিল্লি গণধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত চারজনকেই মৃত্যুদন্ড দিয়েছে আদালত। দিল্লিতে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক তার রায় ঘোষণার সময় বলেছেন, সমাজে যখন নারীর বিরুদ্ধে নির্যাতন ক্রমশ বাড়ছে তখন এমন একটা ঘৃণ্য, নৃশংস অপরাধের ব্যাপারে আদালত চোখ বুজে থাকতে পারে না।
আশ্চর্য হলেও সত্য, এমন ভয়ঙ্কর একটি অপরাধের শাস্তি বাংলাদেশে তেমন বিবেচনা প্রসুত হয়ে উঠেনি। বাংলাদেশে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হলে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯ ধারায় উল্লেখ আছে, ধর্ষণ জনিত কারণে ভিকটিমের মৃত্যু হলে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড বা মৃত্যুদন্ড হতে পারে। সত্যি কি সেলুকাস! ভিকটিমের মৃত্যু হলেও ‘যাবজ্জীবন’ অথবা ‘মৃত্যুদন্ড’।
বাংলাদেশে এই আইনটি কতোটা গ্রহণযোগ্য সে প্রশ্নটি থেকেই যায়, কারণ আইন যথাযোগ্য না হলে অপরাধীরা প্রশ্রয় পেতে থাকে। বাংলাদেশে ধর্ষণের অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান করা এখন সময়ের দাবি। এ দাবির সঙ্গে একাত্ম হতে হবে সবাইকে।
নারী ধর্ষনের সংজ্ঞা:
সাধারন ভাবে ধর্ষণ বলতে বুঝায়, নারী বা পুরুষ যে কোন একজনের অমতে জোরপূর্বক যৌন সম্পর্ক স্থাপন করাকে। তবে আমরা যে সমাজে বাস করি তার পরিপ্রেক্ষিতে ধর্ষনের শিকার শুধুমাত্র নারীরা। কিন্তু আমাদের এই ধারণা পুরোপুরিভাবে ‘ধর্ষণ’-কে সংজ্ঞায়ীত করে না।
দন্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় ‘ধর্ষণ’-কে যেভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে তা হলোঃ
 কোন পুরুষ অত:পর ব্যতিক্রম ভিন্ন অপর সকল ক্ষেত্রে নি¤œাক্ত পাঁচটি যে কোন অবস্থায় কোন নারীর সাথে যৌন সঙ্গম করলে সে ব্যক্তি নারী ধর্ষণ করেছে বলে গণ্য হবে-
প্রথমত,স্ত্রীলোকটির ইচ্ছার বিরুদ্ধেযৌন সঙ্গম করলে,
দ্বিতীয়ত,স্ত্রীলোকটির সম্মতি ব্যতিরেকে যৌন সঙ্গম করলে,
তৃতীয়ত,স্ত্রীলোকটিকে মৃত্যু বা জখমের ভয় প্রদর্শন করে সম্মতি আদায করে যৌনসঙ্গম করলে,
চতুর্থত,যে ক্ষেত্রে স্তীলোকটি বিশ্বাস করে যে পুরুষ লোকটি তার স্বামী অথচ পুরুষটি জানে যে সে ঐ স্ত্রীলোকিটির স্বামী নহে এর পরও স্ত্রীলোকটির সাথে যৌন সঙ্গম করলে, 
পঞ্চমত, স্ত্রী লোকটির সম্মতিক্রমে অথবা সম্মতি ব্যতিরেকে,যদি স্ত্রীলোকটির বয়স চৌদ্দ বছরের কম হয়।
এখানে উল্লেখ্য যে, অনুপ্রবেশই নারী ধর্ষণের অপরাধ রূপে ‘গণ্য হবার যোগ্য যৌনসহবাস’ অনুষ্ঠানের জন্য যথেষ্ট বিবেচিত হবে।
ব্যতিক্রম:
কোন পুরুষ কর্তৃক তার স্ত্রীর সহিত যৌন সহবাস,স্ত্রীর বয়স ১৬ বৎসরের কম না হলে নারী ধর্ষণ বলে গণ্য হবে না।(ধারা-৩৭৫)
নারী ধর্ষনের উপাদান:
নারী ধর্ষনের উপাদানসমূহ নি¤œরুপ:
যে ব্যক্তি অত:পর ব্যতিক্রম ক্ষেত্র ব্যতিরেকে নি¤েœাক্ত ৫ প্রকার বর্ণনাধীন যে কোন অবস্থায় কোন নারীর সহিত যৌন সঙ্গম/সহবাস করে সেই ব্যক্তি নারী ধর্ষন করে বলে গন্য হবে।
১) তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে:ইচ্ছার বিরুদ্ধে অর্থাৎ প্রত্যক্ষ আগ্রহের অভাব। নিদ্রিত অবস্থায় কোন নারীর সহিত মিলিত হলে সে মিলনকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে মিলন বোঝায়। জড়বুদ্ধি সম্পন্ন কোন নারীকে বুদ্ধির দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে যৌন সঙ্গম করা হলে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে মিলন বুঝায়।
২) তার সম্মতি ব্যতিরেকে: সম্মতি ব্যতিরেকে অর্থ স্বাধীনভাবে অনুমতি না দেওয়াকে বুঝায়।
৩) তার সম্মতিক্রমেই.তবে যে ক্ষেত্রে তাকে মৃত্যু বা আগাতের ভয় প্রদর্শন করে তার সম্মতি আদায় করা।
৪) তার সম্মতিক্রমেই, যে ক্ষেত্রে স্ত্রীলোকটি বিশ্বাস করে যে পুরুষ লোকটি তার স্বামী অথচ পুরুষটি জানে যে সে ঐ স্ত্রীলোকটির স্বামী নহে,এর পরও স্ত্রীলোটির সাথে যৌনসঙ্গম করলে।
৫) তার সম্মতিক্রমে অথবা সম্মতি ব্যতিরেকে যে ক্ষেত্রে তার বয়স ১৪ বছরের কম হয়।
কখন একজন পুরুষ তার স্ত্রীকে ধর্ষনের দায়ে দায়ী হন:
কোন পুরুষ কর্তৃক নিজ স্ত্রীর সাথে যৌনসঙ্গম ধর্ষন বলে পরিগনিত হবে না, যদি স্ত্রী তের বছরের নি¤œ বয়স্কা না হয়।
অর্থাৎ কোন পুরুষ কর্তৃক নিজ স্ত্রীর সাথে যৌন সঙ্গম ধর্ষন বলে গন্য হবে যদি স্ত্রীর বয়স তের বছরের কম হয়।
ধর্ষণের শাস্তি:
যদি কোন ব্যক্তি ধর্ষণের অপরাধ করে, তবে উক্ত ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারদন্ড অথবা ১০ বৎসর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম ও বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হইবে এবং অর্থ দন্ডেও দন্ডিত হবে। ধর্ষিতা নারী যদি ধর্ষণকারীর স্ত্রী হয় এবং স্ত্রীর বয়স যদি ১২ বৎসরের কম না হয় ,তবে উক্ত ব্যক্তি দুই বৎসরের কারাদন্ডে দন্ডিত হইবে ও অর্থদন্ডেও দন্ডিত হইবে এবং উক্ত স্ত্রীর বয়স ১২ বৎসরের কম হইলে, যাবজ্জীবন বা দশ বৎসর পর্যন্ত কারাদন্ডে দন্ডিত হইবে।(ধারা-৩৭৬)
 ধর্ষণ এবং ব্যভিচার এর মধ্যে পার্থক্য:
৩৭৫ ধারা:এই ধারা অনুসারে ধর্ষন বলতে নি¤েœাক্ত পাঁচ ধরনের ড়ভভবহপব কে বুঝাবে। যথা:
১)স্ত্রীলোকটির ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌন সঙ্গম করলে;
২) স্ত্রীলোকটির সম্মতি  ব্যতিরেকে যৌনসঙ্গম করলে;
৩) স্ত্রীলোকটিকে মৃত্যু বা জখমের ভয় প্রদর্শন করে সম্মতি আদায় করে যৌনসঙ্গম করলে;
৪) যেক্ষেত্রে স্ত্রীলোকটি বিশ্বাস করে যে পুরুষলোকটি তার স্বামী অথচ পুরুষটি জানে যে সে ঐ স্ত্রীলোকটির স্বামী নহে,এরপরও স্ত্রীলোকটির সাথে যৌনসঙ্গম করলে।
৫) স্ত্রীলোকটির সম্মতি থাকুক বা না থাকুক যদি তা বয়স ১৪ বছরের কম হয়।

ব্যভিচার: বিধির ধারা ৪৯৭ ধারা মতে,কোন ব্যক্তি যদি অপর কোন ব্যক্তির স্ত্রী অথবা যাকে সে অন্য কোন ব্যক্তির স্ত্রী বলে জানে বা তার অনুরুপ বিশ্বাস করার কারণ আছে এমন কোন ব্যক্তির সাথে উক্ত অন্য ব্যক্তির সম্মতি ও সমর্থন ছাড়া এই রুপ যৌন সঙ্গম করে যা নারী ধর্ষনের সামিল নয় তবে সে ব্যক্তি ব্যভিচারর অপরাধের জন্য দায়ী হবে।
ধর্ষন দন্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় বর্ণিত আছে অপরদিকে ব্যভিচার দন্ডবিধির ৪৯৭ ধারায় বর্ণিত আছে
ধর্ষণকে ইংরেজীতে রেপ বলে অপর দিকে ব্যভিচারকে ইংরেজিতে ঋড়ৎহরপধঃরড়হ বলে।
ধর্ষণের অপরাধে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে দন্ড বিধির ৩৭৬ ধারা মতে, ধর্ষনের অপরাধে দোষী সাব্যস্থ ব্যক্তির সাজা হবে, যাবজ্জীবন কারাদন্ড অথবা ১০ বছর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং সেই সাথে জরিমানা। ধর্ষণের অপরাধে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০০৩ এর ৯(১) ধারা অনুযায়ী মৃত্যুদন্ড বা যাবৎজ্জীবন অপর দিকে ব্যভিচার অপরাধের জন্য কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে ৭ বৎসর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের কারাদন্ডে দন্ডিত করা যাবে।
ধর্ষনের মামলা ধর্ষীতা নিজে অথবা তার অতœীয় বা অন্য কেউ  করতে পারে। অপরদিকে ব্যভিচারের ক্ষেত্রে ঐস্ত্রীর স্বামী ছাড়া অন্য কেউ অভিযোগ দায়ের করতে পারে না।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বলা আছে,
১. যদি কোন ব্যক্তি কর্তৃক ধর্ষন বা ধর্ষন পরবর্তী অন্য কার্যকলাপের জন্য ধর্ষিতা নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে, তাহলে ধর্ষনকারী মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হবেন এবং এর অন্যূন ১ লক্ষ টাকা অর্থদন্ডেও দন্ডিত হবেন,
২. যদি দলবদ্ধভাবে ধর্ষনের ফলে ধর্ষিতার মৃত্যু ঘটে বা আহত হয়, তাহলে প্রত্যেক ব্যক্তিই মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডনীয় এবং এর অতিরিক্ত ১ লক্ষ টাকা অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হবেন,
৩. যদি কেউ ধর্ষন করে মৃত্যু ঘটানো বা আহত করার চেষ্টা করে, তাহলে ওই ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডিত হবেন,
৪. যদি কেউ ধর্ষনের চেষ্টা করে এবং তা প্রমাণিত হয় তাহলে অনধিক ১০ বছর কিন্তু অন্যুন ৫ বছর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হবেন এবং অতিরিক্ত অর্থদন্ডে দন্ডিত হবেন,
৫. যদি কোন নারী পুলিশ হেফাজতে  থাকা অবস্থায় ধর্ষিতা হয়, তাহলে যাদের হেফাজতে থাকা অবস্থায় বা যারা হেফাজতের সাথে সরাসরি দায়ী ছিলেন, তিনি বা তারা যদি ভিন্ন না হোন, তাদেরকে হেফাজতে ব্যর্থতার জন্য অনধিক ১০ বছর কিন্তু অন্যুন ৫ বছর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হবেন এবং অতিরিক্ত অন্যুন ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ডেও দন্ডিত হবেন।










প্রশ্ন-৫ দস্যুতা ও ডাকাতির সংজ্ঞা এবং পার্থক্য বর্ণনা কর। ডাকাতি করার সময় যদি কোন ব্যক্তি  খুনের অপরাধ করে তবে যে সকল ব্যক্তি ডাকাতি কাজে লিপ্ত ছিল তাদের দায় দায়িত্ব  কি হবে?-আলোচনা কর।

দস্যুতা ও ডাকাতির সংজ্ঞা:
দস্যুতা:
দস্যুতা বা জড়ননবৎু কি তা দন্ড বিধির ৩৯০ ধারায় সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে যে,প্রত্যেক দস্যুতায় হয় চুরি, না হয় বলপূর্বক সম্পত্তি আদায়ের অপরাধ থাকবে।
যে ক্ষেত্রে চুরি দস্যুতা বলে গণ্য হয়ঃ(ধারা-৩৯০)
যদি চোর চুরি করার জন্য অথবা চুরি করার সময় অথবা চোরাই মাল পরিবহনের সময় স্বেচ্ছায় কারও মৃত্যু ঘটায় অথবা মৃত্যু ঘটানোর জন্য উদ্যত হয় অথবা আঘাত করে বা আঘাত করতে উদ্যত হয় অথবা অন্যায়ভাবে রুদ্ধ করে বা রুদ্ধ করতে উদ্যত হয় অথবা তাৎক্ষনিক মুত্যুভয়,আঘাতের ভয় অথবা অন্যায়ভাবে রুদ্ধ করার ভয় দেখায় তাহলে সে চুরিকে  দস্যুতা বলে।
যেক্ষেত্রে বলপুর্বক সম্পত্তি আদায় দস্যুতা বলে গণ্য হয়ঃ
যদি অপরাধী বলপূর্বক গ্রহনের সময় হাজির থেকে কাউকে তাৎক্ষনির মুত্যুর ভয ,আঘাতের ভয় অথবা অন্যায়ভাবে আটকানোর ভয় অথবা অন্য কোন ব্যক্তির মৃত্যু, আঘাত বা রুদ্ধ করার ভয় দেখিয়ে ভীত ব্যক্তিকে তাৎক্ষনিক কোন কিছু দিতে বাধ্য করে তাকে দস্যুতা বলে।
 যেমন-এ ’বি’ কে মাটিতে ফেলে গলা চেপে ধরল এবং বি এর টাকা পয়সা এবং স্বনের আংটি ও মোবাইল ফোন কেড়ে নিলা এখানে ’এ’ চুরির অপরাধ করল । কেননা টাকা পয়সা,মোবাইল ফোন এবং স্বর্নের আংটি নেওয়ার ব্যাপারে বি এর কোন সম্মতি ছিল না। একই সঙ্গে এ দস্যুতার অপরাধ করল কেননা সে বি কে অন্যায়ভাবে আটক করেছে।
১৮৬০ সালের দন্ডবিধির ৩৯২ ধারায় দস্যুতার সাজার(চঁহরংযসবহঃ ড়ভ ৎড়ননবৎু) বিধান বলা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে যে,কোন ব্যক্তি যদি দস্যুতা সংঘটন করে তবে সে ব্যক্তি ১০ বৎসর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হবে,এবং তদুপরি অর্থদন্ডেও দন্ডিত হবে। এবং যদি সূর্যাস্ত ও সূর্যোদযের মধ্যবর্তী সময়ে রাজপথে দস্যুতা অনুষ্ঠিত হয়,তবে কারাদন্ডের মেয়াদ ১৪ বৎসর পর্যন্ত হতে পারে।
ডাকাতির সংজ্ঞা:
১৮৬০ সালের দন্ডবিধির ৩৯১ ধারায় ডাকাতির সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে যে,
যখন পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তি মিলিত ভাবে দস্যুতা সংঘটন করে বা দস্যুতা সংঘটনের চেষ্টা করে তখন তাকে ডাকাতি বলে।
সুতরাং উপরোক্ত ধারা অনুযায়ী পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তি যখন দস্যুতা করে,তখন উহা ডাকাতিতে পরিণত হয়। আবার পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তি দস্যুতা করার উদ্যোগ করলেও উহা ডাকাতি হয়। এছাড়া দস্যুতার উদ্যোগকারী এবং সাহায্যকারী ব্যক্তিদের সংখ্যা পাঁচ বা ততোধিক হলে ঐ দস্যুতাও ডাকাত বলে গন্য হবে।
দন্ড বিধি মোতাবেক ডাকাতি একটি যৌথ অপরাধ। তাই ডাকাত বলে তারাই গণ্য হবে,যারা ঐ অপরাধে অংশ গ্রহন করে অথবা ডাকাত দলের মধ্যে উপস্থিত থাকে এবং সাহায্য করে।
ডাকাতির উপাদান:
উপরোক্ত সংজ্ঞার আলোকে আমরা ডাকাতির নিম্নলিখিত উপাদানগুলি দেখতে পায়-
১) দন্ডবিধির ৩৯১ ধারা মোতাবেক বা দস্যুতা বা দস্যুতার চেষ্টা করা হয়েছিল।
২) পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তি দস্যুতা করেছির বা দস্যুতার চেষ্টা করেছিল।
৩) প্রকৃত মালিকের সম্মতি ব্যতিরেকে ডাকাতগন জোড়পূর্বক সম্পত্তি ছিনিয়ে নিয়েছিল।
৪) সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগন একত্রিত হয়ে ডাকাতি করেছিল।
৫) ডাকাতির সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে একজন বা একাধিক ব্যক্তি দস্যুতা করেছিল বা করবার চেষ্টা করেছিল।
৬) সর্বোপরি  ,ডাকাতি সংঘটনে সহায়তাকারী ব্যক্তিগণও উক্ত অপরাধে অভিযুক্ত হবে,যদিও তারা উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল এবং উহাতে কোন অংশগ্রহন করেনি।
একইভাবে,দন্ডবিধিতে ডাকাতির সংজ্ঞা ও ডাকাতি সম্পর্কীয় বিভিন্ন বিধানাবলী গৃহীত হয়েছে।

দস্যুতা ও ডাকাতির মধ্যে পার্থক্য:
দস্যুতা ও ডাকাতির মধ্যে নি¤েœাক্ত পাথক্য বিদ্যমান:
১) ধারাগত পার্থক্য:দন্ডবিধির ৩৯০ ধারায় দস্যুতার সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে দন্ডবিধির ৩৯১ ধারায় ডাকাতির সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে।
২) সংখ্যাগত পার্থক্য: দস্যুতা সংক্রান্ত অপরাধের ক্ষেত্রে অপরাধীর সংখ্যা একজন হলেও চলে। তবে অপরাধীর সংখ্যা ৫ জনের কম হবে। পক্ষান্তরে, ডাকাতি এর ক্ষেত্রে অপরাধীর সংখ্যা ৫ বা ততোধিক হবে।
৩) প্রকৃতিগত পার্থক্য:দস্যুতা হল চুরি কিংবা বলপূর্বক ছিনতাই সম্পর্কীয় অপরাধের এক বিশেষ মারাতœকরুপ। পক্ষান্তরে ডাকাতি হল ৫ বা ততোধিক ব্যক্তি কর্তৃক যৌথভাবে দস্যুতা সংগঠন করা বা করবার চেষ্টা করা।
৪) উপাদানগত পার্থক্য:
দস্যুতার ক্ষেত্রে-
একবা একাধিক ব্যক্তি তবে ৫ জনের কম যৌথভাবে অপরাধটি সংঘটিত করেছিল;
আঘাতের ভয় বা মৃত্যুভয় দেখিয়ে বা অবৈধ আটকের ভয় দেখিযেছিল;
অসাধুভাবে সম্পত্তিটি প্রদানে বাধ্য করেছিল
ডাকাতির ক্ষেত্রে -
পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তি যৌথভাবে অপরাধটি সংঘটিত করেছিল;
উক্ত দলের এক বা একাদিক ব্যক্তি দস্যুতা করেছিল বা করার চেষ্টা করেছিল;
ডাকাতদলের সদস্যরা উপস্থিত ছিল এবং এ অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করেছিল।

৫) দন্ডগত পার্থক্য:দস্যতার ক্ষেত্রে ডাকাতির চেয়ে শাস্তি লঘু হয়। দন্ডবিধির ৩৯২ ধারা অনুযায়ী দস্যুতার ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তির দশ বছর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হবে, তদুপরি অর্থদন্ডেও দন্ডিত হবে,এবং যদি রাজপথে সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের মধ্যবর্তী সময়ে দস্যুতা সংঘটিত হয়ে থাকে, তাহলে উক্ত কারাদন্ড চৌদ্দ বছর পর্যন্ত সম্প্রসারিত হতে পারে।অন্যদিকে ৩৯৫ ধারামতে যে ব্যক্তি ডাকাতি করে, সেই ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ডে বা সশ্রম কারাদন্ডে যাহার মেয়াদ দশ বছর পর্যন্ত হইতে পারে-দন্ডিত হইবে, এবং তদুপরি অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হইবে।
 ৩৯৬ ধারা অনুযায়ী খুন সহকারে ডাকাতি করলে প্রত্যেকের মৃত্যুদন্ড বা যাবজ্জীবন কারাদন্ডে বা সশ্রম কারাদন্ডে- যাহার মেয়াদ দশ বছর পর্যন্ত হইতে পারে- দন্ডিত হইবে এবং তদুপরি অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবে।
দস্যুতা ও ডাকাতি করার সময় যদি একজন খুনের অপরাধ করে তাহলে যে সকল ব্যক্তি দস্যুতা ও ডাকাতি কার্যে লিপ্ত থাকবে তাদের কি অপরাধ হবে:
দস্যুতা বা ডাকাতি করার সময় তাদের দলের মধ্যে যদি একজন খুনের অপরাধ সংঘটিত করে তাহলে দলের সকলেই ৩৯৬ ধারার বিধান অনুসারে দোষী সাব্যস্ত হবে। এধারা অনুসারে উক্ত দলের প্রত্যেকে মুত্যু দন্ডে,অথবা যাবজ্জীবন কারাদন্ডে,অথবা ১০ বৎসর পর্যন্ত সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হবে এবং তদুপরি অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হবে। তবে এ অভিযোগ প্রতিষ্ঠিত করতে হলে নিম্নোক্ত উপাদানগুলি অবশ্যই থাকতে হবে-
ক) অভিযুক্ত ব্যক্তিগন সকলেই দস্যুতা বা ডাকাতির কার্যে লিপ্ত ছিল।
খ) সেই দলের একজন খুন করেছিল, এবং   
গ) দস্যুতা বা ডাকাতি সংঘটনের সময় এ খুন করা হয়েছিল।


















প্রশ্ন-৬ অবৈধ জনতা কি? কখন ও কোন অবস্থায় একটি অবৈধ জনতায় পরিনত হয়? যখন দুইটি বিরোধী দল দাঙ্গা-হাঙ্গামা ঘটায় তখন তারা একটি অবৈধ জনতা গঠন করেছে বলা যায় যদি যায় তবে তাদের কি একসাথে বিচার করা যাবে?
 বে-আইনি সমাবেশ /বলতে কি বোঝায়? কখন একটি বে-আইনি সমাবেশের একজন সদস্যের কৃত অপরাধের দায় সমাবেশের সকল সদস্যের উপর বর্তাবে? সমাবেশ ও বে-আইনি সমাবেশের একটি করে উদাহরণ দাও?

