Sunday 14 December 2014

Limitation Act ,1908

 

 

 

প্রশ্ন-১

তামাদি আইনের সংজ্ঞা দাও। তামাদি আইনের প্রয়োজনীয়তা ও উদ্দেশ্য কি? তামাদি আইন কি একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ আইন- আলোচনা কর।


তামাদি আইনের সংজ্ঞা:
তামাদি একটি আরবী শব্দ এর আভিধানিক অর্থ হলো কোন কিছু বিলুপ্ত হওয়া কিংবা বাধা প্রাপ্ত হওয়া।মূলত ১৯০৮ সালের তামাদি আইন একটি পদ্ধতিগত আইন। এই আইন একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের পরে কোন আইনগত অধিকারে এর বিলুপ্তি ঘটায়। কতদিনের মধ্যে কোন মামলার আপীল , রিভিউ বা রিভিশনের জন্য আদালতে দরখাস্ত পেশ করতে হবে। কখন বিলম্ব মৌকুফ করা যাবে ইত্যাদি বিষয় তামাদি আইনে নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।
মামলা মোকদ্দমা করার একটি নির্দিষ্ট সময় আছে।কোন মামলা ৩ বৎসর আবার কোন মামলা ১২ বৎসর মেয়দের মধ্যে করতে হয়। মামলার মত আপীলেরও একটি নির্দিষ্ট সময় আছে। তামাদি আইনের প্রথম তফসিলে উক্ত নির্ধারিত সময়সীমা বর্ণনা করা হয়েছে।
সুতরাং উপরোক্ত উল্লেখিত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, তামাদি আইন বলতে এমন একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ আইন যে আইন দ্বারা সকল প্রকার দাবী বা স্বত্বের দ্বন্দ্বকে অবিরাম গতিতে বৃদ্ধি যা দীর্ঘায়িত করার সুযোগ না দিয়ে বরং তা চিরদিনের জন্য নিস্পত্তি করায় সাহায্য করে।এরুপ ব্যবস্থাকে তামাদি আইন বলে।
তামাদি আইনের প্রয়োজনীতা:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের প্রয়োজনীয়তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
১) দেওয়ানী মোকদ্দমা , আপীল ও কতিপয় দরখাস্ত আদালতে দায়ের করার মেয়াদ সম্পর্কিত আইন একত্রীকরণ ও সংশোধন করা হয়।
২) দখলের দ্বারা ব্যবহার স্বত্বের ও অন্যান্য সম্পত্তির অধিকার অর্জনের নির্ধারিত সময়সীমা প্রণয়ন করা হয়।
৩) তামাদি আইনের সময় সীমার দ্বারা সমাজের বিবাদ নিস্পত্তির মাধ্যমে শান্তি শৃংখলা বজায় রাখা হয়।
৪) মামলার দীর্ঘসূত্রীতা জিয়য়ে না রেখে জনসাধারনের ভোগান্তি লাঘব করা হয়।
৫) মামলার জটিলতা অর্থাৎ বহুতা বা সময় এর সাশ্রয় করা হয়।
৬) মামলার দীর্ঘ সূত্রীতার বন্ধের জন্য অর্থের অপচয় রোধ করা হয়।
৭) প্রতারণামূলক কার্যক্রমকে প্রতিরোধ করা হয়।
৮) প্রতিষ্ঠিত অধিকার সংরক্ষনের জন্য সহায়তা করে অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হয়।
৯) সর্বোপরি তামাদি আইন দ্বারা সর্বপ্রকার দাবী ও স্বত্বের দ্বন্দ্বকে অবিরাম গতিতে দীর্ঘায়িত করে সুযোগ না দিয়ে বরং চির দিনের জন্য নিস্পত্তি করতে সাহায্য করে।
উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে,দেওয়ানী আইনে তামাদি আইনের প্রয়েজনীয়তা অপরিসীম।
তামাদি আইন একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ আইন কি না?
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের সুস্পষ্ট বিধান হল এই আইনের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে কোন মামলা, আপীল কিংবা দরখাস্ত আদালতে দাখিল না করলে পরবর্তীতে আদালত তা গ্রহন করবে না।
তামাদি আইনের ৩ ধারা হতে ২৫ ধারা পর্যন্ত বর্ণিত বিধান মোতাবেক যে কোন ধরণের মামলা আপীল কিংবা দরখাস্ত দাখিলের মেয়াদ সম্পর্কে সাধারণ নিয়মাবলী ব্যতিক্রম সহ উল্লেখ করা হয়েছে। এই আইনের মধ্যে ৫ধারায় তামাদি রেয়াত বা বিলম্ব মৌকুফের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তামাদি আইনের ২৮ ধারায় জবর দখলের মাধ্যমে স্থাবর সম্পত্তির মালিকানা স্বত্ব বিলপ্ত হয় এবং জবর দখরকারীর স্বত্ব অর্জনের সময়সীমার বিষয়ে নির্ধারিত বিধানাবলী বর্ণিত হয়েছে।
ইহা ছাড়া অত্র আইনের ১৬ও ২৭ ধারায় ব্যবহার সিদ্ধ অধিকার অর্জনের সময়সীমা সম্পর্কে বিধান রয়েছে। তাই এই আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী বিলম্ব মৌকুফের যে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে উক্ত বিধান ছাড়া আদালত ন্যায় বিচার এর স্বার্থে তামাদি আইন দ্বারা অনুমোদিত সময় সীমার ব্যাপারে কোন অনুমান বা ক্ষমা প্রদর্শন করবেন না। 
সুতরাং যে দাবী তামাদি হয়ে যায় তবে সময় সীমা বাড়ানোর এখতিয়ার আদালতের নেই এমনকি তামাতদ কৃত দাবী বা অধিকারকে আদালতে পুনরুজ্জীবিত করতে পারে না।
তাই তামাদি আইন বলতে এমন এক স্বয়ংসম্পূর্ণ আইনকে বুঝায় যে আইন দ্বারা সর্ব  প্রকার দাবী বা স্বত্বের দ্বন্দ্বকে অবিরাম গতিকে  দীর্ঘায়িত করার সুযোগ না দিয়ে বরং তা চিরদিনের জন্য নিস্পত্তি করায় সাহায্য করে থাকে। তাছাড়া এই আইন প্রতারনা মূলক কার্যক্রম প্রতিরোধ করে। ১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ২৯টি ধারা ১ নং তফসিলে ১৮৩ টি অনুচ্ছেদ রয়েছে অতএব এই আইনে সব ধরনের বিধিবদ্ধ নিয়মাবলী সন্নিবেশিত রয়েছে বিধায় একে স্বয়ং সম্পূর্ণ বিধিবদ্ধ আইন বলে গন্য করা হয়। তাই উপরোক্ত আলোচনার সাবতত্বে বলা যায় যে ১৯০৮ সালের তামাদি আইন একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ আইন।