ভূমিকা:
বে আইনি সমাবেশ (টহষধভিঁষ ধংংবসনষু) দন্ড বিধির একটি গুরুতর অপরাধ হিসাবে অভিহিত হয়েছে। এই অপরাধের ফলে জনস্বার্থ বিঘিœত হতে পারে বিধায় অত্র আইনেরর ১৪১ ধারায় এই সম্পর্কীয় বিধানাবলী গৃহীত হয়েছে এবং জনস্বার্থের পরিপন্থি অবৈধ জমায়েত প্রতিরোধ করে জনস্বার্থ সংরক্ষণ করাই এ ধারার মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। তাই জধঃধহষধষ এবং উযরৎধলষধষ এর ভাষায় আমরা বলতে পারি যে,”ঞযব ঁহফবৎষুরহম ঢ়ৎরহপরঢ়ষব ড়ভ ংবপঃরড়হ ১৪১ রং ঃযধঃ ষধি ফরংপড়ঁৎধমবং ঃঁসঁঃড়ঁং ধংংবসনষধমব ড়ভ সবহ ঃড় ঢ়ৎবংবৎাব ঃযব ঢ়ঁনষরপ ঢ়বধপব”
দন্ড বিধির ১৪১ ধারা অনুসারে ৫ বা ততোধিক লোক যখন উক্ত ধারায় উল্লেখিত উদ্দেশ্যে সমবেত বা জমায়েত হয় ,তখন ঐ জমায়েতকে বে-আইনি সমাবেশ (টহষধভিঁষ ধংংবসনষু) বলা হয়।
বে আইনি সমাবেশ (টহষধভিঁষ ধংংবসনষু) : দন্ড বিধি (১৪১)
পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তি জনসাধারণের কোন স্থানে একত্রিত হয়ে রাস্ট্র বিরোধী বা অন্য কোন অসত উদ্দেশ্যে সমাবেশ হয়ে শান্তি ভংগের কোন কাজ করে তবে তাকে বেআইনি সমাবেশ বলে। দ:বি:- ১৪১.
বেআইনি সমাবেশের উদ্দেশ্য নিন্মোক্ত এক বা একাধিক হয়:
১) সরকার বা সরকারী কর্মচারীকে আইনসংগত কাজে বাধা দেয়া বা ভীতি প্রদর্শন করা।
২) কোন আদালতের পরোয়ানা কার্যকরীর কাজে বাধা দেয়া।
৩) কোন অপরাধ জনক কার্য করা এবং অনধিকার প্রবেশ করা।
৪) অপরাধজনক বল প্রয়োগ করে সম্পত্তি দখল করা বা কোন ব্যক্তিকে আইনগত অধিকার হতে বঞ্চিত করা।
৫) অপরাধমূলক বলপ্রয়োগ বা অপরাধমূলক বলপ্রয়োগের হুমকি প্রদর্শন করে কোনো ব্যক্তিকে সে আইনত বাধ্য নয় এমন একটি কার্য সম্পাদনে বাধ্য করা অথবা এমন কোনো কাজ সম্পাদন থেকে বিরত রাখা, যেটি সম্পাদন করতে তিনি আইনত বাধ্য।
( দন্ডবিধির ১৪১ ধারা )
দন্ডবিধির ১৪১ ধারা অনুসারে পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির সমাবেশ 'বেআইনি সমাবেশ' হিসেবে গণ্য হবে যদি ওই সমাবেশ-গঠনকারী ব্যক্তিদের উদ্দেশ্য পরবর্তীতে উল্লিখিত কোনো একটি হয়-
প্রথমত: অপরাধমূলক শক্তিপ্রয়োগ বা এ ধরনের শক্তিপ্রয়োগের ভান করে সরকার বা আইন-পরিষদ বা কোনো সরকারি কর্মচারীকে তার আইনানুগ ক্ষমতাপ্রয়োগের ক্ষেত্রে ভীতি প্রদর্শন করা;
দ্বিতীয়ত: কোনো আইন বা আইনানুগ প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে বাধা প্রদান করা;
তৃতীয়ত: কোনো দুষ্কর্ম বা অপকর্মমূলক অনধিকার প্রবেশ বা অন্য কোনো অপরাধ সংঘটন করা;
 চতুর্থত : কোনো ব্যক্তির প্রতি অপরাধমূলক বলপ্রয়োগ বা অপরাধমূলক বলপ্রয়োগের ভান করে কোনো সম্পত্তি অধিকার বা অর্জন করা অথবা কোনো ব্যক্তিকে রাস্তার অধিকার বা পানির ব্যবহার বা তার দখল বা অধিকারভুক্ত অন্য কোনো অশরীরী অধিকার থেকে বঞ্চিত করা,
পঞ্চমত: অপরাধমূলক বলপ্রয়োগ বা অপরাধমূলক বলপ্রয়োগের ভান করে কোনো ব্যক্তিকে এমন কোনো কাজ সম্পাদন থেকে বিরত রাখা, যেটি সম্পাদন করতে তিনি আইনত বাধ্য নন।
বেআইনি সমাবেশের পঞ্চম এ উপাদানটি বর্তমানে বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
আইন বলছে, যে সমাবেশ মিলিত হওয়ার সময় বেআইনি ছিল না, তা পরবর্তী সময়ে বেআইনি সমাবেশে পরিণত হতে পারে। অর্থাৎ শুরুতে সমাবেশটি হয়তো শান্তিপূর্ণ ছিল, কিন্তু পরে সেটি যদি অপরাধমূলক কর্মকান্ডে লিপ্ত হয় সে ক্ষেত্রে সেটি 'বেআইনি সমাবেশ' হিসেবে গণ্য হবে।
১৪২ ধারা অনুসারে যদি কোনো ব্যক্তি ভালোভাবে জেনেশুনে স্বেচ্ছাকৃতভাবে বেআইনি সমাবেশে যোগদান করেন বা উপস্থিত থাকেন, সে ক্ষেত্রে তাকে বেআইনি সমাবেশের সদস্য ধরা হবে।
১৪৩ ধারা অনুসারে বেআইনি সমাবেশে অংশ নেয়া প্রত্যেক সদস্যই সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদন্ড কিংবা অর্থদন্ড কিংবা উভয়দন্ডে দন্ডিত হবে।
ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৭ ধারা অনুসারে, কোনো বেআইনি সমাবেশ অথবা সর্বসাধারণের শান্তি বিনষ্ট হওয়ার কারণ হতে পারে এরকম পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত কোনো সমাবেশের প্রতি কোনো ম্যাজিস্ট্রেট বা কোনো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছত্রভঙ্গ হওয়ার আদেশ দিতে পারেন। ১২৭ ধারায় প্রদত্ত নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কেউ বেআইনি সমাবেশ করলে বা তাতে অংশ নিলে তা দন্ডবিধির ১৪৫ ও ১৫১ ধারা অনুসারে শাস্তিযোগ্য হবে।
১৪৫ ধারা অনুসারে কোন বেআইনি সমাবেশকে আইন নির্দেশিত পদ্ধতিতে ছত্রভঙ্গ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা সত্বেও কোন ব্যক্তি উক্ত বেআইনি সমাবেশে যোগদান করলে বা উক্ত বেআইনি সমাবেশে থাকলে দুই বৎসর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদন্ডে অথবা উভয়বিধ দন্ডেই দন্ডিত করা যাবে।
১৫১ ধারা অনুসারে পাঁচ বা ততোধিক সংখ্যক ব্যক্তির যে সমাবেশ শান্তি ভঙ্গ করতে পারে বলে সম্ভাবনা থাকে, তাকে ছত্রভঙ্গ করার নির্দেশ প্রদত্ত হওয়ার পর কোন ব্যক্তি জ্ঞাতসারে উহাতে যোগদান করলে বা শরীক হয়ে থাকলে ছয় মাস পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদন্ডে বা অর্থদন্ডে অথবা উভয়বিধ দন্ডেই দন্ডিত হবে।
যদি সমাবেশটি ১৪১ ধারার অর্থ অনুযায়ী একটি বেআইনি সমাবেশ হয়, তবে অপরাধী ১৪৫ ধারা মতে দন্ডিত হবে।
বেআইনি সমাবেশের উপাদান:
বেআইনি সমাবেশে নিম্নলিখিত উপাদানগুলি পরিলক্ষিত হয়-
ক) বে আইনি সমাবেশ হতে হলে পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির অস্তিত্ব থাকা চাই।
খ) একইভাবে ঐরুপ বেআইনি সমাবেশ সৃষ্টির জন্য পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির একটি সাধারণ লক্ষ্য/উদ্দেশ্য থাকতে হবে।
গ) সংশ্লিষ্ট সমাবেশের আসামীগণকে স্বজ্ঞানে ও স্বইচ্ছায় ঐ সমাবেশের সদস্য হিসাবে যোগদান করতে হবে।
ঘ) সর্বোপরি, উক্ত সমাবেশের সদস্যগনকে বাংলাদেশের দন্ডবিধির ১৪১ ধারায় উল্লেখিত অপরাধগুলির যেকোন অপরাধে জড়িত হতে হবে।
উল্লেখিত আলোচনা হতে একথা বলা যায় যে, যে সমাবেশ প্রথমে বেআইনি ছিল না তা পরে ইহার সদস্যদের ক্রিয়াকলাপের দ্বারা বে আইনি সমাবেশে রুপান্তরিত হতে পারে। একইভাবে কোন পূর্ব পরিকল্পনা ব্যতীত একটি বৈধ জমায়েত হঠাৎ বেআইনি জমায়েতে পরিণত হতে পারে।
    পাঁচ বা ততোদিক ব্যক্তি
    অভিন্ন উদ্দেশ্য
    কাজটা সংঘটিত হতে পারে ,নাও হতে পারে এক সঙ্গে থাকতে হবে।
সমাবেশ ও বে-আইনি সমাবেশের উদাহরণ:
কোন স্থানে পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির জমায়েতকে সমাবেশ বলা হয়। এই সমাবেশ দুই ধরণের হইতে পারে যেমন: বৈধ সমাবেশ এবং বেআইননি সমাবেশ । নি¤েœ উদাহরণ প্রদান করা হইল:
বৈধ সমাবেশের একটি উদাহরণ:একটি কলেজে শিক্ষা সেমিনাওে অংশ গ্রহনের জন্য ৭০ জন ছাত্র সমেবেত হইল,ইহা একটি বৈধ সমাবেশ।
বেআইননি সমাবেশের একটি উদাহরণ:
সঙ্গত কারণ ছাড়া জনগনের যাতায়াতে বাধা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কোন ব্যস্ত রাস্তায় পাঁচজনের অধিক লোক সমেবেত হইল, ইহা একটি বে আইনি সমাবেশ।
উপরোক্তভাবে সমাবেশ ও বেআইনি সমাবেশের উদাহরণ দেওয়া যায়।
উপসংহার:
অবৈধ সমাবেশের সংজ্ঞা,উপাদান ও কোন কোন অবস্থায় একটি সমাবেশ বেআইনি সমাবেশে পরিণত হয় উহা আলোচনা করে উপসংহারে একথা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তি সাধারণ উদ্দেশ্য সাধন কল্পে দন্ডবিধির ১৪১ ধারায় উল্লেখিত যে কোন একটি অপরাধ সংঘঠিত করেেত উহা অবৈধ জমায়েতে পরিণত হয়। এ সমাবেশ প্রাথমিকভাবে বৈধ হয়েও পরবর্তী সময়ে হঠাৎ অবৈধ সমাবেশে পরিণত হতে পারে।
প্রশ্ন-৭
মানহানি কি? মানহানি অপরাধের উপাদানগুরো আলোচনা কর।এর ব্যতিক্রমগুলি কিকি? নিচের উদাহরণে ‘ক’ কি অপরাধ করেছে ব্যাখ্যা কর। ’ক’ ’গ’এর একটি ছবি আঁকে যাতে বিশ্বাস করানো হয়েছে যে সে ’খ’ এর ঘড়ি চুরি করে নিয়ে পালাচ্ছে।”
মানহানি কি:
মানহানি এমন এক ধরনের অপরাধ, যেটি ফৌজদারি ও দেওয়ানি উভয় প্রকারেরই হতে পারে। ফৌজদারি আদালতে মানহানি মামলা হওয়ার পর অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি দোষী প্রমাণিত হয় তাহলে, সে কারা কিংবা অর্থদন্ডে দন্ডিত হন।
পক্ষান্তরে, দেওয়ানি আদালতে মামলা হলে এবং সেই মামলায় বাদি জয়ী হলে বিবাদী থেকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে অর্থ আদায় করতে পারেন।
১৮৬০ সালের দন্ডবিধির ৪৯৯ ধারায় মানহানির সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি মানহানির উদ্দেশ্যে বা মানহানিকর জেনে বা পাঠের জন্য উদ্দেশ্যমূলক শব্দাবলি বা চিহ্নাদি বা দৃশ্যমান কল্পস্মৃতির সাহায্যে কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে এমনভাবে কোনো নিন্দাবাদ প্রণয়ন বা প্রকাশ করে যে, সেই নিন্দাবাদ উক্ত ব্যক্তির সুনাম নষ্ট করবে, সেই ব্যক্তি কিছু ব্যতিক্রম অবস্থা ছাড়া উক্ত ব্যক্তির মানহানি করেছে বলে ধরা হবে।
দন্ডবিধির ৫০০ ধারায় মানহানির শাস্তি বর্ণনায় বলা হয়েছে, এই অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে দুই বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড বা অর্থদন্ড বা উভয়বিধ দন্ডে দন্ডিত হতে পারে।
মানহানি অপরাধের উপাদান:
১৮৬০ সালের দন্ডবিধির ৪৯৯ ধারার বিধান অনুযায়ী মানহানি সংক্রান্ত আইনকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে যে সকর উপাদানের অস্তিত্ব থাকা বিশেষ ভাবেই অপরিহার্য তা নি¤œরুপ-
১) কোন ব্যক্তির খ্যাতি বা সুনাম নষ্ট করার উদ্দেশ্যে কোন ঘটনা আরোপ করতে হবে বা প্রকাশ করতে হবে।
২) কোন ব্যক্তির খ্যাতি বা সুনাম নষ্ট করতে হলে অপরাধীকে ঐ ব্যক্তির উদ্দেশ্যে কোন কিছু উচ্চারিত শব্দাবলী বা চিহ্নাদি প্রকাশ করতে হবে।
৩) এরুপ খ্যাতি বা নষ্ট করার পেছনে অপরাধীকে ঐ ব্যক্তির ক্ষতিকর উদ্দেশ্য থাকতে হবে।
৪) অপরাধীকে বিশ্বাস করতে হবে এরুপ মানহানিকর ঘটনা আরোপ করে ঐ ব্যক্তির খ্যাতি বা সুনাম নষ্ট হবার আশংকা আছে।
আতœপক্ষ সমর্থন/ব্যতিক্রম সমূহ:
মানহানি এমন এক ধরনের ধরনের অপরাধ, যেটি ফৌজদারি ও দেওয়ানি উভয় প্রকারের হতে পারে। ফৌজদারি আদালতে মানহানি মামলা হলে অভিযুক্ত ব্যক্তি কারাদন্ড কিংবা অর্থদন্ডে দন্ডি হন। পক্ষান্তরে দেওয়ানি আদালতে মামলা হলে এবং সেই মামলায় বাদি জয়ী হলে বিবাদী থেকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে অর্থ আদায় করতে পারেন।
বাংলাদেশের দন্ডবিধির ৪৯৯ ধারা অনুসারে যে ব্যক্তি মানহানির উদ্দেশ্যে বা মানহানিকর জেনে বা পাঠের জন্য উদ্দেশ্যমূলক শব্দাবলি বা চিহ্নাদি বা দৃশ্যমান কল্পস্মৃতির সাহায্যে কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে এমনভাবে কোনো নিন্দাবাদ প্রণয়ন বা প্রকাশ করে যে, সেই নিন্দাবাদ উক্ত ব্যক্তির সুনাম নষ্ট করবে, সেই ব্যক্তি কিছু ব্যতিক্রম অবস্থা ছাড়া উক্ত ব্যক্তির মানহানি করেছে বলে ধরা হবে।
আইনে এমন কিছু ব্যতিক্রম অবস্থা বর্ণনা করা হয়েছে, যখন কোনো ব্যক্তি অন্য ব্যক্তির নামে মানহানিকর কিছু বললে, লিখলে বা প্রচার করলেও দন্ডবিধির ৪৯৯ ধারার অধীনে মানহানির অভিযোগে অভিযুক্ত হতে হবে না। যেমন-
(১) জনগণের কল্যাণার্থে কারো প্রতি সত্য দোষারোপ করলে, তাতে মানহানি হবে না।
(২) জনগণের প্রতি সরকারি কর্মচারীর আচরণ সম্পর্কে সৎ বিশ্বাসে অভিমত প্রকাশ করলে তা মানহানির শামিল হবে না।
(৩) আদালতসমূহের কার্যবিবরণী প্রতিবেদন প্রকাশ করা মানহানির অন্তর্ভুক্ত হবে না।
(৪) যে কোনো জনসমস্যা সম্পর্কে কোনো ব্যক্তির আচরণ সম্পর্কে সৎবিশ্বাসে অভিমত প্রকাশ করা মানহানির শামিল নয়।
(৫) আদালতে সিদ্ধান্তকৃত মামলার দোষ, গুণ বা সাক্ষীদের সম্পর্কে বা অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আচরণ সম্পর্কে অভিমত মানহানির পর্যায়ে পড়বে না।
(৬) গণঅনুষ্ঠানের অনুষ্ঠানাবলি সম্পর্কে কোনো মতামত প্রদান মানহানি নয়।
(৭) কর্তৃত্বসম্পন্ন ব্যক্তির কাছে সৎবিশ্বাসে কারো সম্পর্কে অভিযোগ করা হলে সেটিও মানহানি হবে না। যেমন- পুলিশের কাছে কারো ব্যাপারে সৎ বিশ্বাসে অভিযোগ।
 (৮) কোনো ব্যক্তি কর্তৃক তার বা অন্য কারো স্বার্থ রক্ষার্থে দোষারোপ করা মানহানি নয়।
(৯) গণকল্যাণার্থে সতর্কতা প্রদানের উদ্দেশ্যে কারো সম্পর্কে কিছু বলা হলে, সেটিও মানহানি হবে না।
বাংলাদেশের দন্ডবিধির ৫০০ ধারায় মানহানির শাস্তি বর্ণনায় বলা হয়েছে, এই অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে দুই বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড বা অর্থদন্ড বা উভয়বিধ দন্ড হতে পারে।
৫০১ ও ৫০২ ধারা অনুসারে, মানহানিকর বলে পরিচিত বিষয় মুদ্রণ বা খোদাইকরণ ও তা বিক্রয় সম্পর্কে এবং এর শাস্তি বর্ণিত হয়েছে।
’ক’ ’গ’ এর একটি ছবি আঁকে যাতে বিশ্বাস করানো হয়েছে যে সে ’খ’ এর ঘড়ি চুরি করে নিয়ে পালাচ্ছে। ১০ ব্যতিক্রমের কোন একটির মধ্যে তা না পড়লে এটা মানহানি হিসেবে গণ্য হবে।
প্রশ্ন-৮ সংজ্ঞা দাও এবং পার্থক্য নির্ণয় কর:
ক) সাধারণ ইচ্ছা এবং সাধারণ উদ্দেশ্য:অভিপ্রায় ও উদ্দেশ্য প্রায় সমার্থক মনে হলেও এদের মধ্যে যতেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। কিছু অভূক্ত লোকদেও খাওয়ানোর জন্য যদি কেউ  একটি হোটেলের খাবার চুরি করে সেক্ষেত্রে অভূক্ত লোকদের খাওয়ানো তার উদ্দেশ্য কিন্তু খাবার চুরি করা তার অভিপ্রায়। উদ্দেশ্য যতই মহৎ হোক-না কেন কাজটা আইনে নিষিদ্ধ। তাই অন্যায় কাজ অর্থাৎ অন্যায় অভিপ্রায়ের জন্য তাকে দায়ি হতে হবে।
সাধারণ ইচ্ছা:
যদি কোন বেআইনি সমাবেশে যোগদানকারী ব্যক্তি দ্বারা উক্ত বে-আইনি সমাবেশে সাধারণ উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কোন অপরাধ অনুষ্ঠিত হয় ঐ অপরাধটি সম্পর্কে বে-আইনি সমাবেশে যোগদানকারী প্রত্যেক ব্যক্তি জানত তাহলে বে-আইনি সমাবেশে যোগদানকারী প্রত্যেক ব্যক্তি অপরাধে অপরাধি হবে।ধারা-১৪১
সাধারণ উদ্দেশ্য:যখন কিছু লোক একত্রিত হয়ে তাদের সকলের ইচ্ছানুযায়ী অপরাধমূলক কোন কাজ সম্পাদন করে, তখন প্রত্যেকেই উক্ত কাজের জন্য একইরুপে দায়ী হবেন, যেন ঐ অপরাধ কর্মটি তিনি একাই করেছেন।ধারা-৩৪
সাধারণ অভিপ্রায় ও সাধারণ উদ্দেশ্যের মধ্যে পার্থক্য নি¤œরুপ:

১) দন্ডবিধির ৩৪ ধারায় বর্ণিত সাধারণ অভিপ্রায় দুই বা ততোধিক ব্যক্তি উপর প্রযোজ্য হয়। কিন্তু ১৪৯ ধারায় বর্ণিত সাধারণ উদ্দেশ্য পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়।
২) ঈড়সসড়হ ওহঃবহঃরড়হ এর ক্ষেত্রে অপরাধিগণ প্রত্যেকে সমগ্র অপরাধটির জন্য যৌথভাবে দায়ী হয়। পক্ষান্তরে, ঈড়সসড়হ ঙনলবপঃ  এর ক্ষেত্রে অবৈধ সমাবেশের সদস্য গণ যদি ঈড়সসড়হ ঙনলবপঃ  এর বাইরে কোন অপরাধ সংঘটিত করে তবে সে কারণে তারা ব্যক্তিগতভাবে দায়ী হয় না।
৩) ঈড়সসড়হ ওহঃবহঃরড়হ এর ক্ষেত্রে অপরাধ সংঘটনের সময় উপস্থিত না থেকেও সমান অপরাধি বলে ধরে নেওয়া হয়। পক্ষান্তরে, ঈড়সসড়হ ঙনলবপঃ  এর ক্ষেত্রে যে ব্যক্তি প্রত্যক্ষভাবে কোন অপরাধ করে না বা অপরাধে সহায়তা করে না সে ব্যক্তিকে শুধুমাত্র কেবল বিশেষ অবস্থা ছাড়া দোষী সাব্যস্থ করা যায় না।
৪)
খ) অবৈধ বাধাদান এবং বেআইনি আটক:
অবৈধ বাধাদান ও বেআইনি আটককের মধ্যে নি¤œলিখিত পার্থক্যগুলি পরিলক্ষিত হয:
দন্ডবিধির ৩৩৯ ধারা মতে,কোন ব্যক্তি যদি অপর কোন ব্যক্তিকে ইচ্ছাপূর্বক এমনভাবে বাধা প্রদান করে যার ফলে উক্ত ব্যক্তির যাবার পথ বন্ধ হয় তাহলে বলা যায় তিনি উক্ত ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে বাধা প্রদান করেছেন।
ব্যতিক্রম: তবে কেই যদি সরল বিশ্বাসে নিজের অধিকার আছে জেনে কাউকে কোন পথাধিকার বা পানির পথ ব্যবহারে বাধা দেয় তাহলে তা অন্যায়ভাবে বাধাদানের অপরাধ বলে গণ্য হবে না।
যেমন: অযদি ই কে তার বাড়ি হতে বের হতে বাধা দেয় তাহলে অ অন্যায়ভাবে ই কে বাধা প্রদানের অপরাধ করল।
সাজা:অন্যায়ভাবে বাধা প্রদানের জন্য পিনাল কোডের ৩৪১ ধারা বিধান অনুসারে একমাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হতে পারেন অথবা ৫০০ টাকা পর্যন্ত যে কোন পরিমান অর্থ দন্ডে দন্ডিত হতে পারেন অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারেন।
৩৪০ ধারা মতে,কেউ যদি কাউকে চর্তুসীমানার বাইরে যেতে না দিয়ে আটক রাখে তাহলে বলা যায় তিনি সেই ব্যক্তিকে অবৈধ আটক বা অবরুদ্ধ করে রেখেছেন।
যেমন: অযদি ই কে কোন ঘরে ঢুকিয়ে তালা দিয়ে রাখে বা কোন বাড়ীর মধ্যে ঢুকিয়ে বাড়ীর সদর দরজায় তালা দিয়ে তার চলাফেরা বাড়রি চার দেয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখে তাহলে অঅন্যায়ভাবে আটকের অপরাধ করেছে।
সাজা:
এ ধরনের অপরাধী ব্যক্তি পিনাল কোডের ৩৪২ ধারার বিধান অনুসারে যে কোন বর্ণনার ১ বছর পর্যন্ত কারাদন্ডে অথবা ১০০০ টাকা পর্যন্ত যে কোন পরিমান অর্থদন্ডে অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।
ধারা ৩৪৩: কোন ব্যক্তি যদি কাউকে ৩ দিন অথবা উহার বেশী দিনের জন্য অবৈধ আটক করে রাখে তবে উহার সাজা হবে ২ বছর পর্যন্ত যেকোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদন্ড অথবা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।
ধারা ৩৪৪: ১০ দিন অথবা ১০ দিনের বেশি আটক রাখলে ৩ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড এবং অর্থ দন্ডে দন্ডিত হবেন।
গ) হরণ এবং অপহরণ:
অপহরন:পিনাল কোড,১৮৬০এর ৩৬০ ধারায় বাংলাদেশ থেকে অপহরনের কথা বলা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে যে, কেউ যদি কোন ব্যক্তিকে তার সম্মতি ব্যতিরেকে বা তার আইনানুগ অভিভাবকের সম্মতি ব্যতীত বাংলাদেশের আঞ্চলিক সীমার বাহিরে নিয়ে যায় তাহলে বলা যায় তিনি সেই ব্যক্তিকে বাংলাদেশ থেকে অপহরণ করেছেন।
উক্ত আইনের ৩৬১ ধারায় বলা হয়েছে যে, কেউ যদি ১৪ বছরের কম বয়সী কোন নাবালিকাকে অথবা ১৬ বছরের কম বয়সী কোন নাবালককে অথবা অপ্রকৃতিস্থ ব্যক্তিকে তার আইনানুগ অভিভাবকের সম্মতি ছাড়াই অভিভাবকের রক্ষনাবেক্ষন হতে নিয়ে যায় তাহলে বলা যায় তিনি সেই ব্যক্তিকে অপহরণ করেছেন।
অপবাহন:পিনালকোড,১৮৬০এর ৩৬২ ধারায় অপবাহন সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, কোন ব্যক্তি যদি অপর কোন ব্যক্তি কে স্থানান্তর করার ক্ষেত্রে শক্তি প্রযোগে বাধ্য করে অথবা জোড়পূর্বক বাধ্য করে অথবা অন্য কোন প্রতারণামূলক উপায়ে প্রলুব্ধ করে তাহলে বলা যায় তিনি উক্ত ব্যক্তিকে অপবাহন করেছেন।
সাজা:৩৬৩ ধারা মতে অপহরনে বা অপবাহনে দোষী সাব্যস্থ ব্যক্তির সাজা হবে ৭ বছর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রমবা বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং সেই সাথে অর্থদন্ড।
তবে,৩৬৪ ধারামতে ,মেরে ফলার জন্য অপহরন বা অপবাহন করে তাহলে তার সাজা হবে যাবজ্জীবন কারাদন্ড অথবা ১০ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদন্ড এবং সেই সাথে জরিমানা হবে।
ঘ) ধর্ষণ এবং ব্যভিচার:
৩৭৫ ধারা:এই ধারা অনুসারে ধর্ষন বলতে নি¤েœাক্ত পাঁচ ধরনের ড়ভভবহপব কে বুঝাবে। যথা:
১)স্ত্রীলোকটির ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌন সঙ্গম করলে;
২) স্ত্রীলোকটির সম্মতি  ব্যতিরেকে যৌনসঙ্গম করলে;
৩) স্ত্রীলোকটিকে মৃত্যু বা জখমের ভয় প্রদর্শন কওে সম্মতি আদায় কওে যৌনসঙ্গম করলে;
৪) যেক্ষেত্রে স্ত্রীলোকটি বিশ্বাস কওে যে পুরুষলোকটি তার স্বামী অথচ পুরুষটি জানে যে সে ঐ স্ত্রীলোকটির স্বামী নহে,এরপরও স্ত্রীলোকটির সাথে যৌনসঙ্গম করলে।
৫) স্ত্রীলোকটির সম্মতি থাকুক বা না থাকুক যদি তা বয়স ১৪ বছরের কম হয়।

ব্যভিচার: বিধির ধারা ৪৯৭ ধারা মতে,কোন ব্যক্তি যদি অপর কোন ব্যক্তির স্ত্রী অথবা যাকে সে অন্য কোন ব্যক্তির স্ত্রী বলে জানে বা তার অনুরুপ বিশ্বাস করার কারণ আছে এমন কোন ব্যক্তির সাথে উক্ত অন্য ব্যক্তির সম্মতি ও সমর্থন ছাড়া এই রুপ যৌন সঙ্গম করে যা নারী ধর্ষনের সামিল নয় তবে সে ব্যক্তি ব্যভিচারর অপরাধের জন্য দায়ী হবে।
ধর্ষন দন্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় বর্ণিত আছে অপরদিকে ব্যভিচার দন্ডবিধির ৪৯৭ ধারায় বর্ণিত আছে
ধর্ষণকে ইংরেজীতে রেপ বলে অপর দিকে ব্যভিচারকে ইংরেজিতে ঋড়ৎহরপধঃরড়হ বলে।
ধর্ষণের অপরাধে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে দন্ড বিধির ৩৭৬ ধারা মতে, ধর্ষনের অপরাধে দোষী সাব্যস্থ ব্যক্তির সাজা হবে, যাবজ্জীবন কারাদন্ড অথবা ১০ বছর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং সেই সাথে জরিমানা। ধর্ষণের অপরাধে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০০৩ এর ৯(১) ধারা অনুযায়ী মৃত্যুদন্ড বা যাবৎজ্জীবন অপর দিকে ব্যভিচার অপরাধের জন্য কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে ৭ বৎসর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের কারাদন্ডে দন্ডিত করা যাবে।
ধর্ষনের মামলা ধর্ষীতা নিজে অথবা তার অতœীয় বা অন্য কেউ  করতে পারে। অপরদিকে ব্যভিচারের ক্ষেত্রে ঐস্ত্রীর স্বামী ছাড়া অন্য কেউ অভিযোগ দায়ের করতে পারে না।
ঙ) চুরি এবং ছিনতাই
বলপূর্বক আদায়/ছিনতাই এবং চুরির মধ্যে পার্থক্য:
চুরি ও বলপূর্বক আদায়ের মাঝে পার্থক্য নিম্নরূপে করা যায়-
১)সংজ্ঞাগত পার্থক্য:দন্ডবিধির ৩৭৮ ধারার বিধান অনুসারে, যদি কোন ব্যক্তি কোন অস্থাবর সম্পত্তি অসাধুভাবে গ্রহণের উদ্দেশ্যে, দখলে থাকা ব্যক্তির সম্মতি ছাড়া উক্ত সম্পত্তির স্থানান্তর করে তবে তা চুরি বলে গণ্য হবে। অন্যদিকে, দন্ডবিধির ৩৮৩ ধারায় বলা হয়েছে যে, কোন ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে অপর কোন ব্যক্তিকে মৃত্যুর ভয়,আঘাতের ভয় বা পথরুদ্ধ করার ভয় দেখিয়ে কোন কিছু দিতে বাধ্য করে তাকে বল পূর্বক আদায় বলে।
২) ধারাগত পার্থক্য: দন্ডবিধির ৩৭৮ ধারায় চুরির সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে । অন্যদিকে, ৩৮৩ ধারায় বলপূর্বক আদায়ের সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে ।
৩) স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রে:শুধুমাত্র অস্থাবর সম্পত্তি চুরি করা যায় । পক্ষান্তরে, স্থাবর বা অস্থাবর  যাই হোক না কেন তা বলপূর্বক আদায় করা যায।
৪)ভয়ের সম্পর্ক: চুরির ক্ষেত্রে কোন শক্তি প্রয়োগ করা হয় না । পক্ষান্তরে, বলপূর্বক আদায়ে ক্ষতির ভয় সৃষ্টির জন্য শক্তি প্রয়োগ করা হয়ে থাকে ।
৫) ব্যক্তির ক্ষেত্রে:চুরি কেবল চোরই করতে পারে । কিন্তু বলপূর্বক গ্রহন অপরাধি নিজে বা অন্যের মাধ্যমে করতে পারে।
৬) সাজা সম্পর্কে:চুরির সাজা পিনাল কোর্ডেও ৩৭৯ ধারা মতে, ৩ বছর পর্যন্ত যেকোন বর্ননার কারাবাস অথবা জরিমানা অথবা উভয় প্রকার সাজা হতে পারে। অপর দিকে,বলপূর্বক আদাযের সাজা পিনল কোডের ৩৮৪ ধারা মতে, ৩ বছর পর্যন্ত যে কোন বর্ননার কারাবাস অতবা জরিমানা অথবা উভয় প্রকার সাজা হতে পারে।

চ) অসাধুভাবে সম্পত্তি আতœসাৎ এবং অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গ:
দন্ডবিধির ৪০৩ ধারা মতে, কোন ব্যক্তি যদি অসৎভাবে কোন অস্থাবর সম্পত্তি আতœসাৎ করে অথবা উহা তা নিজের ব্যবহারে প্রয়োগ করে,তবে উক্ত ব্যক্তি দুই বছর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদেও সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদন্ডে অথবা অথৃদন্ডে অথবা উভয়বিধ দন্ডেই দন্ডিত হবে।
দন্ডবিধির ৪০৫ ধারা মতে,কোন ব্যক্তি যদি কোনভাবে কোন সম্পত্তি পরিচালনের দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে,অসাধুভাবে সে সম্পত্তি আতœসাৎ করে বা নিজের ব্যবহাওে প্রয়োগ করেঅথবা অসৎভাবে ঐ সম্পত্তি ব্যবহার কওে কিংবা হস্তান্তর কওে এবং এরুপ সম্পত্তি পরিচালনা সম্পকেৃ আইনের কোন নির্দেশ অমান্য কওে কিংবা অনুরুপ পরিচালনা সম্পর্কে আইনানুগ চুক্তি ভঙ্গ কওে অসৎভাবে সম্পত্তিটি ব্যবহার কওে বা অন্য ব্যক্তিকে তা ব্যবহার করার অনুমতি দয়ে তাহলে সে ব্যক্তি অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করেছে বলে গন্য হবে।
সাজা: কোন ব্যক্তি যদি অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে ,তবে সে ব্যক্তি ৩ বছর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদন্ডে অথবা অর্থদন্ডে অথবা উভয়বিধ দন্ডে দন্ডিত হবে।

ছ) অনধিকার গৃহ প্রবেশ এবং সিঁদ কেটে গৃহ প্রবেশ।
দন্ডবিধির ৪৪২ ধারা মতে, কোন ব্যক্তি যদি আবাসস্থল হিসাবে ব্যবহৃত কোন গৃহে,তাবুতেবা জলযানে অথবা উপসনালয় হিসাবেব্যবহৃত কোন গৃহে অতবা সম্পত্তি হেফাজতের স্থান হিসেবে ব্যবহৃত কোন গৃহে প্রবেশ করে বা সেখানে অবস্থান করে অপরাধমূলক অনধিকার প্রবেশ সংঘটন করে,তবে উক্ত ব্যক্তি অনধিকার গ্রহ প্রবেশ অপরাধটি করেছে বলে গন্য হয।
সাজা:৪৪৮ ধারা মতে,কোন ব্যক্তি যদি গৃহে অনধিকার প্রবেশ কওে ,তবে উক্ত ব্যক্তি ১ বছর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদেও সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদন্ডে অতবা এক হাজার টাকা পযৃন্ত যে কোন পরিমান ার্থ দন্ডে অথবা উভয়বিধদন্ডে দন্ডিত হবে।
দন্ডবিধির ৪৪৫ ধারা মতে, কোন ব্যক্তি যদি গৃহে বা গৃহের কোন অংশে অনধিকার প্রবেশ এবং অনুরুপ অনধিকার প্রবেশ নি¤œবর্নিত ৬টি উপায়ের যে কোন উপায়ে কওে ,অতবা কোন অপরাদ অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে গৃহ বা গৃহের কোন াংশে থাকার পর কিংবা গৃহে বা গৃহের কোন অংশে অপরাধটি করার পর, নি¤েœাক্ত ছয়টি উপাযের যে কোন উপায়ে সে গৃহ বা গৃহের কোন অঙশ হতে নির্ঘমন কওে, তবে উক্ত ব্যক্তি সিধকেটে গৃহে প্রবেশ করেছে বলে গন্য হয়।

প্রশ্ন-৯ চুরির সংজ্ঞা দাও? ইহার উপাদানগুলো বর্ণনা কর। ”বলপূর্বক আদায়” এবং ”চুরির” মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় কর।
১৮৬০ সালের দন্ডবিধির ৩৭৮ ধারায় চুরির সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে যে,
যদি কেউ অসৎ উদ্দেশ্যে মালিকের সম্মতি ব্যতিরেকে কোন অস্থাবর সম্পত্তি  নিজ দখলে নেওয়ার জন্য সরায় তাহলে তিনি সেই সম্পত্তি চুরি করেছেন বলা যায়।
তবে কোন সম্পত্তি যদি এমনভাবে ভূ-পৃষ্ঠের সাথে লাগানো থাকে যা স্থাবর সম্পত্তি মত আলাদা করা যায় না তা কখন চুরির বস্তু হতে পারে না। কিন্তু ভূ-পৃষ্ঠ হতে যেই মাত্র তা আলাদা করা হলো সেই মাত্র তা চুরির বিষয়বস্তুতে পরিনত হবে।
যেমন-‘অ’অসৎ উদ্দেশ্যে মালিকের সম্মতি ব্যতিরেকে নিজ দখলে নেওয়ার জন্য  ‘ই’এর জমি থেকে কিছু গাছ কাটল। এখানে-‘অ,‘ই’ এর গাছ চুরি করল।
সাজা: অ এই চুরির অপরাধের জন্য পিনাল কোডের ৩৭৯ ধারা অনুযায়ী ৩ বছর পর্যন্ত সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদন্ড অথবা জরিমানা অথবা উভয় প্রকার সাজা হতে পারে।
পিনল কোডের ৩৭৮ হতে ৩৮২ ধারা পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকার চুরির কথা বলা হয়েছে এবং তাদের সাজাও ভিন্ন ভিন্ন্ এখন আমরা নি¤েœ বিভিন্ন প্রকার চুরির বিষয সম্পর্কে আলোচনা করব। যেমন-
১) মানব বসতি থেকে চুরি: ৩৮০ ধারা মতে , কোন ব্যক্তি যদি ভবন,তাবু অথবা সামুদ্রিক জাহাজ যেখানে মানব বসতি আছে অথবা কোন সম্পত্তি সংরক্ষণ করা হয় সেখান থেকে চুরি করে তাহলে উক্ত ব্যক্তির সাজা হবে ৭ বছর পর্যন্ত যেকোন বর্ণনার কারাবাস এবং জরিমানা।
২) চাকর বা চাকুরে কর্তৃক চুরি:৩৮১ ধরা মতে, কোন কেরানী অথবা চাকর অথবা এরকমের কেউ যদি নিয়োগ কর্তার বা মালিকের দখলীয় কোন সম্পত্তি চুরি করে তাহলে উক্ত ব্যক্তির ৭ বছর পর্যন্ত যে কোন বর্ণনার কারাবাস এবং জরিমানা হবে।
৩) মৃত্যুর ভয দেখিয়ে চুরি: ৩৮২ ধারা মতে ,কোন ব্যক্তি যদি চুরি করার পূর্বে চুরি করার জন্য অথবা চুরি করে পলায়নের জন্য অথবা চোরাই মাল নিজ দখলে রাখার জন্য কারও মৃত্যু ঘটানোর অথবা আঘাত করার অথবা আটকানোর প্রস্তুতি নেয় অথবা মৃত্যু বা আঘাত আটকানোর ভয় দেখায় তাহলে উক্ত ব্যক্তির সাজা হবে ১০ বছর পর্যন্ত সশ্রম  কারাদন্ড এবং জরিমানা।
চুরির উপাদান সমূহ:
চুরির উপাদান:
চুরির অপরাধ সংঘটনের জন্য নি¤েœাক্ত পাঁচটি উপাদান আবশ্যক। যথা-
১)অসৎ উদ্দেশ্যে:চুরির অন্যতম উপাদান হচ্ছে অসৎ উদ্দেশ্য। অসৎ উদ্দেশ্যে নিজের অপসারন করলেও তা চুরি হিসেবে গন্য হবে। যেমন- ’ক’ ’খ’ এর নিকট তার ঘড়িটি মেরামত করতে দেয়। মেরামতের তার প্রাপ্য ফাঁকি দেওয়ার জন্য তার সম্মতি ছাড়াই ঘড়িটি নিয়ে যায়। এক্ষেত্রে অসৎ উদ্দেশ্যের জন্য ’ক’ নিজের ঘরি নিজেই চুরি করেছে।
২) অস্থাবর সম্পত্তি অপসারণ: স্থাবর সম্পত্তি চুরি করা যায না। তাই একটি গাছ চুরির বিষয় বস্তু হতে পারে না যতক্ষন তা মাটির সাথে যুক্ত থাকে। কিন্তু গাছটি কাটার পর মাটি হতে আলাদা হওয়ার সাথে সাথে তা চুরির বিষয বস্তু হবে।
৩) সম্মতি ব্যতিরেকে অপসারণ: চাকর বা মালিকের নিয়োগ প্রাপ্ত যে কোন কর্মচারি যদি মালিকের সম্মতি ব্যতিরেকে অসৎ উদ্দেশ্যে কোন জিনিস নিজের দখলে রাখে তা চুরি হিসেবে গণ্য হবে।
৪) অপরের দখল হতে অপসারণ:
কোন ব্যক্তি যদি বণের কোন পশু পাখি স্বীকার করে নিজের দখলে রাখে সেটা চুরি হবে না। কিন্তু কারও পোষা প্রানী বা পশু পাখি যদি অসৎ উদ্দেশ্যে মালিকের সম্মতি ব্যতিরেকে নিজের দখলে রাখে ইহা চুরি হিসেবে গণ্য হবে।
৫) অসাধুভাবে নেবার উদ্দেশ্যে:
কোন ব্যক্তি যদি অপর কোন ব্যক্তি কোন সম্পত্তি অসাধুভাবে নেবার উদ্দেশ্যে নিজের দখলে রাখে তাহলে তা চুরি হবে। যেমন-’ক’’খ’ এর টেবিলে একটি আংটি দেখতে পেয়ে তা অসৎ উদ্দেশ্যে নিজের অধিকারে রাখে এটি চুরি হবে। কিন্তু ’ক’ যদি আবার রাস্তার মধ্যে পড়ে থাকা আংটি নিজের দখলে রাখে তা চুরি হবে না-অপরাধমূলক আতœসাৎ হবে।
উল্লেখিত সংজ্ঞা ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করলে আমরা চুরির নিম্নলিখিত উপাদান ও বৈশিষ্ট্যসমূহ দেখতে পায়। যথা-
১) চুরির বস্তুটি অবশ্যই অস্থাবর সম্পত্তি হবে:
২) চুরির বস্তুটি অন্য কারও দখলে থাকতে হবে:
৩) চুরির বস্তুট সরিয়ে নিতে হবে:
৪) চুরি করার উদ্দেশ্যে উহা সরাতে হবে:
৫)চুরির বস্তুটি মালিকের প্রকাশ্য বা পরোক্ষ সম্মতি ছাড়াই গ্রহন করতে হবে:
৬) চুরির বস্তুটি অবশ্যই অসাধুভাবে গ্রহন করা হবে:
”বলপূর্বক আদায়” এবং ”চুরির” মধ্যে পার্থক্য:
চুরি ও বলপূর্বক আদায়ের মাঝে পার্থক্য নিম্নরূপে করা যায়-
১) সংজ্ঞাগত পার্থক্য:দন্ডবিধির ৩৭৮ ধারার বিধান অনুসারে, যদি কোন ব্যক্তি কোন অস্থাবর সম্পত্তি অসাধুভাবে গ্রহণের উদ্দেশ্যে, দখলে থাকা ব্যক্তির সম্মতি ছাড়া উক্ত সম্পত্তির স্থানান্তর করে তবে তা চুরি বলে গণ্য হবে। অন্যদিকে, দন্ডবিধির ৩৮৩ ধারায় বলা হয়েছে যে, কোন ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে অপর কোন ব্যক্তিকে মৃত্যুর ভয়,আঘাতের ভয় বা পথরুদ্ধ করার ভয় দেখিয়ে কোন কিছু দিতে বাধ্য করে তাকে বল পূর্বক আদায় বলে।
২) ধারাগত পার্থক্য: দন্ডবিধির ৩৭৮ ধারায় চুরির সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে । অন্যদিকে, ৩৮৩ ধারায় বলপূর্বক আদায়ের সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে ।
৩) স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রে:শুধুমাত্র অস্থাবর সম্পত্তি চুরি করা যায় । পক্ষান্তরে, স্থাবর বা অস্থাবর  যাই হোক না কেন তা বলপূর্বক আদায় করা যায।
৪)ভয়ের সম্পর্ক: চুরির ক্ষেত্রে কোন শক্তি প্রয়োগ করা হয় না । পক্ষান্তরে, বলপূর্বক আদায়ে ক্ষতির ভয় সৃষ্টির জন্য শক্তি প্রয়োগ করা হয়ে থাকে ।
৫) ব্যক্তির ক্ষেত্রে:চুরি কেবল চোরই করতে পারে । কিন্তু বলপূর্বক গ্রহন অপরাধি নিজে বা অন্যের মাধ্যমে করতে পারে।
৬) সাজা সম্পর্কে:চুরির সাজা পিনাল কোর্ডের ৩৭৯ ধারা মতে, ৩ বছর পর্যন্ত যেকোন বর্ননার কারাবাস অথবা জরিমানা অথবা উভয় প্রকার সাজা হতে পারে। অপর দিকে,বলপূর্বক আদাযের সাজা পিনল কোডের ৩৮৪ ধারা মতে, ৩ বছর পর্যন্ত যে কোন বর্ননার কারাবাস অথবা জরিমানা অথবা উভয় প্রকার সাজা হতে পারে।





দন্ডবিধি এর ৩৭৯ অনুযায়ী চুরির শাস্তি নিম্নরূপ
ক) তিন বছর পর্যন্ত কারাদন্ড বা
খ) জরিমানা বা
গ) উভয় দন্ড
দন্ডবিধি ধারা ৩৭৯ অনুযায়ী চুরির শাস্তি:-
যে ব্যক্তি চুরি করে, সেই ব্যক্তি যেকোন বর্ণনার কারাদন্ডে-যাহার মেয়াদ তিন বছর পর্যন্ত হইতে পারে বা অর্থদন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।
দন্ডবিধি ধারা ৩৮০ অনুযায়ী বাসগৃহ ইত্যাদিতে চুরির শাস্তি:-
যে ব্যক্তি, মনুষ্য বসবাস বা সম্পত্তি সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয় এইরূপ অট্টালিকা, তাঁবু বা জাহাজে চুরি অনুষ্ঠান করে, সেই ব্যক্তি যেকোন বর্ণনার কারাদন্ডে-যাহার মেয়াদ সাত বছর পর্যন্ত হইতে পারে- দন্ডিত হইবে এবং তদুপরি অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবে।
দন্ডবিধির ৩৮৪ ধারায় বলপূর্বক আদায়ের শাস্তিবর্ণিত হয়েছে । যে ব্যক্তি বলপূর্বক আদায়ের অপরাধ করে সে ব্যক্তি যে কোন বর্ণনার কারাদন্ডে যার মেয়াদ তিন বছর পর্যন্ত হতে পারে বা অর্থদন্ডে বা উভয়বিধ দন্ডে দন্ডিত হবে।

ডাকাতি হল
ক) পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তি কর্তৃক দস্যুতা করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া বা
খ) দস্যুতায় উপস্থিত হওয়া বা উদ্যোগে সাহায্যকারী ব্যক্তির সংখ্যা যদি পাঁচ বা ততোধিক হয়
দন্ডবিধি ৩৯৫ অনুযায়ী শান্তি নিম্নরূপ
ক) যাবজ্জীবন কারাদন্ড বা
খ) সশ্রম কারাদন্ড ১০ বছর পর্যন্ত এবং অর্থদন্ড


আতœরক্ষা ও সম্পত্তি রক্ষার অধিকার বলতে কি বুঝ? কোন অবস্থায় একজন ব্যক্তির আতœ রক্ষা ও সম্পত্তিরক্ষার জন্য অপরের মৃত্যু পযন্ত ঘটানো যায়?