প্রশ্ন-২

তামাদির মেয়াদ বৃদ্ধিকরণ বা বিলম্ব মওকুফ কাকে বলে? ধারা ৫ কি মূল মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য? যুক্তি দাও। কোন ব্যক্তি কি ৫ ধারা অধিকার হিসাবে দাবী করতে পারে? কোন কোন কারণগুলি বিলম্ব মৌকুফের কারণ বলে গন্য করা যায়?

উত্তর:
বিলম্ব মৌকুফ:১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ৫ ধারায় বর্ণিত বিলম্ব মৌকুফের বিষয়টির আইনগত মূল্য অপরিসীম। এই ধারা মতে কোন আপীলকারী বা দরখাস্তকারী যদি প্রমান করতে পারেন যে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেও কোন আপীল , রিভিউ বা রিভিশন করতে না পারার পর্যাপ্ত কারণ ছিল মর্মে আদালতকে সন্তোষ্ট করতে পারে সে ক্ষেত্রে তামাদির মেয়াদ বৃদ্ধি করা যেতে পারে তখন এই ব্যবস্থাকেই আইনের ভাষায় বিলম্ব মৌকুফ বলে।
বিলম্ব মৌকুফের ক্ষেত্রে দুইটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ-
প্রথমত: পর্যাপ্ত কারণ
দ্বিতীয়ত: আদালতকে সন্তুষ্টি করণ
এই ধারাটি আপীল মামলার জন্য প্রযোজ্য এমনকি ফৌজদারী আপীল মামলার জন্যও।
৫ ধারা কি মূল মামলার জন্য প্রযোজ্য:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ৫ ধারাটি কেবরমাত্র আপীল এবং রিভিউ ,রিভিশন সহ অন্যান্য উল্লেখিত ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে এমনকি ফৌজদারী মামলার আপীলের ক্ষেত্রেও ৫ ধারা প্রযোজ্য হবে। মূল মামলার ক্ষেত্রে এ তামাদি আইনের ৫ ধারাটি প্রযোজ্য হবে না। কারণ অধিকাংশ দেওয়ানী মামলার ক্ষেত্রে তামাদির মেয়াদ ৩ বৎসর হতে ১২ বৎসর পর্যন্ত সম্প্রসারিত কিন্তু এই ধারার বিধান মতে আপীল এবং আবেদনের তামাদির মেয়াদ ৭ দিন হতে ৬ মাস। যেহেতু আপীরের সময়সীমা কম সেহেতু যুক্তিসংগত কারনে আপীল দাযের করতে কিংবা রিভিশন সহ অন্যান্য দরখাস্ত দাখিল করতে বিলম্ব হলে এই ধারা মতে উপযুক্ত কারণ সাপেক্ষে সেই বিলম্ব মৌকুফ করা যাইতে পারে। তাই মূল মামলায় অনেক সময় পাওয়া যায় বিধায় মূল মামলা ৫ ধারা ব্যবহার যোগ্য নহে।
উল্লেখ্য যে যথেষ্ট কারণে বিষয়টি তথ্যগত প্রশ্ন আবার আদালতের কাছে যদি প্রতীয়মান হয় যে,যুক্তিসংগত স্বত্ব এবং মনোযোগের সাথে কাজ করলে বিলম্বটি এড়ানো যেত তাহলে ঐ ক্ষেত্রে আদালতে বিলম্বটি গ্রহন নাও করতে পারেন তাছাড়া তামাদি আইনের ৫ ধারা মোতাবেক বিলম্ব মৌকুফের জন্য কোন ব্যক্তি আবেদন করলে তাকে বিলম্বের জন্য প্রত্যেক দিনের জন্য ব্যাখ্যা অথবা কৈফিয়ত আদালতের