প্রশ্ন-৬ টীকা লিখ:
ক) ব্যক্তিগত আতœরক্ষার অধিকার:
আত্মরক্ষা ও বিনা বিচারে মানুষ খুন সম্পর্কে প্রচলিত আইনে কি আছে ?
দন্ডবিধির ৯৬ ধারায় উল্লেখ আছে আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগে কৃত কোন কিছু অপরাধ নয়।
দন্ডবিধির ৯৭ ধারায় ব্যক্তিগত দেহ ও সম্পত্তি রক্ষার অধিকার দেয়া হয়েছে। প্রত্যেক ব্যক্তির মানবদেহ সংক্রান্ত কোন অপরাধের বিরুদ্ধে তার নিজের দেহ ও অন্য কোন ব্যক্তির দেহ ( আক্রমন থেকে) বাঁচানোর ব্যক্তিগত অধিকার আছে। নিজের বা অপরের স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি চুরি, দস্যুতা, ডাকাতি, লুন্ঠন, অপহরণ, ক্ষতি বা  অন্য কোন ধরনের অপরাধমূলক কাজ থেকে রক্ষার অধিকার প্রত্যেক ব্যক্তির আছে।
দন্ডবিধির ৯৮ ধারায় অসুস্থ মানসিকতার ব্যক্তি ইত্যাদির কাজের বিরুদ্ধেও আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার দেয়া হয়েছে।
আবার ৯৯ ধারায় যে সব কার্যের বিরুদ্ধে কোনরূপ আত্মরক্ষামূলক ব্যক্তিগত অধিকার নেই এবং আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকারটি কতদূর পর্যন্ত প্রয়োগ করা যায় তার সীমা উল্লেখ করা হয়েছে। আত্মরক্ষার জন্য যতদূর পর্যন্ত প্রতিপক্ষের ক্ষতিসাধন করা প্রয়োজনীয়, আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকারটি তার চাইতে অধিক দূর পর্যন্ত ক্ষতিসাধনে প্রযোজ্য নয়। কোন সরকারী কর্মচারী সরকারী কর্মচারীর পদমর্যাদাবলে কোন কাজ করা কালে বা কাজ করার চেষ্টা কালে যদি কোন ব্যক্তি তাকে সরকারী কর্মচারী বলে না জানে বা তাকে সরকারী কর্মচারী বলে বিশ্বাস করার কারণ না থাকে বা কোন ক্ষমতাবলে কাজটি করছেন তা না জানান বা লিখিতভাবে কোন ক্ষমতা লাভ করে থাকলে তা দেখতে চাওয়া সত্ত্বেও না দেখান, তবে উক্ত ব্যক্তির আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করার অধিকার থাকবে। আইন কোন অবৈধ কাজকে সমর্থন করে না। ৯৯ ধারার সুরক্ষা পেতে হলে অবশ্যই কাজটি বৈধ হতে হবে।
দন্ডবিধির ১০০ ধারা কোন কোন ক্ষেত্রে শরীর রক্ষার জন্য অর্থাৎ নিজের প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার প্রয়োগ করে ছয়টি ক্ষেত্রে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটানো যায়।
১ম –  যদি এমন আঘাত যার ফলে ন্যায়সম্মতভাবেই এরূপ আশংকার সৃষ্টি হয় যে ব্যক্তিগত আত্মরক্ষামূলক অধিকারের অবাধ প্রয়োগ না করলে সে আঘাতে আক্রান্ত ব্যক্তির আসন্ন মৃত্যু অনিবার্য ;
২য়- এমন আঘাত বা আক্রমণ যার ফলে ন্যায় সঙ্গতভাবেই এরূপ আশংকা সৃষ্টি হয় যে প্রতিরোধ না করলে সে আঘাতের বা আক্রমণের ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির আসন্ন মুত্যু অনিবার্য;
৩য়- ধর্ষণের বা ব্যাভিচারের উদ্দেশ্যে আঘাত বা  আক্রমণ;
৪র্থ- অস্বাভাবিক কামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে আঘাত বা হামলা ;
৫ম- শিশু অপহরণ বা ব্যক্তি অপহরণের উদ্দেশ্যে আঘাত বা হামলা ;
৬ষ্ঠ- কোন ব্যক্তিকে অন্যায় বা বেআইনীভাবে আটক করার উদ্দেশ্যে এমন পরিস্থিতিতে তার উপর হামলা বা আক্রমণ বা আঘাত করা হয় যে পরিস্থিতিতে ন্যায়সঙ্গতভাবেই উক্ত ব্যক্তির মনে এ আশংকা সৃষ্টি হয় যে সে আটক হয়ে পড়লে মুক্তির জন্য সরকারী কর্তৃপক্ষের সহায়তা পেতে সমর্থ হবে না।
দন্ডবিধির ১০১ ধারায় উল্লেখ আছে যদি অপরাধটি ১০০ ধারায় বর্ণিত কোন প্রকারের না হয় তবে শরীর রক্ষার বা প্রাণ বাঁচানোর জন্য প্রয়োজনীয় আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার স্বেচ্ছাক্রমে আক্রমণকারীর মৃত্যুসংঘটন পর্যন্ত প্রযোজ্য নয়, তবে ৯৯ ধারায় বর্ণিত আরোপিত নিয়ন্ত্রণসমূহসাপেক্ষে আক্রমণকারীর মৃতুসংঘটন ব্যতীত তার অন্য যে কোন প্রকারের ক্ষতিসাধন পর্যন্ত প্রযোজ্য। ১০২ ধারায় শরীর রক্ষার জন্য  বা প্রাণ বাঁচাবার তাগিদে আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার প্রয়োগের প্রারম্ভ বা সূচনা ও প্রয়োগকাল উল্লেখ করা হয়েছে।
১০৩ ধারায় কখন সম্পত্তি রক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার মৃত্যু ঘটানো পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয় তা উল্লেখ করা হয়েছে। সম্পত্তি রক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার স্বতঃর্স্ফুতভাবে অন্যায়কারীর মৃত্যু ঘটানো বা অন্য কোন ক্ষতিসাধন পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয় যদি উক্ত অপরাধ দস্যুতা, রাত্রিকালে সিঁদ কেটে চুরি, মানুষের বাসস্থানরূপে বা সম্পত্তি সংরক্ষণের স্থানরূপে ব্যবহৃত হয় এরূপ বাড়ী, তাবু বা জলযানে অগ্নিসংযোগ করে ক্ষতিসাধন এবং এরূপ পরিস্থিতিতে চুরি, ক্ষতিসাধন বা গৃহে অনধিকার প্রবেশ, যদি পরিস্থিতি এমন হয় যে সংশ্লিষ্ট আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকারটি প্রয়োগ না করলে মৃত্যু বা মারাত্মক জখম অনিবার্য বলে ন্যায়সঙ্গতভাবেই আশংকা সৃষ্টি হয়।
১০৪ ধারায় উল্লেখ আছে, যে অপরাধটি অনুষ্ঠানের বিরুদ্ধে বা চেষ্টার বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকারটি প্রয়োগ করা প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে সে অপরাধটি চুরি, ক্ষতিসাধন, অপরাধজনক অনধিকার প্রবেশ হয়, তবে এরূপ অপরাধের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকারটি স্বতঃর্স্ফূতভাবে মৃত্যুসংঘটন পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয় না। 
১০৫ ধারায় সম্পত্তি রক্ষা সংক্রান্ত আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার প্রয়োগের প্রারম্ভ ও প্রয়োগকাল উল্লেখ করা হয়েছে।
১০৬ ধারায় নির্দোষ ব্যক্তির ক্ষতিসাধনের সম্ভাবনার প্রেক্ষিতে মারাত্মক আঘাত বা আক্রমণের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকারের বিষয় উল্লেখ আছে। যদি সঙ্গতভাবে মৃত্যু-আশংকা সৃষ্টিকারী আক্রমণের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার প্রয়োগ করতে গেলে অপরাধী এরূপ অবস্থায় থাকে যে তিনি নির্দোষ ব্যক্তির ক্ষতি করার ঝুঁকি না নিয়ে ফলদায়কভাবে সে অধিকার প্রয়োগ করতে অপরাগ হন, সে পরিস্থিতিতে তার আত্মরক্ষার অধিকার কোন নির্দোষ ব্যক্তির ক্ষতিসাধনের ঝুঁকি নিয়ে প্রয়োগ করলে তা বেআইনী হবে না।
দেশের মানুষ কাপুরুষ হউক তা যেমন আইন চায় না, তেমনি আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করতে গিয়ে কেউ সীমা অতিক্রম করুক তাও আইন অনুমোদন করে না।

খ)শাস্তি:
গ) খুন ও নরহত্যা:
দন্ডবিধির ৩০০ নং ধারায় খুনের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে যে, এই ধারায় যেসব ব্যতিক্রম নির্দেশ করা হয়েছে সেসব ক্ষেত্রসমূহ ব্যতীত দন্ডার্হ নরহত্যা 'খুন' হিসেবে গণ্য হবে।
১. যদি সেই কাজটির ফলে মৃত্যু সংঘটিত হয় সে কাজটি মৃত্যু সংঘটনের অভিপ্রায়ে হয়, কিংবা
২. যদি কাজটি এমন দৈহিক আঘাত করার অভিপ্রায়ে সম্পাদিত হয়, যা যে ব্যক্তিকে আঘাত করা হয়েছে, তার উক্ত আঘাতে মৃত্যু ঘটতে পারে বলে অপরাধকারীর জানা থাকে; অথবা
৩. যদি কোনো ব্যক্তিকে দৈহিক আঘাত দেয়ার উদ্দেশ্যে কাজটি করা হয় এবং যদি যে দৈহিক আঘাত দেয়ার অভিসন্ধি করা হয়েছে, সেই আঘাতটি যদি আসলেই স্বাভাবিক গতিতে মৃত্যু ঘটাবার জন্যে যথেষ্ট হয় অথবা
৪. যদি যে ব্যক্তি কাজটি সম্পাদন করে সে ব্যক্তি যদি জানে যে, কাজটি এমন বিপজ্জনক যে, এটি খুব সম্ভবত মৃত্যু ঘটাবে অথবা এরকম দৈহিক আঘাত ঘটাবে যা মৃত্যু ঘটাতে পারে এবং মৃত্যু সংঘটনের পূর্বোক্ত জখম ঘটাবার ঝুঁকি নেয়ার অজুহাত ছাড়াই অনুরূপ কাজ সম্পাদন করে।
তবে এর কিছু ব্যতিক্রমও রয়েছে। যেমনথ
১. অপরাধকারী গুরুতর ও আকস্মিক উত্তেজনার ফলে আত্মনিয়ন্ত্রণ-ক্ষমতা রহিত অবস্থায় উত্তেজনা দানকারী অথবা ভুলক্রমে বা দৈব ঘটনাক্রমে অপর কোনো ব্যক্তির মৃত্যু ঘটালে দন্ডার্হ নরহত্যা 'খুন' বলে বিবেচিত হবে না।
২. অপরাধকারী সদবিশ্বাসে তার দেহ বা সম্পত্তি সম্পর্কিত ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষা-অধিকার প্রয়োগ করতে গিয়ে পূর্বপরিকল্পনা ছাড়াই ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় ক্ষতি থেকে অতিরিক্ত ক্ষতিসাধনের ইচ্ছে না করে তার প্রতি আইনপ্রদত্ত ক্ষমতাসমূহ অতিক্রম করলে এবং যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে অনুরূপ প্রতিরক্ষা অধিকার প্রয়োগ করা হয়, তার মৃত্যু ঘটালে দন্ডার্হ নরহত্যা খুন নয়।
৩. সরকারি কাজ পরিচালনা বা জনসাধারণের সুবিচার বিধানার্থে সরকারি কর্মচারীর সাহায্যকারী কোনো ব্যক্তি সদবিশ্বাসে আইনে প্রদত্ত ক্ষমতা অতিক্রমে কোনো ব্যক্তির মৃত্যু ঘটায় এবং মৃত ব্যক্তির সঙ্গে তার কোনো শত্রুতা না থাকে তবে দন্ডার্হ নরহত্যা 'খুন' নয়।
৪. দন্ডার্হ নরহত্যা খুন বিবেচিত হবে না, যদি অপরাধটি কোনো আকস্মিক উত্তেজনার ফলে কোনো প্রকার পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়াই সংঘটিত হয় এবং অপরাধী কোনো অন্যায় সুযোগ গ্রহণ না করে থাকে কিংবা নিষ্ঠুরভাবে বা অস্বাভাবিকভাবে কাজ না করে থাকে।
 ৫. অপরাধজনক প্রাণহানি খুন হিসেবে বিবেচিত হবে না, যদি যে ব্যক্তির মৃত্যু হয়, সে ব্যক্তি আঠারো বছরের বেশি বয়স্ক হলে স্বেচ্ছায় নিজ সম্মতিক্রমে মৃত্যুর ঝুঁকি গ্রহণ করে।
দন্ডবিধির ৩০২ এবং ৩০৩ ধারায় খুনের শাস্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে । ৩০২ নং ধারায় বলা হয়েছে যে, যে ব্যক্তি খুন করে সেই ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত হবে এবং একইসঙ্গে অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হবে।
দন্ডবিধির ৩০৩ ধারায় বলা হয়েছে যে, যদি কোনো ব্যক্তি যাবজ্জীবন দ্বীপান্তর দন্ডে দন্ডিত অবস্থায় খুন করে, তা হলে সে ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডেদন্ডিত হবে।
ঘ)অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ

অপরাধের প্রকারভেদ:
১) লঘু অপরাধ
২) গুরুতর অপরাধ
৩) রাষ্ট্রদ্রোহীতামূলক অপরাধ
অপরাধের উপাদান:
১) দুষ্ট মন (এঁরষঃু সরহফ/ গবধহংৎরধ)
২) অসৎ ইচ্ছা( উরংযড়হবংঃু ওহঃবহঃরড়হ)
৩) বিদ্বেষ (গধষরপব)
৪) অবহেলা(ঘবমষরমধহপব)
৫) অমনযোগীতা(ঈধৎবষবংং)
৬) আইনগতভুল (গরংঃধশব ড়ভ ষধ)ি
৭) ঘটনাজনিতভুল(গরংঃধশব ভড় ভধপঃ)
সুতরাং অপরাধ হতে হলে একটি কর্মে মধ্যে নিন্মেক্ত বিষয়গুলো পাওয়া যেতে পারে।
১) অপরাধ হতে হলে  একটি অন্যায় ও ক্ষতিকর কার্য হতে হবে । কারণ কাজ ছাড়া কোন অপরাধ সংঘটিত হয় না।
২) অনুরুপ অন্যায় ও ক্ষতির বিপরীতে শাস্তি বিধান থাকতে হবে।
৩) অপরাধের মৌলিক উপাদান হিসাবে অভিপ্রায় বা মোটিভ বা দোষযুক্ত মন থাকতে হবে।
৪) অপরাধ সংঘটনের জন্য ইচ্ছা , প্রস্তুতি ও প্রচেষ্ট থাকতে হবে।
অপরাধের ক্ষেত্রে অভিযুক্ত করণের সময়সীমা:
ফৌজদারী আইনে কোন ব্যক্তিকে তার অপরাধের জন্য অভিযুক্ত করার ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়সীমা নেই। এরুপ প্রতিবন্ধকতা কেবলমাত্র দেওয়ানী আইনের ক্ষেত্রেই রয়েছে কারণ দেওয়ানী আইন তামাদি আইনের গন্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ তাই দেওয়ানী মোকদ্দমা তামাদি হলে আদালতে অগ্রাহ্য হয়। এ প্রসঙ্গে ঞযব ওহফবসহরঃু ঙৎফবহধহপব ১৯৭৫ জারীর বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য এটি ২৬ সেপ্টেম্বও ,১৯৭৫ জারী করা হয়এবং ১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর ঞযব ওহফবসহরঃু ঙৎফবহধহপব ১৯৭৫(জবঢ়বধষ)  বিল পাশের মাধ্যমে এটি তুলে দেয়া হয়।
১২ ডিএল আর ৭৩ মামলায় বলা হয়েছে যে ফৌজদারী আইনে তামাদি আইনের বিধান সমূহ প্রযোজ্য তাই অপরাধ সংঘটনের পর যে কোন সময় অপরাধীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্তাপন করা যায় । এজন্য ফরিয়াদির সুবিধা মতো যে কোন সময় মামলা করা যায়। তবে ফরিয়াদির ন্যায় সঙ্গত অভিযোগ প্রতিষ্ঠার জন্য অযৗক্তিক বিলমাব না করায় কল্যান কর কারণ অধিক বিলম্ব সাক্ষীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয় বলে এক্ষেত্রে সন্দেহের সৃষ্টি হতে পারে এরুপ সন্দেহের পর ইবহবভরঃ ড়ভ ফড়ঁনঃ ফর আসামীর পক্ষে যেতে পারে।প্রাচীন রোমান আইনে ফৌজদারী মামলার সময়সীমা ছিল ২০ বছর। এসময় অতিক্রান্ত হলে অভিযোগ অগ্রাহ্য হবে তবে বর্তমান দেওয়ানী মামলার ন্যায় ফৌজদারী মামলা বিলম্বেও কারণে আদালতের নিকট অগ্রাহ্য বলেবিবেচিত হবে না কারণ দেওয়ানী মামলা ব্যক্তি বিশেষের স্বার্থের সাথে প্রযোজ্য্য(জরমযঃ রহ চবৎংড়হধস) কিন্তু ফৌজদারী (জরমযঃ রহ জবস) সার্বজনীন স্বার্থে প্রযোজ্য। সুতরাং সময়ের প্রতিবন্ধকতা রাষ্ট্রের অধিকারকে বিনষ্ট করে না। তাই ফৌজদারী মামলার ক্ষেত্রে সরকার রাষ্ট্রপক্ষ হয়ে সুবিধামত যে কোন সময় অপরাধীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারে।
দেওয়ানী আইনে বাদীর দাবী যতই বৈধ ও ন্যায় সঙ্গত হোক না কেন মামলা দায়েরের নির্ধারিত সময়সীমা এমনকি আপীল রিভিশন এবং রিভিই এর সময়সীমা একবার অতিক্রান্ত হলে ক্ষেত্রে ন্যায়পর আদালতে আর কিছুই করার থাকে না, কারণ দেওয়ানী আইনে ধরে নেয়া হয় যে মামলা দায়েরের সকলসীমা নির্ধারিত না থাকলে আদালতে মামলা নিস্পত্তি ঘটবে নাফলে সমাজের শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্ট হবে। তাই রাষ্ট্রও সমাজের স্বার্থে দেওয়ানী আইনে মোকদ্দমা দায়েরের সময়সীমা নির্দিষ্ট রয়েছে।
কিভাবে অপরাধ দেওয়ানী অন্যায় হতে ভিন্নতর:
 ১) শ্রেণীগত পার্থক্য
২) নামকরণের ক্ষেত্রে
৩) দায়েরের প্রশ্নে
৪) পক্ষদ্বয়ের নামকরণ
৫) নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুরের ক্ষেত্রে
৬) তামাদির ক্ষেত্রে
৭) দায় ও দোষী হওয়ার ক্ষেত্রে
৮) প্রমানের ক্ষেত্রে
৯) শাস্তির ক্ষেত্রে
১০) উদ্দেশ্যের ক্ষেত্রে
দন্ড সমূহ:
ধারা-৫৩।  দন্ডসমূহ(চঁহরংযসবহঃং):
এই বিধির বিধানসমূহের বলে অপরাধকারীরা যে সকল দন্ডে সাজাপ্রাপ্ত হবে, সে সকল সাজা হচ্ছে:
প্রথমত(ঋরৎংঃ) :মৃত্যুদন্ড(ঈধঢ়রঃধষ ঝবহপবহপব/ঈধঢ়রঃধষ চঁহরংযসবহঃ/খরভব ঝবহপবহপব/উবধঃয ঝবহপবহপব)
ফাঁসি,শিরচ্ছেদ, পয়জন পুঁশ করে,বিষপানে।
দ্বিতীয়ত(ঝবপড়হফষু): যাবজ্জীবন কারাদন্ড(ওসঢ়ৎরংড়হসবহঃ ভড়ৎ খরভব) ২২.৬ মাস
তৃতীয়ত(ঞযরৎফষু):(বাতিল)
 চতুর্থত(ঋড়ঁৎঃযষু): কারাদন্ড; যা দুই প্রকারের হতে পারে,যথা:
(১) সশ্রম (ডরঃয জবমড়ৎড়ঁং), অর্থাৎ কঠোর শ্রম সহকারে এবং
২) বিনাশ্রম (ডরঃয ড়ঁঃ জবমড়ৎড়ঁং);
পঞ্চমত(ঋরভঃযষু): সম্পত্তির বাজেয়াপ্তি;
ষষ্ঠত(ঝরীঃযষু):অর্থদন্ড।
ব্যাখ্যা(ঊীঢ়ষধহধঃরড়হ):যাবজ্জীবন কারাদন্ড হলে, কারাদন্ড অবশ্যই সশ্রম হবে।
ধারা ৫৩-ক। কারাবাস উল্লেখের ব্যাখ্যা(ঈড়হংঃৎঁপঃরড়হ ড়ভ ৎবভবৎবহপব ঃড় ঃৎধহংঢ়ড়ৎঃধঃরড়হ):
(১) (২) উপধারার শর্তাবলী সাপেক্ষে, সাময়িকভাবে প্রচলিত অন্য যেকোন আইনে যেখানে যাবজ্জীবন ‘দ্বীপান্তর’ এর উল্লেখ রয়েছে, সেখানে উহা ‘যাবজ্জীবন কারাবাস’ ধরতে হইবে।
(২) বর্তমানে প্রচলিত যেকোন আইনে কোন মেয়াদের বা স্বল্প মেয়াদের জন্য যেকোনাভাবে হউক না কেন, দীপান্তরের উল্লেখ থাকিলে উহা রদ গণ্য হইবে।
(৩) বর্তমানে প্রচলিত অন্য যেকোন আইনে, যেখানে দীপান্তর উল্লেখ রয়েছে:
(ক) সেখানে উহা যদি যাবজ্জীবন দীপান্তর বুঝায়, তবে উহাকে যাবজ্জীবন কারাবাস ধরতে হবে;
(খ) সেখানে উহা যদি স্বল্পতর মেয়াদের দীপান্তর বুঝায়ত,তবে উহা রদ হিসেবে গন্য হবে।

ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষার অধিকার বলতে কি বুঝ? কোন কোন ক্ষেত্রে আতœরক্ষাতে ও সম্পত্তি রক্ষাতে অন্যের জীন পর্যন্ত হানি করা যায় বা অন্যকে মৃত্যু পযন্ত ঘটানো যায়? আলোচনা কর।
আপনিও খুন করতে পারেন, কিন্তু কখন?
খুন করা সবচেয়ে বড় ফৌজদারী অপরাধ। বাংলাদেশের দণ্ডবিধি অনুযায়ী খুনের শাস্তি সর্বোচ্চ মৃত্যুদন্ড পর্যন্ত হতে পারে। তবে এ বিধানেরও কিছু ব্যতিক্রম আছে।

দণ্ডবিধির ১০০ ধারা অনুযায়ী যদি কাউকে খুন করা হয় তবে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না।

তবে এ ধারাটি তখনই প্রয়োগ করা যাবে যখনঃ

১) যদি কোন লোক আপনার উপর এমন আঘাত করতে উদ্ধ্যত হয় যার ফলে ন্যায় সঙ্গতভাবেই আপনার এরূপ আশংকার সৃষ্টি হয় যে, আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করে সে আঘাতকে প্রতিহত না করলে আপনার মৃত্যু অনিবার্য।
২) যদি কোন লোক আপনাকে এমন আঘাত বা আক্রমণ করে যার ফলে ন্যায় সঙ্গতভাবেই এরূপ আশাংকার সৃষ্টি হয় যে, সে আঘাত বা আক্রমণের ফলে আপনার গুরুতর আহত হওয়া অনিবার্য।
৩) আপনি যদি স্ত্রীলোক হন এবং আপনাকে যদি কেউ ধর্ষণ করতে আসে। (অর্থাৎ স্ত্রীলোক তার ইজ্জত রক্ষার্থে ধর্ষণে উদ্ধত লোকের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারেন।)
৪) যদি কেউ কোন অস্বাভাবিক কামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে আঘাত বা হামলা করে।
৫) যদি কোন লোক কোন শিশু বা নারীকে অপহরণের উদ্দেশ্যে আঘাত বা হামলা করে।
৬) যদি আপনাকে কেউ বেআইনীভাবে আটক করতে উদ্যত হয় এমন পরিস্থিতিতে আপনার ন্যায়সঙ্গতভাবে আশংকা হয় যে, আপনি আটক হলে সরাসরি কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে আপনি আর উদ্ধার হতে পারবেন না, তখন আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করা যাবে।

এইতো গেল দেহরক্ষার ক্ষেত্রে আপনার খুন করার অধিকার। আর সম্পত্তি রক্ষার ক্ষেত্রে আপনাকে খুন করার অধিকার দেয়া হয়েছে দণ্ডবিধির ১০৩ ধারায় ।

এ ধারায়ও আপনার কষ্টার্জিত সম্পত্তিতে যদি-

১) দস্যুদের দ্বারা লুন্ঠনের উপক্রম হয়,
২) রাত্রিকালে আপনার গৃহে কেউ বেআইনী প্রবেশ করে,
৩) কোন গৃহ, তাঁবু বা যানবাহনে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়, যদি সে গৃহ, তাঁবু বা যানবাহন কোন মানুষের বাসস্থান হিসেবে অথবা সম্পত্তি রাখার জায়গা হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে,
৪) যদি কোন লোক চুরি করার উদ্দেশ্যে আপনার গৃহে অনধিকার প্রবেশ করে। চুরি করার সুবিধার জন্য আপনাকে গুরুতর আঘাত করতে উদ্ধত হয় এবং আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার প্রয়োগ না করলে আপনার মৃত্যু বা গুরুতর আঘাত অনিবার্য, প্রভৃতি ক্ষেত্রে আত্মরক্ষার জন্য মৃত্যু ঘটানো পর্যন্ত ক্ষমতা আইন আপনাকে দিয়েছে।

তবে আইন এও বলেছে (দঃ বিঃ ৯৯ ধারায়) আত্মরক্ষার জন্য যতদুর পর্যন্ত ক্ষতিসাধন করা প্রয়োজন তার বেশী ক্ষতি সাধন করা যাবে না। শরীর ও সম্পত্তি রক্ষার অধিকার মানুষের মৌলিক অধিকার। এই মৌলিক অধিকারগুলি মানুষের ব্যক্তিত্ব বিকাশের প্রধান সহায়ক বলে দেশের শাসনতন্ত্রে বিশেষভাবে গৃহীত ও স্বীকৃত রয়েছে। এই মৌলিক অধিকার দুটি সংরক্ষনের জন্য দন্ডবিধিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কর্তৃক কিছু অধিকার প্রয়োগের বিধান সন্নিবেশিত হয়েছে। এই অধিকার বলে আতœরক্ষা ও সম্পত্তি রক্ষার অধিকারি ব্যক্তি নিজের বা অপরের দেহ ও সম্পত্তি রক্ষ করার উদ্দেশ্যে কোন কোন ক্সেত্রে বেআইনি আক্রমনকারী বা হস্তক্ষেপকারি ব্যক্তির মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে এবং উহা কোন অপরাধ হিসেবে গন্র হবে না।

মানব জীবনের বিরুদ্ধে (২৯৯-৩০৯)

১৮৬০ সালের দন্ডবিধির ২৯৯ ধারায় অপরাধজনক নরহত্যার কথা বলা হয়েছে। নরহত্যা সংগঠনের সবনিম্ন একজন অপরাধীর প্রয়োজন হবে। ৩০০ ধারায় খুনের কথা বলা হয়েছে। অপরাধ জনক ৩০০ ধারায় খুনের কথা বলা হয়েছে।৩০০ ধারায় পাঁচটি ব্যতিক্রমের কথা বলা হয়েছে। যাহার মুত্যু ঘটাইবার উদ্দেশ্য ছিল তাহা ব্যতীত অন্য ব্যক্তির মৃত্যু সংঘঠন দ্বারা অপরাধজনক প্রাণি গত্যা ৩০১ প্রানী হত্যা ৩০১ ধারায়। খুনের শাস্তি ৩০২ ধারায় আলোচনা করা হয। এতে যাবজ্জীবন কারাদন্ড বিনাশ্রম শাস্তি দেওয়া হয় না।  ৩০২ ধারার সবনিম্ন শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ড আর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড তদুপরি অথদন্ড।৩০৩ ধারায় একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদন্ড। খুন নহে এমন অপরাধজনক প্রাণহানির শাস্তি বিধান ৩০৪ ধারা। ইহাতে যাবজ্জীবন কিংবা ১০ বছর পযন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদন্ডে তদুপরি অথদন্ডে ,অপরাধজনক প্রানহানি যাবজ্জীবন কারাদন্ড।
খুন নহে এমন অপরাধজনক প্রাণহানির শাস্তির বিধান ৩০৪ ধারায়। যাবজ্জীবন কারাদন্ড বা ১০ বছর পযন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদন্ড ৩০৪ ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ড। ডাক্তারের অবহেলায় রোগী ডাক্তারের শাস্তি ৩০৪ ধারায়।
এছাড়াও দন্ডবিধি ২৯৯ ধারায় তিনটি বিষয় বলা হয়েছে খুন বা হত্যা সম্পর্কে ।
নরহত্যার দন্ডনীয় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে;
এক,
যদি কোন ব্যক্তি কাউকে হত্যার উদ্দেশ্য নিয়ে হত্যা করে ;
  দুই,
যদি কোন ব্যক্তি এমনভাবে শারীরিক ক্ষতি করে ,যার ফলে সেই আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তি মারা যায় ;
  তিন,
যদি কোন ব্যক্তির জানা থাকে যে, তার উক্ত আঘাতের ফলে আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তির মৃত্যু অবধারিত;
উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়,
(ক),মি: রহিম মি: করিমকে হত্যার উদ্দেশ্য খাবারে বিষ মিশিয়ে রাখলেন যাতে মি:করিম সে খাবর খেয়ে মারা যায়।  মি: করিম সেই খাবার খেলেন এবং মারা গেলেন ।অতএব, মি: রহিম নরহত্যার শাস্তিযোগ্য অপরাধে অপরাধী সাব্যস্ত হলেন।
(খ), বিশ্বজীৎ হত্যা কান্ড । বিশ্বজীৎ এর শরীরে অভিযুক্তরা চাপাতি দিয়ে কোপায় । যার ফলে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে সে মারা যায় ।
(গ), মি: করিম জানে যে, মি: রহিম ঝোপের আড়ালে আছে যা আবুল জানে না। তা সত্ত্বেও সে আবুল কে প্ররোচিত করল যেন ঝোপের ঐ নির্দিষ্ট জায়গার মধ্যে গুলি করে যাতে করে মি: রহিম এর  মৃত্যু ঘটে। আবুল
গুলি ছুড়ল এবং মি: রহিম মারা গেল। এক্ষেত্রে আবুল  কোন অপরাধের দায়ে দোষী হবে না। কিন্তু মি: করিম নরহত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হবে।

মৃত্যু দুই প্রকার:
ধ ) ঘধঃঁৎধষ (স্বাভাবিক মুত্যু)
ন) টহহধঃঁৎধষ (অস্বাভাবিকমৃত্যু)
১) গঁৎফবৎ(খুন)
২)ঐড়সরপরফব(নরহত্যা):৩টি বিষয়ের উপর নিভর করে
ইু যরসংবষভ ংঁরপরফব
ইু ধহড়ঃযবৎ ঢ়বৎংড়হ-
১)ঈঁষঢ়ধনষব যড়সরপরফব
২) গঁৎফবৎ
৩)ঈঁষঢ়ধনষব যড়সরপরফব(অপরাধমূলক নর হত্যা)
৪)ঝঁরপরফব(আতœহত্যা)
৫)উবধঃয পধঁংবফ নু ধহরসধষ ড়ৎ ড়ঃযবৎং(প্রানী বা অন্য কারও দ্বারা মৃত্যু)
ধারা-৩০০
ঈঁষঢ়ধনষব যড়সরপরফব কখন গঁৎফবৎ হিসাবে গন্য হবে
দন্ড বিধির ৩০০ ধারায় বর্ণিত ব্যতিক্রম সাপেক্ষে সকল অপরাধমূলক নরহত্যাই খুন হিসাবে গন্য হবে-
যদি
১)মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে মারা হয়/মৃত্যু ঘটানোর জন্য কাজ:
যে কাজের ফলে মৃত্যু সংঘটিত হয়েছে তা মৃত্যু ঘটানোর জন্যই করা হয়ে থাকে।
যেমন-ক খ কে হত্যা করার উদ্দেশ্যেই তার প্রতি গুলি বষণ করে খ এতে মারা যায় এ ক্ষেত্রে ক খুনের অপরাধ করেছে বলে গণ্য হবে।
২) শরীরের কোথায় মেরেছে যেমন মাথায় আঘাত করা অর্থাৎ এমন উদ্দেশ্যে শরীরের আঘাত করে যে আঘাতে মৃত্যু অবধারিত।
দৈহিক আঘাত প্রদানের জন্য কাজ:যদি কাজটি এমন দৈহিক আঘাত প্রদানের জন্য করা হয়ে থাকে যে আঘাতের ফলে মৃত্যুও হতে পারে বলে আসামী জানে।
যেমন- ক জানে যে খ এমন একটি অসুখে ভূগছে যে একটি মাত্র আঘাতেই মৃত্যু হতে পারে তা জানা স্বত্বেও সে খকে আহত করার উদ্দেশ্যে আঘাত করে এবঙ এতে খ মারা যায় ক খুনের অপরাধে দোষী হবে।
৩)দৈহিক অভিষ্ট আঘাত স্বাভাবিক মৃত্যুর জন্য য়থেষ্ট:কোন ব্যক্তিকে দৈহিক আঘাত দেওয়ার উদ্দেশ্যে করা হলে এবং অভিষ্ট আঘাতটি স্বাভাবিক মৃত্যু ঘটানোর জন্য যথেষ্ট হয়। যেমন- ক ইচ্ছাকৃতভাবে খ এর শরীরে একটি ধারালো অস্ত্রের কোপদেয় যা স্বাভাবিকভাবেই কোন ব্যক্তির মৃত্যু  ঘটানোর জন্য যথেষ্ট ক খুনের অপরাধ করেছে বলে গণ্র হবে।
৪) আশু বিপদজনক কাজ যার ফলে মুত্যু হতে পারে: কোন আশু বিপদজনক কাজ যার ফলে সম্ভবত মৃত্যু ঘটতে পারে বা এরুপ কাজের ফলে এমন দৈহিক আঘাত ঘটবে যার ফলে মৃত্যু হতে পারে। এরকম জানা স্বত্ত্বেও বা মৃত্যু ঘটানো বা এরুপ দৈহিক আঘাত দেওয়ার জন্য কোন অজুহাত ছাড়া যদি কাজটি করা হয় যেমন ক কোন অজুহাত ছাড়া জনতার প্রতি গুলি ছুড়ল জনতার একজন মারা গেল ক খুনের জন্য দায়ী হবে।

দণ্ডবিধির ৩০০ ধারার ব্যাতিক্রম সমূহঃ
ঈঁষঢ়ধনষব যড়সরপরফবকখন গঁৎফবৎ হিসাবেগন্য হবে না/অপরাধজনক নরহত্যা কখন খুনের পর্যায়ে পড়ে না:দন্ডবিধির ৩০০ ধারায় ৫ টি ব্যতিক্রমের উল্লেখ করা আছে সেক্ষেত্রে কোন ব্যক্তিকে খুন করা হলেও তা খুন হিসাবে গন্য না হয়ে অপরাধজনক নরহত্যা হিসাবে গণ্য হবে।
ব্যাতিক্রম ১) যেক্ষেত্রে শাস্তিযোগ্য নরহত্যা খুন হবেনাঃ যদি মারাত্তক ও আকস্মিক প্ররোচনার ফলে অপরাধী আতœ-সংযমশক্তি হারিয়ে ফেলে এবং যে লোক প্ররোচনা দান করেছে সেই লোকের অথবা ভুল বা দুর্ঘটনাক্রমে অন্য কোন লোকের মৃত্যু ঘটায় তাহলে শাস্তিযোগ্য নরহত্যা খুন বলে গণ্য হবেনা।
ব্যাতিক্রম ২) শাস্তিযোগ্য নরহত্যা খুন বলে গণ্য হবেনা, যদি অপরাধী সরল মনে তার আতœরক্ষার বা সম্পত্তি রক্ষার ব্যাক্তিগত অধিকার প্রয়োগকরে কোনরূপ পুর্ব-পরিকল্পনা ছাড়া কারো মৃত্যু ঘটায়।
ব্যতিক্রম ৩) শাস্তিযোগ্য নরহত্যা খুন বলে গণ্য হবেনা, যদি দোষী একজন সরকারী কর্মচারি বা সরকারী কর্মচারির সহায়তা কারী হিসাবে আইন অনুযায়ী তার কার্য সম্পাদন করতে গিয়ে কোনরূপ অসৎ উদ্দেশ্য ছাড়া প্রয়োজনীয় ও আইন সম্মত বলে সরল মনে বিশ্বাস করে কোন লোকের মৃত্যু ঘটায়।
ব্যাতিক্রম ৪) শাস্তিযোগ্য নরহত্যা খুন বলে গণ্য হবেনা, যদি অপরাধটি কোন আকস্মিক বিবাদের সময় আকস্মিক উত্তেজনার কারনে কোনরূপ পুর্ব-পরিকল্পনা ছাড়া ঘটে এবং অপরাধী কোন প্রকারের অন্যায় সুযোগ গ্রহণ না করে।
ব্যাতিক্রম ৫) শাস্তিযোগ্য নরহত্যা খুন বলে গণ্য হবেনা, যদি যে লোকের মৃত্যু হয়,সেই লোক ১৮ বছরের বেশি বয়স্ক হয় এবং স্বেচ্ছায় স্বীয় সম্মতিক্রমে মৃত্যুবরন করে বা মৃত্যুর ঝুকি গ্রহণ করে।
অথবা
১)আতœ নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলে উত্তেজিত হয়ে কাউকে মেরে ফেলা।
২)সরকারী কর্মকর্তার নির্দেশে অপর কোন ব্যক্তি সরকারী দায়িত্ব মানতে গিয়ে যদি কাউকে মেরে ফেলে।
৩) কোন ব্যক্তির শরীর ও সম্পত্তির আতœরক্ষার রক্ষাতে কাউকে মেরে ফেলা।
৪) ঝগড়ার মাধ্যমে মারামারি করতে গিযে একে অন্যের লাথি ঘুষিতে মেরে ফেলা।
৫) ১৮ বছরের অধিক বয়স্ক ব্যক্তি যদি স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করে কিংবা মৃত্যু ঝুঁকি গ্রহণ করে। ধারা ৩০০ এর ব্যতিক্রম মোতাবেক উক্ত ৫টি গ্রাইন্ড ছাড়া বাকী সব মার্ডার হিসাবে গন্য হবে।
ধারা-৩০১: একজনের পরিবর্তে অন্য জনকে খুন:অপরাধী যে ব্যক্তির মৃত্যু সংঘটনের ইচ্ছা করেছিল কিংবা যে ব্যক্তির মৃত্যু ঘটতে পারে বলে জানত সে ব্যক্তির মৃত্যু সঙঘটন করলে তার যেরুপ অপরাদ হতো এই ক্ষেত্রেও সেরুপ হবে।
দন্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুনের শাস্তি সম্পর্কে দুই ধরনের কথা বলা হয়েছে
  এক,
যে ব্যক্তি খুন করবে তার শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড;
  দুই,
যে ব্যক্তি খুন করবে তার শাস্তি হবে যাবজ্জীবন কারাদন্ড;
এর সাথে আরও বলা হয়েছে যে, ঐ দুটি শাস্তির সাথে জরিমানা ও হতে পারে।
আবার দন্ডবিধি ৩০৩ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে,  যদি কোন ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত হওয়ার পরে আবারো হত্যা বা খুন করে সে মৃত্যু দন্ডে দন্ডিত হবে।

এছাড়াও খুনের পর্যায়ে পড়েনা বা খুনের কাছাকাছি অথবা খুন হয়নি এমন নরহত্যার শাস্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে দন্ডবিধির ৩০৪ ধারায়
  এক,
যে ব্যক্তি এমন নরহত্যা করল যা খুনের পর্যায়ে পড়ে না, সে যাবজ্জীবন কারা দন্ডে দন্ডিত হবে অথবা দশ বছর পর্যন্ত সাজা ভোগ করবে এবং সাথে জরিমানা হবে।
  দুই,
যে ব্যক্তি দ্বারা মৃত্যু সংঘটিত হয়েছে সে কাজের উদ্দেশ্য যদি মৃত্যু হয় অথবা এমন শারীরিক আঘাত যার ফলে মৃত্যু হয়, তাহলে সে যাবজ্জীবন কারা দন্ডে দন্ডিত হবে অথবা দশ বছর পর্যন্ত সাজা ভোগ করবে এবং সাথে জরিমানা হবে।
তিন,
যদি জেনে শুনে এমন কাজ করে যা দ্বারা মৃত্যু সংঘটিত হয় কিন্তু এরূপ ইচ্ছা ছিল না অথবা এমন শারীরিক ক্ষতি যার ফলে মৃত্যু সংঘটিত হয় তাহলে তিনি দশ বছর কারাদন্ডে দন্ডিত হবেন অথবা জরিমানা অথবা উভয়ই প্রযোজ্য হবে।
 দন্ডবিধির ধারা ৩০৪ক :পেশাগত কারণে রাস্তায় বা জনপথে ট্রাফিক না মেনে অথবা বেপরোয়া বা অবহেলা গাড়ি চালিয়ে বা কোন যানে আরোহণ করে মৃত্যু ঘটায় সেটাও  দন্ডনীয় নরহত্যার বলে গণ্য হবে না এবং সে ব্যক্তি পাঁচ বছর পর্যন্ত
মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদন্ডে অথবা অথ দন্ডে অথবা উভয় দন্ডেই দন্ডিত হবে।
(ধারা-৩০৪ খ):কোন ব্যক্তি বেপরোয়াভাবে বা অবহেলামূলকভাবে জনপথে যান চালিযে বা অশ্বারোহণের কর্তৃক নিন্দনীয় নরহত্যানয় এমন মৃত্যু ঘটাইলে সে ব্যক্তি তিন বছর পর্যন্ত যেকোন মেয়াদের কারাদন্ডে বা অথদন্ডে বা উভয় দন্ডেই দন্ডিত হবে।
ধারা ৩০৪ (খ) বেপরোয়া যান বা অশ্বচালনার দ্বারা মৃত্যু ঘটান:---
যে ব্যক্তি বেপরোয়াভাবে বা তাচ্ছিল্যের সহিত জনপথে যান বা অশ্ব চালাইয়া দন্ডার্হ নরহত্যা নহে এমন মৃত্যু ঘটায়, সেই ব্যক্তি যেকোন বর্ণনার কারাদন্ডে যাহার মেয়াদ তিন বছরের পর্যন্ত হইতে পারে বা অর্থদন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবে।

দণ্ডবিধি এর ধারা-৩০৫: শিশু বা উন্মাদ ব্যক্তির আতœ হত্যায় সহযোগীতা বা প্ররোচনা দান:  যদি,আত্মহত্যাকারী এর বয়স ১৮ বছরের নিচে হয়,উম্মাদ লোক হয়,প্রলাপগ্রস্ত লোক হয়,নির্বোধ লোক হয়,বা কোন লোক যদি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় আত্মহত্যা করে,আত্মহত্যায় সহায়তাকারী অথবা প্ররোচনা দান কারী মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে অথবা অনধিক দশ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবে এবং তদুপরি অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হইবে।
দণ্ডবিধি এর ধারা-৩০৬ সাবালক সুস্থমস্তিষ্কব্যক্তি আতœহত্যায় সহযোগীতাবা প্ররোচনা দান করলে:যদি কোন লোক আত্মহত্যা করে,তবে যে লোক আত্মহত্যায় সহায়তা বা প্ররোচনা দান করবে,উক্ত লোক দশ বছর পর্যন্ত মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং তদুপরি অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবে।
ধারা ৩০৭ খুনের উদ্যোগ:---
১)উদ্যোগ গ্রহণ করলে(লক্ষ্য ভ্রষ্ট হয়েছে):
যে ব্যক্তি এইরূপ অভিপ্রায়ে বা অবগতি সহকারে এবং এইরূপ অবস্থায় কোন কার্য সম্পাদন করে যে,
যদি উক্ত কার্যের সে মৃত্যু ঘটাইত, তাহা হইলে সে খুনের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইত, সেই ব্যক্তি যে কোন বর্ণনার কারাদন্ডে যাহার মেয়াদ ১০ বছর পর্যন্ত হইতে পারে-দন্ডিত ইইবে এবং তদুপরি অর্ধদন্ডেও দন্ডনীয় হইবে।