নিকট দিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে একটি মামলার রায়ে মাদ্রাজ হাইকোট বলেন, প্রত্যেক মামলার বাদীর কর্তব্য হল তার মামলার আপীল দাখিলের তারিখ জেনে রাখা; যদি তার নিজের কারণে আপীল দাযের করতে বিলম্ব ঘটে এবং এই ধারার আওতাভূক্ত আদালতের স্বীয় বিবেচনা ক্ষমতা তার পক্ষে অথবা অনকূলে বিলম্ব মৌকুফের জন্য পর্যাপ্ত প্রমান আদালতে উপস্থাপন করতে হবে। 
অধিকার হিসাবে ৫ ধারা দাবী প্রসঙ্গে:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনে বিলম্ব মৌকুফ এর ক্ষেত্রে কোন দরখাস্তকারী এই মর্মে আদালতের সন্তুষ্টি বিধান করতে পারে যে, নির্ধারিত সময় সীমার মধ্যে অনুরুপ আপীর রিভউ ,রিবিশন দাখিল না করার ক্ষেত্রে পয়াপ্ত কারণ ছিল তাহলে তামাদি আইনের ৫ ধারা বিধানে বিলম্ব মওকুফের সুবিধা পাবে।
তবে এই সুবিধা কেউ অধিকার হিসাবে দাবী করতে পারেন না। কারণ আদালতের স্বেচ্ছাদীন , বিবেচনামূলক ক্ষমতার উপর নির্ভরশীল কাজেই এধারার সুবিধা পেতে হলে পর্যাপ্ত কারণ প্রমান করতে হবে এর্ং তা আদালতকে সন্তুষ্ট চিত্তে গ্রহন করতে হবে। উহা কোন অধিকার নহে, ইহা একান্তই আদালতের বিবেচ্য বিষয়।
বিলম্ব মওকুফের ক্ষেত্রে আইন, সরকারী ও বেসরকারী মামলাকারীর মদ্যে কোন পার্থক্য করেনি। সরকারের কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী অসাবধানতা বা অবহেলা বিলম্ব মওকুফের ক্সেত্রেও পর্যাপ্ত কারণ হিসাবে গন্র হয়না। অর্থাৎ এক্ষেত্রে সরকার বিশেষ  কোন সুবিধা পাওয়ার অধিকারী নয়।তবে উপযুক্ত কারণে বা পরিস্থিতিতে সরকার এর পক্ষে বিলম্ব মওকুফের সুবিধা পাওয়া যাইতে পারে।
উপরোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে বলা যায় যে, ১৯০৮ সালের তামদি আইনের ৫ ধারাকে াধিকার হিসাবে কেহ দাবী করতে পারে না ইহা একান্তই আদালতের ইচ্ছাধীন ক্ষমতা ও পর্যাপ্ত কারণ।
কোন কোন কারণ বিলম্ব মওকুফের কারণ হতে পারে:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ৫ ধারায় বিলম্ব মওকুফের কারণ হিসাবে নিম্নে লিখিত কারণগুলি বর্ণনা করা হয়েছে। উপমহাদেশের রায়ে যে কারণ বিবেচনা করা হয় তা নিম্নরুপ-
১) বাদীর অসুস্থতা
২) কৌ শলীর ভুল
৩) সরল বিশ্বাসের ভুর
৪)বাদীর কারগারে থাকা
৫)রায বা ডিক্রীর সার্টিফাই কপিতে ভুল
৬) আইনের অজ্ঞতা
৭) ভুল আদালতের শুনানী বা মামলা রুজু।
৮) তামাদি সময় গননায় ভুল হলে।
উপরোক্ত কারনগুলিকে বিলম্ব মওকুফের কারণ হিসাবে বিবেচনা করা হয।