২)উদ্যোগ নিয়েছে আহত হয়েছে:
আর উক্ত কার্যের সাহায্যে কোন ব্যক্তিকে আঘাত করা হয়, তাহা হইলে অপরাধকারী যাবজ্জীবন কারাদন্ডে বা ইতোপূর্বে উল্লেখিত দন্ডে দন্ডনীয় হইবে।
৩)যাবজ্জীবন দন্ডে দন্ডিত ব্যক্তিগণ কর্তৃক উদ্যোগ: এই ধারার অধীনে অপরাধকারী ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ডাজ্ঞাধীন থাকার ক্ষেত্রে আঘাত করা হইলে, তাহার মৃত্যুদন্ড বিধান করা হইবে।
ধারা ৩০৮ দন্ডার্হ নরহত্যা অনুষ্ঠানের উদ্যোগ:---
১)অপরাধজনক নরহত্যার চেষ্টা:
যে ব্যক্তি এইরূপ অভিপ্রায়ে বা অবগতি সহকারে এবং এইরূপ কোন কার্য করে যে ব্যক্তি উক্ত কার্যের সাহায্যে মৃত্যু ঘটাইত তাহা হইলে সে খুন বলি গণ্য নহে এইরূপ দন্ডার্হ নরহত্যার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইত, সেই ব্যক্তি যেকোন বর্ণনার কারাদন্ডে-যাহার মেয়াদ তিন বছর পর্যন্ত হইতে পারে বা অর্থদন্ডে বা উভয়বিধ দন্ডে দন্ডিত হইবে;
২)অপরাধজনক নরহত্যায় আহত হলে:
আর যদি উক্ত কার্যের সাহায্যে কোন ব্যক্তিকে আঘাত করা হয়, তাহা হইলে সে ব্যক্তি যেকোন বর্ণনার কারাদন্ডে-যাহার মেয়াদ সাত বছর পর্যন্ত হইতে পারে বা অর্থদন্ডে বা উভয়বিধ দন্ডে দন্ডিত হইবে।
ধারা ৩০৯ আত্মহত্যা করিবার উদ্যোগ:---
যে ব্যক্তি আত্মহত্যা করিবার উদ্যোগ করে এবং অনুরূপ অপরাধ অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে কোন কাজ করে, সেই ব্যক্তি বিনাশ্রম কারাদন্ডে- যাহার মেয়াদ এক বছর পর্যন্ত হইতে পারে বা অর্থদন্ডে বা উভয়বিধ দন্ডে দন্ডিত হইবে।
ধারা ৩০৭ খুনের উদ্যোগ:---
যে ব্যক্তি এইরূপ অভিপ্রায়ে বা অবগতি সহকারে এবং এইরূপ অবস্থায় কোন কার্য সম্পাদন করে যে, যদি উক্ত কার্যের সে মৃত্যু ঘটাইত, তাহা হইলে সে খুনের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইত, সেই ব্যক্তি যে কোন বর্ণনার কারাদন্ডে যাহার মেয়াদ ১০ বছর পর্যন্ত হইতে পারে-দন্ডিত ইইবে এবং তদুপরি অর্ধদন্ডেও দন্ডনীয় হইবে। আর উক্ত কার্যের সাহায্যে কোন ব্যক্তিকে আঘাত করা হয়, তাহা হইলে অপরাধকারী যাবজ্জীবন কারাদন্ডে বা ইতঃপূর্বে উল্লেখিত দন্ডে দন্ডনীয় হইবে। যাবজ্জীবন দন্ডে দন্ডিত ব্যক্তিগণ কর্তৃক উদ্যোগ এই ধারার অধীনে অপরাধকারী ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ডাজ্ঞাধীন থাকার ক্ষেত্রে আঘাত করা হইলে, তাহার মৃত্যুদন্ড বিধান করা হইবে।
ধারা ৩০৮ দন্ডার্হ নরহত্যা অনুষ্ঠানের উদ্যোগ:---
যে ব্যক্তি এইরূপ অভিপ্রায়ে বা অবগতি সহকারে এবং এইরূপ কোন কার্য করে যে ব্যক্তি উক্ত কার্যের সাহায্যে মৃত্যু ঘটাইত তাহা হইলে সে খুন বলি গণ্য নহে এইরূপ দন্ডার্হ নরহত্যার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইত, সেই ব্যক্তি যেকোন বর্ণনার কারাদন্ডে-যাহার মেয়াদ তিন বছর পর্যন্ত হইতে পারে বা অর্থদন্ডে বা উভয়বিধ দন্ডে দন্ডিত হইবে; আর যদি উক্ত কার্যের সাহায্যে কোন ব্যক্তিকে আঘাত করা হয়, তাহা হইলে সে ব্যক্তি যেকোন বর্ণনার কারাদন্ডে-যাহার মেয়াদ সাত বছর পর্যন্ত হইতে পারে বা অর্থদন্ডে বা উভয়বিধ দন্ডে দন্ডিত হইবে।
ধারা ৩০৯ আত্মহত্যা করিবার উদ্যোগ:---
যে ব্যক্তি আত্মহত্যা করিবার উদ্যোগ করে এবং অনুরূপ অপরাধ অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে কোন কাজ করে, সেই ব্যক্তি বিনাশ্রম কারাদন্ডে- যাহার মেয়াদ এক বছর পর্যন্ত হইতে পারে বা অর্থদন্ডে বা উভয়বিধ দন্ডে দন্ডিত হইবে।
সংক্ষিপ্ত:
১)নরহত্যা ও খুন(২৯৯-৩০৪)
২)অবহেলা ৩০৪ ক,খ
৩)আতœ হত্যায় সহায়তা করা (৩০৫-৩০৬)
৪)খুন ,নরহত্যা ও আতœহত্যা(৩০৭-৩০৯)
২৯৯=অপরাধজনক নরহত্যা
৩০০=খুন
৩০১=একজনের পরিবর্তে অন্যজনকে খুন করা
৩০২=খুনের শাস্তি
৩০৩=যাবৎজীবন কারাদন্ড ব্যক্তি কর্তৃক অন্যকে খুন
৩০৪=অপরাধজনক নরহত্যার শাস্তি(২৯৯)
৩০৪(ক)=পেশাগত কারনে অন্যের প্রাণহানি
৩০৪(খ)=বেপরোয়াভাবে গাড়ীচালানো বা অশ্বারোহণের কর্তৃক নিন্দনীয় নরহত্যা নয়
৩০৫=শিশু,নাবালক,উন্মাদব্যক্তি ,প্রলাপগ্রস্থ ব্যক্তি,নির্বোধব্যক্তি,কোন নেশাগ্রস্থ ব্যক্তি কে আতœ হত্যায় সহযোগীত করলে
৩০৬=সাবালক,সুস্থ ব্যক্তিকে আতœ হত্যায় সাহায্য করলে
৩০৭=
খুনের উদ্যেগ গ্রহনে লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে
উদ্যেগ নিয়েছে আহত হলে
যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রাপ্ত ব্যক্তি কর্তৃক মৃত্যুদন্ড
৩০৮=
অপরাধজনক নরহত্যার চেষ্টা
অপরাধজনক নরহত্যা উদ্যেগে আহত হলে
৩০৯=আতœহত্যা করার চেষ্টা(অঃঃবসঢ়ঃ ঃড় পড়সসরঃ ংঁরপরফব)

জালিয়াতি কি? মিথ্যা দলিল প্রণয়ন বলতে কি বুঝ? উদাহরণসহ ব্যাখ্যা কর। কোন কোন ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি নিজ নাম সহি জালিয়াতির পর্যায় পড়ে?


খুন করা সবচেয়ে বড় ফৌজদারী অপরাধ। বাংলাদেশের দন্ডবিধি অনুযায়ী খুনের শাস্তি সর্বোচ্চ মৃত্যুদন্ড পর্যন্ত হতে পারে। তবে এ বিধানেরও কিছু ব্যতিক্রম আছে।
দন্ডবিধির ১০০ ধারা অনুযায়ী যদি কাউকে খুন করা হয় তবে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না।
তবে এ ধারাটি তখনই প্রয়োগ করা যাবে যখনঃ
১) যদি কোন লোক আপনার উপর এমন আঘাত করতে উদ্ধ্যত হয় যার ফলে ন্যায় সঙ্গতভাবেই আপনার এরূপ আশংকার সৃষ্টি হয় যে, আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করে সে আঘাতকে প্রতিহত না করলে আপনার মৃত্যু অনিবার্য।
২) যদি কোন লোক আপনাকে এমন আঘাত বা আক্রমণ করে যার ফলে ন্যায় সঙ্গতভাবেই এরূপ আশাংকার সৃষ্টি হয় যে, সে আঘাত বা আক্রমণের ফলে আপনার গুরুতর আহত হওয়া অনিবার্য।
৩) আপনি যদি স্ত্রীলোক হন এবং আপনাকে যদি কেউ ধর্ষণ করতে আসে। (অর্থাৎ স্ত্রীলোক তার ইজ্জত রক্ষার্থে ধর্ষণে উদ্ধত লোকের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারেন।)
৪) যদি কেউ কোন অস্বাভাবিক কামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে আঘাত বা হামলা করে।
৫) যদি কোন লোক কোন শিশু বা নারীকে অপহরণের উদ্দেশ্যে আঘাত বা হামলা করে।
৬) যদি আপনাকে কেউ বেআইনীভাবে আটক করতে উদ্যত হয় এমন পরিস্থিতিতে আপনার ন্যায় সঙ্গতভাবে আশংকা হয় যে, আপনি আটক হলে সরাসরি কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে আপনি আর উদ্ধার হতে পারবেন না, তখন আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করা যাবে।
এইতো গেল দেহরক্ষার ক্ষেত্রে আপনার খুন করার অধিকার।
আর সম্পত্তি রক্ষার ক্ষেত্রে আপনাকে খুন করার অধিকার দেয়া হয়েছে দন্ডবিধির ১০৩ ধারায় ।
এ ধারায়ও আপনার কষ্টার্জিত সম্পত্তিতে যদি-
১) দস্যুদের দ্বারা লুন্ঠনের উপক্রম হয়,
২) রাত্রিকালে আপনার গৃহে কেউ বেআইনী প্রবেশ করে,
৩) কোন গৃহ, তাঁবু বা যানবাহনে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়, যদি সে গৃহ, তাঁবু বা যানবাহন কোন মানুষের বাসস্থান হিসেবে অথবা সম্পত্তি রাখার জায়গা হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে,
৪) যদি কোন লোক চুরি করার উদ্দেশ্যে আপনার গৃহে অনধিকার প্রবেশ করে। চুরি করার সুবিধার জন্য আপনাকে গুরুতর আঘাত করতে উদ্ধত হয় এবং আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার প্রয়োগ না করলে আপনার মৃত্যু বা গুরুতর আঘাত অনিবার্য, প্রভৃতি ক্ষেত্রে আত্মরক্ষার জন্য মৃত্যু ঘটানো পর্যন্ত ক্ষমতা আইন আপনাকে দিয়েছে।
তবে আইন এও বলেছে (দঃ বিঃ ৯৯ ধারায়) আত্মরক্ষার জন্য যতদুর পর্যন্ত ক্ষতিসাধন করা প্রয়োজন তার বেশী ক্ষতি সাধন করা যাবে না।


ছঁবংঃরড়হ ণবধৎ ংড়ষাবফ
প্রশ্ন-১ ”দোষী মন” বলতে কি বোঝায়? একটি অপরাধ সংঘটনে কখন দোষী মন অত্যাবশ্যকীয় এবং কখন নয়? কেন আইন সম্পর্কে অজ্ঞতা ফৌজদারী অপরাধের দায়মুক্তির অজুহাত নয়?-যুক্তি দেখাও।





**মিথ্যা মামলা: আইন কী বলে?

আদালতের মৌলিক কাজ হচ্ছে অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে এসে শাস্তি বিধান করা এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্টা করা। আইনের আশ্রয় নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি সুবিচার পাবে এটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু মাঝে মাঝে দেখা যায় প্রতিপক্ষকে সামাজিকভাবে হেয় করতে বা হয়রানি করতে মিথ্যা মামলা রুজু করা হয়।

পত্রিকার পাতা খুললেই চোখে পড়ে এ ধরনের খবর। সাক্ষী সাজিয়ে মামলা উপস্থাপন করায় প্রতিপক্ষ হয়রানির মুখোমুখো হন । এছাড়া মামলা চালাতে গিয়ে অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হন। আমরা দেখার চেষ্টা করব এ সম্পর্কে আইন কী বলে।

ফৌজদারী কার্যবিধির ২৫০ ধারা উপধারা (১) অনুসারে কোন মামলা যদি নালিশের মাধ্যমে অথবা পুলিশের বা ম্যাজিষ্ট্রেট কাছে তথ্য প্রদান করার মাধ্যমে করা হয় এবং পরবর্তীতে যদি ম্যাজিষ্ট্রেট অভিযুক্ত বা একাধিক অভিযুক্তের কাউকে খালাস দেন এবং ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে প্রতীয়মান হয় যে , অভিযোগগুলো মিথ্যা ও হয়রানিমূলক তাহলে কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না এই মর্মে উক্ত অভিযোগকারীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে পারেন।

অভিযোগকারী আদালতে অনুপস্থিত থাকলে আদালত হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর জন্য সমন জারী করতে পারেন ।

উপধারা (২) অনুসারে, অভিযোগকারী কারণ দর্শানোর পর ম্যাজিষ্ট্রেট যদি মনে করেন আনীত অভিযোগগুলো মিথ্যা ও হয়রানিমূলক তাহলে সর্বোচ্চ ১০০০ হাজার টাকা জরিমানা করতে পারেন।

এক্ষেত্রে তৃতীয় শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট হলে জরিমানার পরিমাণ হবে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা। জরিমানার অর্থটি মামলায় বিবাদীকে পরিশোধ করতে হবে।

জরিমানা অনাদায়ে ম্যাজিষ্ট্রেট সর্বোচ্চ ৩০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করতে পারেন।

এছাড়া খধি ড়ভ ঞড়ৎঃং অনুসারে বিদ্বেষপরায়ণ মামলার ক্ষেত্রে প্রতিকার পেতে চাইলে বাদীকে প্রমাণ করতে হবে যে,

(ক) বিবাদী তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল

(খ) পূর্বের মামলার প্রকৃতি দেখে মনে হয় , মামলাটি বাদীর অনুকূলে শেষ হতে পারত

(গ) মামলাটি যুক্তিসংগত এবং সম্ভাব্য কারণ ছাড়া করা হয়েছিল

(ঘ) মামলাটি বিদ্বেষবশত করা হয়েছিল

(ঙ) মামলার ফলে বাদীর ক্ষতি হয়েছে

এখানে উল্লেখ্য যে, কোন মামলায় যদি কাউকে দণ্ডিত করা হয়, তবে দণ্ডিত ব্যক্তি ঐ দণ্ডাদেশকে বিদ্বেষবশত বলে বাদীর বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে না।
দণ্ডবিধির ১৯৩ ধারা অনুসারে বিচারিক প্রক্রিয়ার কোন পর্যায়ে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা সাক্ষ্য দিলে বা সাক্ষ্য বিকৃত করলে ঐ ব্যক্তি সাত বছরের কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন। বিচারিক প্রক্রিয়া ছাড়া অন্য ক্ষেত্রে মিথ্যা সাক্ষ্য দিলে বা সাক্ষ্য বিকৃত করলে তিন বছরের কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।

দণ্ডবিধিরি ১৯৪ ধারা অনুসারে যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা সাক্ষ্য বা সাক্ষ্য বিকৃত করে মৃত্যুদণ্ডযোগ্য কোন অপরাধে কাউকে দণ্ডিত করায়, সেক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন । এক্ষেত্রে মিথ্যা সাক্ষ্য বা সাক্ষ্য বিকৃত করার ফলে যদি নির্দোষ ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়, তাহলে মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদানকারী মৃত্যুদণ্ড বা ১৯৪ ধারায় বর্ণিত অন্যান্য দণ্ডে দণ্ডিত হবেন ।

দণ্ডবিধির ১৯৫ ধারায় উল্লেখ আছে, যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা সাক্ষ্য বা সাক্ষ্য বিকৃত করে কাউকে এমন কোন অপরাধে দণ্ডিত করায় যার শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা সাত বছরের কারাদণ্ড, তাহলে উক্ত ব্যক্তিও সমদণ্ডে দণ্ডিত হবেন ।

এছাড়াও তথ্য প্রমাণ গোপন করা, অপরাধ সংগঠনের মিথ্যা সংবাদ প্রদান করাও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এসব ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি ক্ষতিপূরণ আদায়ের মামলাও করতে পারেন।
খুন বা হত্যা এবং তার শাস্তি

ইদানীং প্রায় ঘটছে মানুষ হত্যা তথা খুনের ঘটনা । এমন কোন দিন বাদ যাচ্ছে না খবরের শিরোনাম পর শিরোনাম হচ্ছে এই হত্যাকান্ড । পারিবারিক সহিংসতার পাশাপাশি  দেশের রাজনীতিতে প্রতিপক্ষ কে খুন করা যেন স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। তাছাড়া বিস্তর  অভিযোগ উঠছে বিনা বিচারে রাস্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে একের পর এক খুনের ঘটনা । আমাদের কাছেও এই হত্যা খুন গুম প্রভৃতি শব্দ আজকাল স্বাভাবিক হয়ে দাড়িয়েছে । কারো  কোন মাথাব্যথা নেই । অথচ দেশে আইন,আদালত সংবিধান সবই রয়েছে ।
যাহোক পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম পাপ হল হত্যা। হাবীল ও কাবীলের ঘটনা এক্ষেত্রে জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। সেই সভ্যতার আদিকাল থেকে আজ পর্যন্ত এই হত্যা তথা খুনের ঘটনা চলমান ।
মানুষ ইচ্ছায়, অনিইচ্ছায় ,ভুলবশত, প্ররোচিত বা প্রভাবিত  ,কারণবশত হয়ে এই হত্যাকান্ড ঘটায় । কেন ঘটায় সেটা নিয়ে নানান ব্যখা- বিশ্লেষণ থাকলেও,এক কথায় আমরা বলতে পারি যে ,
যেকোনো উপায়ে মানুষের প্রাণনাশ তথা চিরতরে দুনিয়া থেকে বিদায় করার নামই হল একথায় হত্যা বা খুন ।
আমাদের দেশে প্রচলিত দন্ডবিধি ৩০০ ধারায়  খুন সম্পর্কে চারটি বিষয় বলা হয়েছে,
এক,
সেই সকল ক্ষেত্রসমূহ ছাড়া শাস্তিযোগ্য নরহত্যা খুন বলে গণ্য হবে, যদি যে কার্যের ফলে মৃত্যু সংঘটিত হয় সে কার্যটি মৃত্যু সংঘটনের অভিপ্রায়ে সম্পাদিত হয়;
দুই ,
যদি কাজটি এইরূপ দৈহিক জখম করার উদ্দেশ্যে সম্পাদিত হয়, যা যে ব্যক্তির ক্ষতি সাধন করা হয় তার মৃত্যু ঘটাতে পারে বলে অপারাধকারীর জানা থাকে;
 তিন,
যদি কোন ব্যক্তিকে দৈহিক জখম করার অভিপ্রায়ে কাজটি সম্পাদিত হয় এবং অভিষ্ট দৈহিক জখমটি প্রাকৃতিক স্বাভাবিক অবস্থায় অনুরূপ মৃত্যু ঘটাবার জন্য যথেষ্ট হয়;
  চার,
যদি উক্ত কার্য সম্পাদকারী ব্যক্তি অবগত থাকে যে, কাজটি এত আসন্ন বিপজ্জনক যে, খুব সম্ভবত মৃত্যু ঘটাবে অথবা এরূপ দৈহিক জখম ঘটাতে পারে এবং মৃত্যু সংগঠনের বা পূর্বোক্ত জখম ঘটাবার ঝুকি লওয়ার অজুহাত ছাড়াই অনুরূপ কার্য সম্পাদন করে।
উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়,
(ক), মি: করিম হত্যার উদ্দেশ্যে মি:রহিমকে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করল। যার ফলে মি: রহিম তাৎক্ষনিক মারা যায়।
(খ),মি: করিম গুলি ভর্তি পিস্তল নিয়ে জনতার উদ্দেশ্য গুলি ছুড়ল। যার ফলে মি: রহিম মারা যায় । মি: করিম হত্যার দায়ে অভিযুক্ত যদিও তার ইচ্ছা ছিলনা মি: রহিম কে হত্যা করা।
তবে দণ্ডবিধি ৩০০ ধারার কিছু ব্যাতিক্রম রয়েছে ;
বলা হয়েছে যে,শাস্তিযোগ্য নরহত্যা খুন বলে গণ্য হবেনা,
√√ যদি মারাত্তক ও আকস্মিক প্ররোচনার ফলে অপরাধী আতœ সংযমশক্তি হারিয়ে ফেলে এবং যে লোক প্ররোচনা দান করেছে সেই লোকের অথবা ভুল বা দুর্ঘটনাক্রমে অন্য কোন লোকের মৃত্যু ঘটায় তাহলে শাস্তিযোগ্য নরহত্যা খুন বলে গণ্য হবেনা।
√√  যদি অপরাধী সরল মনে তার আতœরক্ষার বা সম্পত্তি রক্ষার ব্যাক্তিগত অধিকার প্রয়োগকরে কোনরূপ পুর্ব-পরিকল্পনা ছাড়া কারো মৃত্যু ঘটায়।
√√  যদি দোষী একজন সরকারী কর্মচারি বা সরকারী কর্মচারির সহায়তা কারী হিসাবে আইন অনুযায়ী তার কার্য সম্পাদন করতে গিয়ে কোনরূপ অসৎ উদ্দেশ্য ছাড়া প্রয়োজনীয় ও আইন সম্মত বলে সরল মনে বিশ্বাস করে কোন লোকের মৃত্যু ঘটায়।
√√  যদি অপরাধটি কোন আকস্মিক বিবাদের সময় আকস্মিক উত্তেজনার কারনে কোনরূপ পুর্ব-পরিকল্পনা ছাড়া ঘটে এবং অপরাধী কোন প্রকারের অন্যায় সুযোগ গ্রহণ না করে।
√√যদি যে লোকের মৃত্যু হয়,সেই লোক ১৮ বছরের বেশি বয়স্ক হয় এবং স্বেচ্ছায় স্বীয় সম্মতিক্রমে মৃত্যুবরন করে বা মৃত্যুর ঝুকি গ্রহণ করে।
  

অন্যদিকে রাষ্ট্রপতিকে আমাদের সংবিধানের ৪৯ নং অনুচ্ছেদে মতে ‘কোন আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত যেকোন দন্ডের মার্জনা, বিলম্বন ও বিরাম মঞ্জুর করিবার এবং যেকোন দন্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করিবার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকিবে।’
এটি করার উদ্দেশ্য হল, কোন নিরঅপরাধ ব্যক্তিকে রেহাই দেওয়ার জন্য । যে হয়তোবা আইনের চোখে অপরাধী সাব্যস্ত হয়েছে কিন্তু প্রক্ ত পক্ষে  সে তেমনটি নয় । কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ তার উল্টো । উক্ত অনুচ্ছেদের অপব্যবহার প্রতিটি সরকারের
আমলে আমরা দেখি । অনেক আতœস্বীক্ ত দাগী আসামীও দাপটের কারণে  মুক্তি পেয়ে যায় ।
মোটামুটি এই হল হত্যা বা খুন সম্পর্কে আইনের বিধান যা আমাদের দেশে প্রচলিত । এছাড়াও ঘটনার বিশ্লেষণে এবং ন্যায় বিচারের স্বার্থে অন্যান্য প্রচলিত বিদ্যমান আইনের ও প্রয়োগ করা যেতে পারে ।
সুতরাং আমাদের সকলের উচিৎ সকল প্রকার হত্যা বা খুন সম্পর্কিত কার্যকলাপ থেকে নিজেদের এবং অন্যদের বিরত রাখা । সর্বোপরি দেশের আইন আদালতের সম্মান প্রদর্শন রেখে যেকোন ব্যবস্থা তথা আইন গত সিদ্ধান্ত নেওয়া ।

খুন কি (ডযধঃ রং সঁৎফবৎ) ?
ধারা ৩০০
প্রথমত- অতঃপর সেই সকল ক্ষেত্রসমূহ ছাড়া শাস্তিযোগ্য নরহত্যা খুন বলে গণ্য হবে, যদি যে কার্যের ফলে মৃত্যু সংঘটিত হয় সে কার্যটি মৃত্যু সংঘটনের অভিপ্রায়ে সম্পাদিত হয়, অথবা
দ্বিতীয়ত- যদি কাজটি এইরূপ দৈহিক জখম করার উদ্দেশ্যে সম্পাদিত হয়, যা যে ব্যক্তির ক্ষতি সাধন করা হয় তার মৃত্যু ঘটাতে পারে বলে অপারাধকারীর জানা থাকে, অথবা
তৃতীয়ত- যদি কোন ব্যক্তিকে দৈহিক জখম করার অভিপ্রায়ে কাজটি সম্পাদিত হয় এবং অভিষ্ট দৈহিক জখমটি প্রাকৃতিক স্বাভাবিক অবস্থায় অনুরূপ মৃত্যু ঘটাবার জন্য যথেষ্ট হয়, অথবা
চতুর্থত- যদি উক্ত কার্য সম্পাদকারী ব্যক্তি অবগত থাকে যে, কাজটি এত আসন্ন বিপজ্জনক যে, খুব সম্ভবত মৃত্যু ঘটাবে অথবা এরূপ দৈহিক জখম ঘটাতে পারে এবং মৃত্যু সংগঠনের বা পূর্বোক্ত জখম ঘটাবার ঝুকি লওয়ার অজুহাত ছাড়াই অনুরূপ কার্য সম্পাদন করে।
উদাহরণঃ
ধ) ক, চ কে নিহত করার উদ্দেশ্যে তার প্রতি গুলিবর্ষণ করে ফলে চ এর মৃত্যু হয়। ক খুন করেছে।
ন) ক জানে যে, চ এমন একটি রোগে ভুগছে যে, একটি মাত্র আঘাতই তার মৃত্যু ঘটাতে পারে। জানা সত্ত্বেও ক চ কে এইরুপ আঘাত প্রদান করে ফলে চ এর মৃত্যু হয়। ক খুন করেছে বলে গণ্য হবে। যদিও এরুপ আঘাত কোন স্বাভাবিক সুস্থ লোকের মৃত্যু ঘটাবেনা। কিন্তূ চ এর এমন একটি রোগ আছে জানা সত্ত্বেও ক হত্যা করার জন্যে আঘাত প্রদান করে।


খুন কি (ডযধঃ রং সঁৎফবৎ) ?
ধারা ৩০০
প্রথমত- অতঃপর সেই সকল ক্ষেত্রসমূহ ছাড়া শাস্তিযোগ্য নরহত্যা খুন বলে গণ্য হবে, যদি যে কার্যের ফলে মৃত্যু সংঘটিত হয় সে কার্যটি মৃত্যু সংঘটনের অভিপ্রায়ে সম্পাদিত হয়, অথবা
দ্বিতীয়ত- যদি কাজটি এইরূপ দৈহিক জখম করার উদ্দেশ্যে সম্পাদিত হয়, যা যে ব্যক্তির ক্ষতি সাধন করা হয় তার মৃত্যু ঘটাতে পারে বলে অপারাধকারীর জানা থাকে, অথবা
তৃতীয়ত- যদি কোন ব্যক্তিকে দৈহিক জখম করার অভিপ্রায়ে কাজটি সম্পাদিত হয় এবং অভিষ্ট দৈহিক জখমটি প্রাকৃতিক স্বাভাবিক অবস্থায় অনুরূপ মৃত্যু ঘটাবার জন্য যথেষ্ট হয়, অথবা
চতুর্থত- যদি উক্ত কার্য সম্পাদকারী ব্যক্তি অবগত থাকে যে, কাজটি এত আসন্ন বিপজ্জনক যে, খুব সম্ভবত মৃত্যু ঘটাবে অথবা এরূপ দৈহিক জখম ঘটাতে পারে এবং মৃত্যু সংগঠনের বা পূর্বোক্ত জখম ঘটাবার ঝুকি লওয়ার অজুহাত ছাড়াই অনুরূপ কার্য সম্পাদন করে।
উদাহরণঃ
ধ) ক, চ কে নিহত করার উদ্দেশ্যে তার প্রতি গুলিবর্ষণ করে ফলে চ এর মৃত্যু হয়। ক খুন করেছে।
ন) ক জানে যে, চ এমন একটি রোগে ভুগছে যে, একটি মাত্র আঘাতই তার মৃত্যু ঘটাতে পারে। জানা সত্ত্বেও ক চ কে এইরুপ আঘাত প্রদান করে ফলে চ এর মৃত্যু হয়। ক খুন করেছে বলে গণ্য হবে। যদিও এরুপ আঘাত কোন স্বাভাবিক সুস্থ লোকের মৃত্যু ঘটাবেনা। কিন্তূ চ এর এমন একটি রোগ আছে জানা সত্ত্বেও ক হত্যা করার জন্যে আঘাত প্রদান করে।
দণ্ডবিধির ৩০০ ধারার ব্যাতিক্রম সমূহঃ
ব্যাতিক্রম ১) যেক্ষেত্রে শাস্তিযোগ্য নরহত্যা খুন হবেনাঃ যদি মারাত্তক ও আকস্মিক প্ররোচনার ফলে অপরাধী আতœ-সংযমশক্তি হারিয়ে ফেলে এবং যে লোক প্ররোচনা দান করেছে সেই লোকের অথবা ভুল বা দুর্ঘটনাক্রমে অন্য কোন লোকের মৃত্যু ঘটায় তাহলে শাস্তিযোগ্য নরহত্যা খুন বলে গণ্য হবেনা।
ব্যাতিক্রম ২) শাস্তিযোগ্য নরহত্যা খুন বলে গণ্য হবেনা, যদি অপরাধী সরল মনে তার আতœরক্ষার বা সম্পত্তি রক্ষার ব্যাক্তিগত অধিকার প্রয়োগকরে কোনরূপ পুর্ব-পরিকল্পনা ছাড়া কারো মৃত্যু ঘটায়।
ব্যতিক্রম ৩) শাস্তিযোগ্য নরহত্যা খুন বলে গণ্য হবেনা, যদি দোষী একজন সরকারী কর্মচারি বা সরকারী কর্মচারির সহায়তা কারী হিসাবে আইন অনুযায়ী তার কার্য সম্পাদন করতে গিয়ে কোনরূপ অসৎ উদ্দেশ্য ছাড়া প্রয়োজনীয় ও আইন সম্মত বলে সরল মনে বিশ্বাস করে কোন লোকের মৃত্যু ঘটায়।
ব্যাতিক্রম ৪) শাস্তিযোগ্য নরহত্যা খুন বলে গণ্য হবেনা, যদি অপরাধটি কোন আকস্মিক বিবাদের সময় আকস্মিক উত্তেজনার কারনে কোনরূপ পুর্ব-পরিকল্পনা ছাড়া ঘটে এবং অপরাধী কোন প্রকারের অন্যায় সুযোগ গ্রহণ না করে।
ব্যাতিক্রম ৫) শাস্তিযোগ্য নরহত্যা খুন বলে গণ্য হবেনা, যদি যে লোকের মৃত্যু হয়,সেই লোক ১৮ গর্ভপাতকরণ (ঈধঁংরহম সরংপধৎৎরধমব):
দণ্ডবিধি, ধারা: ৩১২৷ যদি কোন ব্যাক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে গর্ভবতী স্ত্রীলোকের গর্ভপাত করায় এবং সেই গর্ভপাত যদি সরল বিশ্বাসে উক্ত গর্ভবতী নারীর জীবন রক্ষার উদ্দেশ্যে না হয়ে থাকে, তবে সেই ব্যাক্তি তিন বত্সর পর্যন্ত যেকোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে, অথবা অর্থদণ্ডে, অথবা উভয়বিধ দণ্ডে দণ্ডিত হবে; এবং স্ত্রীলোকটি যদি আসন্ন প্রসবা হয় তবে সেই লোক (৭) সাত বৎসর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবে।
ব্যখ্যাঃ যে স্ত্রীলোক নিজেই নিজের অকাল গর্ভপাত করায় সে স্ত্রীলোক ও এই ধারার অর্থের অন্তর্ভুক্ত হবে।
ধারা: ৩১৩৷ স্ত্রীলোকের সম্মতি ব্যতিরেকে গর্ভপাত ঘটানো (ঈধঁংরহম সরংপধৎৎরধমব রিঃযড়ঁঃ ড়িসধহ'ং পড়হংবহঃ)
যদি কোন ব্যক্তি, পূর্ববর্তী ধারায় বর্ণিত অপরাধটি সংশ্লিষ্ট স্ত্রীলোকের সম্মতি ব্যতিরেকে সম্পাদন করে- স্ত্রীলোকটি আসন্ন প্রসবা হউক বা না হউক, সেই ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে কিংবা দশ বৎসর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবে।
বছরের বেশি বয়স্ক হয় এবং স্বেচ্ছায় স্বীয় সম্মতিক্রমে মৃত্যুবরন করে বা মৃত্যুর ঝুকি গ্রহণ করে।
দণ্ডবিধি, ধারা: ৩১৪৷ গর্ভপাত করানোর উদ্দেশ্যে কৃত কার্যের ফলে মৃত্যু (উবধঃয পধঁংবফ নু ধপঃ ফড়হব রিঃয রহঃবহঃ ঃড় পধঁংব সরংপধৎৎরধমব):
যদি কোন ব্যক্তি, কোন গর্ভবতী নারীর গর্ভপাত করানোর উদ্দেশ্যে এমন কোন কাজ করে, যার দ্বারা উক্ত নারীর মৃত্যু ঘটে, তবে উক্ত ব্যক্তি দশ বৎসর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবে।
যদি কাজটি উক্ত নারীর সম্মতি ছাড়া করা হয়ঃ
যদি উক্ত কাজটি নারীর সম্মতি ছাড়া সম্পাদিত হয়, তা হলে সেই ব্যাক্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে অথবা উপরোল্লিখিত দণ্ডে দণ্ডিত হবে ৷
ব্যাখ্যাঃ এই অপরাধের জন্য কাজটি মৃত্যু ঘটাতে পারে বলে অপরাধকারীর অবগতি অপরিহার্য নয়।
অথার্ত, উক্তরুপ গর্ভপাত ঘটানোর সময় স্ত্রীলোকটি মারা যেতে পারে বলে অপরাধকারী জানুক বা না জানুক অপরাধটি সংঘটিত হবে।
দণ্ডবিধি, ধারা: ৩১৫। শিশুর জীবন্ত ভুমিষ্ট হওয়ায় বাধা দান করা বা জন্মের পরেই যাতে মৃত্যু ঘটে, এই উদ্দশ্যে কৃত কোন কার্য ( অপঃ ফড়হব রিঃয রহঃবহঃ ঃড় ঢ়ৎবাবহঃ পযরষফ নবরহম নড়ৎহ ধষরাব ড়ৎ ঃড় পধঁংব রঃ ঃড় ফরব ধভঃবৎ নরৎঃয):
যদি কোন ব্যাক্তি কোন শিশুর জন্মের পুর্বে এমন কোন কাজ করে যাতে শিশুটি জীবিত অবস্থায় ভুমিষ্ট হতে না পারে অথবা জন্মের পরেই মৃত্যু ঘটে, এবং অনুরুপ কাজের ফলে শিশুটি মৃত অবস্থায় জন্মে বা জন্মের পরে মারা যায়-এবং উক্ত কাজটি সরল বিশ্বাসে মায়ের জীবন রক্ষা করার জন্য না হ্য়, তবে উক্ত ব্যক্তি দশ বৎসর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে অথবা অর্থদণ্ডে, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।

আঘাত কি? কখন তা গুরুতর আঘাতে পরিণত হয়? বলপূবক স্বীকারোক্তি আদায় কিংবা সম্পত্তি প্রত্যাপনেবাধ্য করার জন্য ইচ্চকৃত ভাবে আঘাতের শাস্তি বণনা কর।
আঘাত কাকে বলে ?
আঘাত সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে ৩১৯ ধারায়।গুরুতর আঘাতের বণনা দেওয়া হয়েছে ৩২০ ধারায়।মোট ৮ প্রকারের সংজ্ঞাভূক্ত করা আছে। ৮ প্রকারের সংজ্ঞাভূক্ত করা আছে।
আঘাত ও গুরুতর আঘাতঃ
দণ্ডবিধির ধারা ৩১৯ এ আঘাত সম্পর্কে বলা হয়েছে।এই ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোন লোক অপর কোন লোকের দৈহিক যন্ত্রণা, ব্যাধি বা অপরাগতা ঘটায়, তবে উক্ত লোক আঘাত করিয়াছে বলিয়া গণ্য হবে।
দণ্ডবিধির ধারা ৩২০ এ কোন কোন আঘাত, গুরুতর আঘাত বলে গণ্য হবে,তা নির্দিষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে। এই ধারা অনুসারে, কেবল নিম্নলিখিত আঘাতসমূহ গুরুতর বলে গণ্য হবে-
১) পুরুষত্বহীন করা।
২) যেকোন চোখের জ্যোতি বা দৃষ্টিশক্তি চিরতরে নষ্ট করা ।
৩) যেকোন কর্ণের শ্রবণশক্তি স্থায়ীভাবে নষ্ট করা।
৪) যে কোন অঙ্গ বা গ্রন্থির অনিষ্ট সাধন ।
৫) যে কোন অঙ্গ বা গ্রন্থির শক্তিসমূহ ধ্বংস করা বা চিরতরে খর্ব করা ।
৬) মাথা বা মুখমণ্ডল স্থায়ীভাবে বিকৃত করা ।
৭) কোন হাড় বা দাঁত ভাঙ্গা বা স্থানচ্যুত করা ।
৮) এমন কোন আঘাত যা জীবন সংশয় সৃষ্টি করে বা যাতে আহত লোক বিশ দিন পর্যন্ত দৈহিক যন্ত্রণা ভোগ করে বা সাধারণ কাজকর্ম করতে অপারগ হয় ।


দণ্ডবিধি ধারা ৩১৯। যদি কোন ব্যাক্তি অপর কোন ব্যাক্তির দৈহিক যন্ত্রণা,ব্যাধি বা অপরাগতা ঘটায় তবে উক্ত ব্যাক্তি আঘাত করেছে বলে গণ্য হবে।
ধারা- ৩২০।গুরুতর আঘাত কাকে বলেঃ কেবল নিম্ন লিখিত আঘাত সমূহকে গুরুতর আঘাত বলে গণ্য করা হবেঃ
এই ধারায় গুরুত্বর আঘাত বলতে কি বোঝায় তা বলা হয়েছে-
১ম, পুরুষত্বহীন করণ।
২য়, স্থায়ীভাবে যেকোন চোখের দৃষ্টিশক্তি বা জ্যোতি নষ্ট করণ।
৩য়, স্থায়ীভাবে যে কোন কানের শ্রবণশক্তি নষ্ট করণ।
৪র্থ, যেকোন অঙ্গ বা গ্রন্থির অনিষ্টসাধন।
৫ম, দেহের যেকোন অঙ্গের বা গ্রন্থির কর্মশক্তি নাশ বা স্থায়ী ক্ষতিসাধন।
৬ষ্ট, মাথা বা মুখমন্ডল স্থায়ী ভাবে বিকৃত করণ।
৭ম, যেকোন হাড় বা দাত ভাঙ্গা বা স্থানচ্যুত করণ।
৮ম, যে আঘাত আহত ব্যক্তিকে মেরে ফেলে না কিন্তু তার জীবন বিপন্ন করে বা যে আঘাতের ব্যথা বিশ দিনের বেশী স্থায়ী থাকে এবং এর ফলে আহত ব্যক্তি তার নিজের কাজ করতে অক্ষম হয়ে পড়ে ।



ধারা ৩২১। ইচ্ছাকৃত ভাবে আঘাত দান করাঃ যদি কোন ব্যক্তি উদ্দেশ্যমুলক ভাবে এমন কোন কাজ করে যার ফলে অন্য বাক্তি আহত হয় অথবা কাজটি করলে অপর ব্যাক্তি আহত হতে পারে বলে জানা সত্ত্বেও উক্ত কাজটি করে এবং এর ফলে কেউ আহত হয়, তবে উক্ত ব্যাক্তি ইচ্ছাকৃত ভাবে আঘাত করেছে বলে গণ্য হবে।
ধারা ৩২২। ইচ্ছাকৃত ভাবে গুরুতর আঘাত দান করাঃ যদি কোন ব্যাক্তি ইচ্ছাকৃত ভাবে আঘাত দান করে বা যে আঘাতটি দিতে পারে বলে জানে সে আঘাতটি যদি গুরুতর আঘাত হয় বা তার প্রদানকৃত আঘাতটি যদি গুরুতর আঘাত হয়, তবে উক্ত ব্যাক্তি ইচ্ছাকৃত ভাবে গুরুতর আঘাত দান করেছে বলে গণ্য হবে।

ধারা ৩২৩। ইচ্ছাকৃত ভাবে আঘাত দানের শাস্তিঃ যদি কোন ব্যক্তি, ৩৩৪ ধারায় বর্নিত ক্ষেত্র ব্যতিরেকে স্বেচ্ছাকৃতভাবে আঘাত দান করে, তবে উক্ত ব্যক্তি এক বছর পর্যন্ত যেকোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে অথবা এক হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ডে বা উভয়বিধ দন্ডে দন্ডিত হবে।
ধারা ৩২৪। ইচ্ছাকৃত ভাবে মারাত্মক অস্ত্র দ্বারা বা বিপজ্জনক উপায়ে আঘাত দান করাঃ
যদি কোন ব্যক্তি, ৩৩৪ ধারায় বর্নিত ক্ষেত্র ব্যতিরেকে অন্য কোন ক্ষেত্রে, গুলী ছুঁড়বার, ছুরিকাঘাত করার বা কর্তন করার যেকোন যন্ত্র, অথবা অন্য যেকোন যন্ত্র, যার ব্যবহারে মৃত্যু ঘটাবার সম্ভাবনা রয়েছে, অথবা আগুন বা উত্তপ্ত বস্তু কিংবা যেকোন বিষ দ্রব্য যা নিংশ্বাসের সাথে গ্রহণ করা, গলাধঃকরণ করা বা রক্তে গ্রহণ করা মানবদেহের পক্ষে ক্ষতিকর, অথবা যেকোন প্রাণীর সাহায্যে স্বেচ্ছাকৃতভাবে আঘাত প্রদান করে তবে, উক্ত ব্যক্তি তিন বছর পর্যন্ত যেকোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে, অথবা অর্থদণ্ডে বা উভয়বিধ দন্ডে দন্ডিত হবে।
ধারা ৩২৬। ইচ্ছাকৃত ভাবে মারাত্মক অস্ত্র দ্বারা বা বিপজ্জনক উপায়ে গুরুতর আঘাত দান করাঃ
যদি কোন ব্যক্তি, ৩৩৫ ধারায় বর্নিত ক্ষেত্র ব্যতিরেকে অন্য কোন ক্ষেত্রে, গুলী ছুঁড়বার, ছুরিকাঘাত করার বা কর্তন করার যেকোন যন্ত্র, অথবা অন্য যেকোন যন্ত্র, যার ব্যবহারে মৃত্যু ঘটাবার সম্ভাবনা রয়েছে, অথবা আগুন বা উত্তপ্ত বস্তু কিংবা যেকোন বিষ দ্রব্য যা নিংশ্বাসের সাথে গ্রহণ করা, গলাধঃকরণ করা বা রক্তে গ্রহণ করা মানবদেহের পক্ষে ক্ষতিকর, অথবা যেকোন প্রাণীর সাহায্যে স্বেচ্ছাকৃতভাবে গুরুতর আঘাত প্রদান করে তবে, উক্ত ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে অথবা দশ বছর পর্যন্ত যেকোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দন্ডিত হবে এবং তদুপরি অর্থদন্ডে ও দন্ডিত হবে।
ধারা ৩২৬ ক।স্বেচ্ছাকৃতভাবে দুইটি চোখ উপড়ে বা এসিড জাতীয় পদাথ দ্বারা চোখ দুইটির দৃষ্টি নষ্টকরণ বা মুখমন্ডল বা মস্তক এসিড দ্বারা বিকৃতিকরণ:যেব্যক্তি ৩৩৫ ধারায় বর্নিত ক্ষেত্র ব্যতিরেকে স্বেচ্ছাকৃতভাবে নিম্নবণিৃত উপায়ে-
ক)৩২০ ধারা দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে বণিৃত অপরাধ যে ক্ষেত্রে উভয চক্ষুর ব্যাপারে হয় উৎপাটন দ্বারা অথবা যেকোন ধরণের এসিড জাতীয় পদাথ কর্তৃক,কিংবা
খ)৩২০ ধারার ষষ্ঠ অনুচ্ছেদে বর্ণিত অপরাধ যে ক্সেত্রে কোন এসিড জাতীয় পদাথ দ্বারা কোন ব্যক্তিকে গুরুতর আঘাত করে, তবে সে ব্যক্তিকে মৃত্যুদ্ন বা যাবজ্জীবন কারাদন্ডে এবঙ অথদন্ডেও দন্ডিত করা হবে।
ধারা ৩২৫। ইচ্ছাকৃত ভাবে গুরুতর আঘাত প্রদানের শাস্তিঃ যদি কোন ব্যক্তি, ৩৩৫ ধারায় বর্নিত ক্ষেত্র ব্যতিরেকে অন্য কোন ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাকৃতভাবে গুরুতর আঘাত দান করে, তবে উক্ত ব্যক্তি সাত বছর পর্যন্ত যেকোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দন্ডিত হবে এবং তদুপরি অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হবে।
স্বামী বা স্ত্রীর জীবদ্দশায় পুনরায় বিবাহ করাঃ(গধৎৎুরহম ধমধরহ ফঁৎরহম ষরভব ঃরসব ড়ভ যঁংনধহফ ড়ৎ রিভব)
দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারাঃ যদি কোন ব্যক্তি এক স্বামী বা এক স্ত্রী জীবিত থাকা সত্ত্বেও এমন কোন পরিস্থিতিতে বিবাহ করে যা স্বামী বা স্ত্রী জীবিত থাকার জন্য অবৈধ বিয়ে বলে গণ্য হয়েছে, তবে উক্ত লোক সাত (৭) বৎসর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে তদুপরি অর্থ দণ্ডেও দণ্ডিত হবে।
ব্যতিক্রমঃ অনুরুপ স্বামী বা স্ত্রীর সাথে যে ব্যাক্তির বিবাহ কোন উপযুক্ত আদালত কর্তৃক নাকচ বলে ঘোষণা করা হয়েছে সেই ব্যাক্তির ক্ষেত্রে এই ধারাটি প্রযোজ্য হবে না।
ধারা ৩১০ ঠগ কাকে বলে (ডযড় রং ঃযঁম) ?
যদি কোন লোক খুনের মাধ্যমে বা খুন সহ দস্যুতা করে বা শিশু অপহরণের জন্য এক বা একাধিক লোকের সাথে অভ্যাসগত ভাবে জড়িত থাকে, তবে সে একজন ঠগ।

ধারা ৩১১ ঠগের সাজাঃ
যদি কোন লোক ঠগ হয়, তবে সেই লোক যাবজ্জীবন কারা দণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং তদুপরি অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবে।
ব্যভিচার কাকে বলে ? (ডযধঃ রং অফঁষঃবৎু ?)
দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারাঃ যদি কোন ব্যাক্তি অন্য কোন ব্যাক্তির স্ত্রীর সাথে বা যাকে সে অন্যের স্ত্রী বলে জানে অথবা অন্যের স্ত্রী বলে বিশ্বাস করার কারণ থাকা সত্ত্বেও সে ঐ ব্যাক্তির সম্মতি ও সমর্থন ছাড়া তার স্ত্রীর সাথে এমন যৌন সঙ্গম করে যা নারী ধর্ষনের সামিল নয়, তবে সে ব্যাক্তি ব্যভিচারের অপরাধের জন্য দোষী হবে এবং তাকে (৫) পাচ বৎসর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে অথবা অর্থদণ্ডে, অথবা উভয়বিধ দণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে। অনুরুপ ক্ষেত্রে স্ত্রী লোকটি দুষ্কর্মের সহায়তাকারি হিসাবে দণ্ডিত হবে না।

সর্বোচ্চ শাস্তি: সবচেয়ে বড় বা কঠোর শাস্তিকে সর্বোচ্চ শাস্তি বলা হয়। সর্বোচ্চ শাস্তি বলতে আমরা বুঝি মৃত্যুদন্ড। দন্ডবিধি আইনের ৩০৩ ধারার বর্ণনানুযায়ী যদি কোন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তিকে হত্যা বা খুন করে তাহলে সেই ব্যক্তি যাবজ্জীবন অথবা মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হবেন। ইহাই দন্ডবিধি আইনের সর্বোচ্চ শাস্তি।
সর্বোনিম্ন শাস্তি: দন্ডবিধি আইনের ৫১০ ধারার বর্ণনানুযায়ী যদি কোন ব্যক্তি মাতাল অবস্থায় কোন প্রকাশ্য স্থানে অশোভন আচরন করে কিংবা কোন স্থানে অনধিকার প্রবেশ করে সেই ব্যক্তির ২৪ ঘন্টা বিনাশ্রম কারাদন্ড বা ১০ টাকা অর্থ দন্ড বা উভয়বিধ দন্ডে দন্ডিত হবেন। ইহা দন্ডবিধি আইনের সর্বনিম্ন শাস্তি।
আত্মহত্যায় সহায়তা বা প্ররোচনা দান
দণ্ডবিধি এর ধারা-৩০৬ এর অধীনে,যদি কোন লোক আত্মহত্যা করে,তবে যে লোক আত্মহত্যায় সহায়তা বা প্ররোচনা দান করিবে,উক্ত লোক দশ বছর পর্যন্ত মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবে এবং তদুপরি অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হইবে।
অন্যদিকে,দণ্ডবিধি এর ধারা-৩০৫ এর অধীনে যদি,আত্মহত্যাকারী এর বয়স ১৮ বছরের নিচে হয়,উম্মাদ লোক হয়,প্রলাপগ্রস্ত লোক হয়,নির্বোধ লোক হয়,বা কোন লোক যদি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় আত্মহত্যা করে,আত্মহত্যায় সহায়তাকারী অথবা প্ররোচনা দান কারী মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে অথবা অনধিক দশ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবে এবং তদুপরি অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হইবে।

ডাকাতি
বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩৯১ ধারা মোতাবেক যদি ৫ বা ততোধিক লোক মিলিতভাবে দস্যুতা করে বা দস্যুতা সংঘটনের চেষ্টা করে, অথবা যদি কোন ক্ষেত্রে মিলিতভাবে দস্যুতা সংঘটনের চেষ্টা করে, অথবা যদি কোন ক্ষেত্রে মিলিতভাবে দস্যুতা সংঘটন প্রচেষ্টারত লোকের ও অনুরুপকার্যে বা প্রচেষ্টায় সহায়াতকারি লোকের সংখ্যা ৫ বা ততোধিক হয়, তবে অনুরুপকার্য সংঘটনকারী বা প্রচেষ্টাকারি বা সহায়তাকারী প্রত্যেক লোক ডাকাতি করিতেছে বলিয়া গণ্য হইবে। বাংলাদেশে দণ্ডবিধির ৩৯৫ ধারা মোতাবেক যদি কোন লোক ডাকাতি করে, তবে উক্ত লোক যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে অথবা ১০ বৎসর পর্যন্ত যেকোন মেয়াদের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবে এবং তদুপরি অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হইবে। ডাকাতির অপরাধ আমলযোগ্য, জামিনযোগ্য নয়, মীমাংসাযোগ্য নয়, দায়রা আদালত কর্তৃক বিচার্য। দণ্ডবিধির ৩৯৬ ধারা মোতাবেক যদি মিলিতভাবে ডাকাতি অনুষ্ঠানকালে ৫ বা ততোধিক লোক, যে কোন একজন অনুরূপ ডাকাতি অনুষ্ঠানকালে খুন করে, তবে তাহাদের প্রত্যেকে মৃত্যুদণ্ডে, অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে, অথবা ১০ বৎসর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবে এবং তদুপরি অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবে। খুনসহকারে ডাকাতির অপরাধ আমালযোগ্য, জামিনযোগ্য নয়, দায়রা আদালত কর্তৃক বিচার্য। দণ্ডবিধির ৩৯৯ ধারা অনুসারে যদি কোন লোক ডাকাতি অনুষ্ঠানের জন্য কোনরূপ প্রস্তুতি গ্রহন করে, তবে উক্ত লোক ১০ বৎসর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদে সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবে এবং তদপুরি অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হইবে।
বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩৪ দ্বারা অনুসারে যখন কতিপয় লোক একত্রিত হইয়া তাহাদের সকলের একই অভিপ্রায় পূরণকল্পে অপরাধমূলক কার্য সম্পাদিত করে, তখন অনুরূপ লোকগনের প্রত্যেককেই উক্ত কার্যের জন্য এইরূপে দায়ী হইবেন যেন উক্ত কার্য উক্ত লোক কর্তৃক সম্পাদিত হইয়াছিল। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী কোন অপরাধ সংঘটন করা হইলে সেইক্ষেত্রে পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে কেহ অপরাধ সংঘটন না করিলেও উক্ত অপরাধে অংশগ্রহণ করিবার জন্য প্রকৃত অপরাধীর ন্যায় সমান অপরাধী বলিয়া গণ্য হইবে। বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩৪ ধারার বিধান হইতেছে অনুরূপ একটি আইন।
আদেশ, আদালতের নিষ্পত্তি। দেওয়ানী কার্যবিধির ২(২) ধারাতে ডিক্রির সংজ্ঞা প্রদান করা হইয়াছে। এই ধারা মতে, বিষয় বস্তু বা প্রসঙ্গের পতিকূল কোন কিছু না থাকিলে অত্র আইনে ডিক্রি বলিতে আদালত কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারিত প্রকাশিত এমন সিদ্ধান্ত বুঝায়, যাহা মামলার বিতর্কিত সমস্থ বা যেকোন বিষয় সম্পর্কে পক্ষসমূহের অধিকার নির্ধারণ করে এবং ইহা প্রাথমিক বা চূড়ান্ত হইতে পারে। আর্জি বাতিল এবং ১৪৪ ধারায় বর্ণিত কোন প্রশ্ন নির্ধারণেও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে, তবে নিম্নলিখিত বিষয় সমূহ ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না। ক) যে ন্যায় নির্ণয়কারী রায়ের রিরুদ্ধে আপীলের মতো আপীল করা যাইতে পারে; অথবা খ) যেকোন নির্দেশ পালনের ব্যর্থতার জন্য কোন খারিজের আদেশ।
সর্বোচ্চ শাস্তি: সবচেয়ে বড় বা কঠোর শাস্তিকে সর্বোচ্চ শাস্তি বলা হয়। সর্বোচ্চ শাস্তি বলতে আমরা বুঝি মৃত্যুদন্ড। দন্ডবিধি আইনের ৩০৩ ধারার বর্ণনানুযায়ী যদি কোন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তিকে হত্যা বা খুন করে তাহলে সেই ব্যক্তি যাবজ্জীবন অথবা মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হবেন। ইহাই দন্ডবিধি আইনের সর্বোচ্চ শাস্তি।
সর্বোনিম্ন শাস্তি: দন্ডবিধি আইনের ৫১০ ধারার বর্ণনানুযায়ী যদি কোন ব্যক্তি মাতাল অবস্থায় কোন প্রকাশ্য স্থানে অশোভন আচরন করে কিংবা কোন স্থানে অনধিকার প্রবেশ করে সেই ব্যক্তির ২৪ ঘন্টা বিনাশ্রম কারাদন্ড বা ১০ টাকা অর্থ দন্ড বা উভয়বিধ দন্ডে দন্ডিত হবেন। ইহা দন্ডবিধি আইনের সর্বনিম্ন শাস্তি।
প্ররতারণা‬
সাধারণভাবে নিজ স্বার্থের জন্য বা অপরের ক্ষতি করার জন্য ইচ্ছাকৃত ফাঁকিকে প্রতারণা হিসেবে অভিহিত করা যায়। যে ব্যক্তি ফাঁকি দিয়ে বা অসাধুভাবে অন্য কোন ব্যক্তিকে কোন সম্পত্তি সমর্পণ করতে বা কোন ব্যক্তির সম্পত্তি সংরক্ষণের ব্যাপারে সম্মতি দান করতে প্ররোচিত করে, কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে কোন কাজ করতে বা সেটা থেকে বিরত থাকতে প্রবৃত্ত করে যা ফাঁকি প্রদত্ত না হলে করত না বা সেটা করা থেকে বিরত থাকতো না এবং যে কাজ বা বিরতি উক্ত ব্যক্তির দেহ, মন, সুনাম বা সম্পত্তির ক্ষতি বা অনিষ্ট সাধন করে বা করার সম্ভাবনা রয়েছে সেই ব্যক্তি প্রতারণা করেছে বলে বিবেচিত হবে।
অপরের রূপ ধারণ, অসাধুভাবে সম্পত্তি সমর্পণ করা বা অসাধুভাবে তথ্য গোপন করাও প্রতারণার অন্তর্ভুক্ত হবে। শুধুমাত্র ফাঁকি প্রতারণা হিসেবে বিবেচিত হবেনা। প্রতারণা প্রমাণ করার জন্য অসৎ উদ্দেশ্য বা প্রতারণা করার অভিপ্রায় থাকতে হবে।
দণ্ডবিধির ৪১৭ ধারা অনুযায়ী যে ব্যক্তি প্রতারণা করে, সেই ব্যক্তি যেকোনো বর্ণনার কারাদণ্ডে যার মেয়াদ এক বছর পর্যন্ত হতে পারে বা অর্থদণ্ডে বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে। অপরের রূপ ধারণপূর্বক প্রতারণা এবং স্বার্থ রক্ষা করতে বাধ্য হওয়া সত্ত্বেও ক্ষতি হতে পারে জেনে প্রতারণা করার জন্যও রয়েছে শাস্তির বিধান।
বাংলাদেশ দন্ডবিধি-১৮৬০ অনুযায়ী যে সব অপরাধের জন্য আপনার মৃত্যুদন্ড দেয়া হতে পারে:-
১.বাংলাদেশের বিরোদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা বা এমন উদ্যাোগ করা বা সহায়তা করা।
২.বিদ্রোহে সহায়তা করা বা সামরিক বাহিনীতে বিদ্রোহ সংগঠিত করা।
৩.মৃত্যুদন্ড যোগ্য অপরাধের দন্ডবিধান করানোর উদ্দেশ্যে মিথ্যা সাক্ষ দেয়া বা উদ্ভাবন করা।
৪.খুন।
৫.শিশু ও উন্মাদ ব্যক্তির আত্মহত্যায় সহায়তাকরণ।
৬.খুনের উদ্দ্যোগ বা খুনের চেষ্টা করা।
৭.খুন সহ ডাকাতি।
চুরি, দস্যুতা, ডাকাতি ও গণডাকাতির আইনগত ব্যাখ্যা দেন এবং আমাকে উদ্দেশ্য করে উক্ত বিষয়গুলির আইনগত সংজ্ঞা ও ব্যাখ্যা দিয়ে তরুণ সাংবাদিকদের অবগতির জন্য পত্রিকায় লেখার জন্য অনুরোধ করেন। যদি কোন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তির অধিকার বা দখল থেকে তার সম্মতি ব্যতীত কোন অস্থাবর সম্পত্তি অসাধুভাবে গ্রহন করার উদ্দেশ্যে অপসারণ করে তবে সে ব্যক্তি চুরি করেছে বলে গণ্য হবে। দন্ডবিধির ৩৭৯ ধারা অনুযায়ী চুরির শাস্তি তিন বছর পর্যন্ত সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদন্ড বা জরিমানা দন্ডা বা উভয় দন্ড। বাসগৃহ,তাবু,যান ইত্যাদি থেকে চুরির শাস্তি দন্ডবিধির ৩৮০ অনুযায়ী সাত বছর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং অর্থদন্ড । হত্যা,জখম ইত্যাদি করার প্রস্তুতি নিয়ে চুরির শাস্তি দন্ডবিধির ৩৮২ ধারা অনুযায়ী দশ বছর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম কারাদন্ড এবং অর্থদন্ড। কোন ব্যক্তি চুরি করার উদ্দেশ্যে মালামাল নিয়ে যাওয়ার সময় বা চেষ্টায় যদি মৃত্যু,জখম বা অন্যায় নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে বা করার ভয় সৃষ্টি করে সে চুরি হবে দস্যুতা। যদি পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তি যুক্তভাবে দস্যুতা করে তবে তা হবে ডাকাতি। দন্ডবিধির ৩৯৩ ধারা অনুযায়ী দস্যুতার চেষ্টার শাস্তি সাত বছর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ড। ৩৯৪ ধারা অনুযায়ী দস্যুতার শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ড বা দশ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ড। ৩৯৫ ধারা অনুযায়ী ডাকাতির শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ড বা দশ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ড। চার জন মিলে যদি গাড়ী ডাকাতি করে তবে তা আইনের সংজ্ঞা অনুযায়ী হবে দস্যুতা। তাকে ডাকাতি বা গণডাকাতি বলা যাবে না।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদে উল্লেখ আছে, (১) প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ এবং জনগণের পক্ষে সেই ক্ষমতার প্রয়োগ কেবল এই সংবিধানের অধীন ও কর্তৃত্বে হবে।(২) জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তিরূপে এই সংবিধান প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন এবং অন্য কোন আইন যদি এই সংবিধানের সাথে অসামঞ্জস্য হয়, তবে সেই আইনের যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ ততখানি বাতিল হবে। এই অনুচ্ছেদে আমরা পেলাম সংবিধানই হচ্ছে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন।
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে উল্লেখ আছে, (১) চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দান করা হল। (২) রাষ্ট্রের নিরাপত্তা,বিদেশী রাষ্ট্রসমূহের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, জনশৃঙ্খলা, শালীনতা বা নৈতিকতার স্বার্থে বা আদালত অবমাননা, মানহানি বা অপরাধ সংঘটনে প্ররোচনা সম্পর্কে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ সাপেক্ষে–(ক) প্রত্যেক নাগরিকের বাক্ ও ভাবপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের, এবং (খ) সংবাদক্ষেত্রের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দান করা হল। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন সংবিধানের এই অনুচ্ছেদ সাংবাদিকদের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করেছে কিছু শর্তসাপেক্ষে। শর্তগুলো হল, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা হুমকীর মূখে পড়ে বা বিদেশী রাষ্ট্রসমূহের সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নষ্ট হয় এমন সংবাদ সত্য হলেও ছাপা যাবে না। জনশৃঙ্খলা নষ্ট হতে পারে এমন সংবাদ প্রকাশ করা যাবে না। যেমন পবিত্র কোরআন নিয়ে অশালীন ছবি একটি ওয়েবসাইটে প্রচার করা হয়েছে তা উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রচার করার পর বৌদ্ধদের বাড়ীঘর ও মন্দিরে নজিরবিহীন হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল। শালীনতা ও নৈতিকতা বিরোধী সংবাদ প্রচার করা যাবে না। আদালত অবমাননাকর সংবাদ প্রচার করা যাবে না। ১৯২৬ সালের আদালত অবমাননা আইনে আদালত অবমাননার স্পষ্ট সংজ্ঞা না থাকায় ২০১৩ সালে নতুন আদালত অবমাননা আইন তৈরী করে সংসদে পাশ করা হয় যা একটি মামলায় মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ বাতিল করে দিয়েছেন। তারপরও আদালত অবমাননাকর কিছু করা এখনও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যে সংবাদে জনসমক্ষে আদালতের মান মর্যাদা, বিশ্বাসযোগ্যতা ও ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে সে ধরনের সংবাদ ইচ্ছাকৃতভাবে প্রচার করা উচিৎ নয় বা করা যাবে না। অপরাধ সংঘটনে প্ররোচনা দিতে পারে সে ধরনের স্পর্শকাতর সংবাদ প্রচার করা যাবে না। যেমন উপজাতীয় চাকমারা একজন স্থানীয় বাঙ্গালী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে এই মিথ্যা সংবাদ প্রচার হওয়ার পর পার্বত্য এলাকায় অনেক চাকমা উপজাতীয়দের বাড়ীঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়। কোন ব্যক্তির মানহানিকর সংবাদ প্রচার করা যাবে না। সাংবাদিকবৃন্দ প্রায়ই যে ফৌজদারী মামলায় আসামী হন তা হল মানহানির মামলা। মানহানি কি? কিসে মানহানি হয় এবং কিসে হয় না তা দন্ডবিধির ৪৯৯ ধারায় উল্লেখ আছে। যদি কোন ব্যক্তি অপর কোন ব্যক্তির খ্যাতি বা সুনাম নষ্ট করার উদ্দেশ্যে বা তার খ্যাতি বা সুনাম নষ্ট হবে বলে জানা সত্ত্বেও বা তা বিশ্বাস করার কারণ থাকা সত্ত্ওে উচ্চারিত বা পঠিত হওয়ার উদ্দেশ্যে কথা দ্বারা বা চিহৃ দ্বারা বা দৃশ্যমান বস্তু বা প্রতীক দ্বারা সেই ব্যক্তি সম্পর্কিত কোন ঘটনার আরোপ করে  বা প্রকাশ করে তা হলে সেই ব্যক্তি উক্ত অপর ব্যক্তির মানহানি করেছে বলে গণ্য করা হবে। এই ধারায় চারটি ব্যাখ্যা, পনেরটি উদাহরণ ও দশটি ব্যতিক্রম আছে। মানহানির অপরাধের জন্য প্রকাশনা অপরিহার্য। যেখানে প্রকাশনা নাই সেখানে মানহানি নাই। আপন মনে নিন্দা করিলে তাতে কোন দোষ হয় না। এমনকি নিন্দাসূচক কিছু লিখলেও তা অপরাধ হবে না যদি না তা প্রকাশিত হয়। নিন্দামূলক কিছু লিখে নিজের কাছে রেখে দিলে তা অপরাধ হবে না। যার সম্পর্কে লেখা হয়েছে তার কাছে প্রেরণ করলেও মানহানির অপরাধ হবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত না তা কোন তৃতীয় ব্যক্তি বা জনসাধারণের চোখে নিন্দাবাদের কারণে হেয়প্রতিপন্ন না হন ততক্ষণ পর্যন্ত কোন কথা বা লিপি মানহানি বলে গণ্য হবে না।
যদি কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির মানহানি করে তবে দন্ডবিধির ৫০০ ধারার বিধান অনুযায়ী দোষী ব্যক্তিকে দুই বছর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের জন্য বিনাশ্রম কারাদন্ড বা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত করা যাবে। যদি কোন ব্যক্তি এমন কোন বস্তু মুদ্রণ করে বা খোদাই করে, যে বস্তু অপর কোন ব্যক্তির পক্ষে মানহানিকর বলে সে জানে বা সেরূপ বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ আছে, তবে সে ব্যক্তিকে দন্ডবিধির ৫০১ ধারা অনুযায়ী দুই বছর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের জন্য বিনাশ্রম কারাদন্ড বা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত করা যাবে। যদি কোন ব্যক্তি মুদ্রিত বা খোদাইকৃত এমন মানহানিকর বস্তুবিশিষ্ট কোন দ্রব্য বিক্রয় করে বা বিক্রয় করার জন্য উপস্থাপন করে, তবে সে ব্যক্তি দোষী সাব্যস্থ হলে দন্ডবিধির ৫০২ ধারা অনুযায়ী দুই বছর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের জন্য বিনাশ্রম কারাদন্ডে বা অর্থ দন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। উল্লেখিত আইনের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মহামান্য সুপ্রীমকোটের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ বিভিন্ন সময় একাধিক সিদ্ধান্ত দিয়েছেন যা দেশের বিভিন্ন আইন ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়েছে। সে সিদ্ধান্তগুলোও জজকর্তৃক তৈরী আইন (ঔঁফমব সধফব ষধ)ি হিসেবে নিু আদালতসহ সবার উপর বাইন্ডিং বা বাধ্যতামূলকভাবে মান্য।  ফৌজদারী আদালতে মানহানির মামলা দায়ের করতে হলে আগে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিকে প্রকাশিত সংবাদকে সত্য নয় দাবী করে প্রতিবাদ করে তা ছাপানোর জন্য প্রত্রিকার সম্পাদকের বরাবরে প্রতিবাদলিপি প্রেরণ করতে হবে। সংশোধনীর আগে ফৌজদারী কার্যবিধির বিধান অনুযায়ী মানহানির মামলায় প্রথম দিনেই ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেব ইচ্ছা করলে অভিযুক্ত আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা ইস্যু করতে পারতেন। কিšু— ২০১১ সালে ১নং আইন দ্বারা ফৌজদারী কার্যবিধির তপশীল সংশোধিত হওয়ার পর এখন প্রথমে ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেব আসামীর প্রতি সমন ইস্যু করতে পারবেন, গ্রেপ্তারী পরোয়ানা নয়।

3 comments:

  1. This comment has been removed by the author.

    ReplyDelete
  2. English word gulo font change howai pora jachche na please tik kore din

    ReplyDelete
  3. অত্যন্ত সুন্দর মামলা তদন্তকাজে ইহা খুবই জরুরী।

    ReplyDelete