প্রশ্ন-৩ আইনগত অযোগ্যতা বলতে কি বুঝ? একটি আইনগত অক্ষমতার পূর্বেই আর একটি অক্ষমতা শুরু হয় সেক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তি কি তামাদি আইনের কোন সুবিধা ভোগ করতে পারে আরোচনা কর।

ইনগত োগ্যতা:
১৯০৮ সালের তামাদি ইনের ৬ ধারায় শিশু এবং অক্ষম ব্যক্তিদের অযোগ্যতার কথা বলা হয়েছে, সাধারণত অক্ষম ব্যক্তি ও শিশুরা তাদের নিজ অধিকারের প্রকৃতি উপলব্ধি করে তা আদাযের জন্য ইনকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে সক্ষম হয না। তাই অক্ষম ও নাবালক শিশুদের ক্ষেত্রে দেশের প্রচলিত ইন বিশেষ সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা করেছে। যার ফলে অক্ষম  ও শিশুরা ইনি সহায়তার জন্য  অক্ষমতা অথবা শিশুর সাবালকত্ব অর্জন না করা র্যন্ত তামাদি সময় সীমা গণনা করা হয় না অর্থাৎ সক্ষম এব সাবালক হওয়ার পর নিযম অনুযায়ী মমলা করতে পারবে। উহাতে ইনি বাধা নাই। 
অতএব বলা যায়যে কোন ব্যক্তির কোন কার্যে ইনগত যগ্যতার অভাবইনগত অক্ষমতা বলে ইনে গন্য করা হয়ে থাকে। ই তামাদি সময় শুধুমাত্র ইনগত অক্ষমতায় আক্রান্ত হওয়ার ফলেই কার্যকরী। ্ষে্রে নাবালকত্ব, পাগলত্ব এবং জড়বুদ্ধি সম্পন্ন ব্যক্তিরাইনগত অক্ষম বলে বিবেচিত হবে।
একটি অক্ষমতা শেষ হবার পূর্বে আরেকটি অক্ষমতা শুরু হলে ঐ ব্যক্তি তামাদি ইনের কিকি সুবিধা পাবে:
১৯০৮ সালের ৬ ধারার বিধান মতে ক্ষমতার জন্য যে সমস্ত সুবিধা পাবে তা নিম্নরুপ:
অত্র ইনের ৬(২) উপধারায় বলা হযেছে যে যকন কোন ব্যক্তি ডিক্রী জারির বা দরখাস্ত দাখিলের জন্য অধিকারী হয় এবং যে সময় থেকে তামাদির মেয়াদ গণনা করা হবে সেই সময় ব্যক্তি নাবালক পাগল বা নির্বোধ থাকে তবে সেই ব্যক্তি ইনগত অক্ষমতা অবসান ঘটার পর অত্র ইনের ১ম তফসিলের তৃতীয় অনুচ্ছেদ বা ১৯০৮ সালের দেওয়ানী কার্যবিধির ৪৮ ধারার ্লেখিত সময় বাদ দিয়ে মামলা করার অধিকারী।
অত্র ইনের ৬(১) উপধারায় বলা হয়েছে যে যখন কোন ব্যক্তির একটি ইনগত অক্ষমতার অবসান   ঘটাবার পূর্বেআর একটি ইনগত অক্ষমতা শুরু হয় তবে অনুরুপ ব্যক্তি উভয় ইনগত অক্ষমতার বসান ঘটার পর তামাদি মেয়াদ গণনা শুরু হবে। ধারা ৬(১) উপধারা তামাদি মেয়াদ শেষ হওয়ার পর মামলা করার সুযোগ থাকবে।
উদাহরণ স্বরুপ বলা যায় যে, নাবালক থাকা কালে মেহেদী একটি মামলা করার অধিকার লাভ করে। সে সাবালকত্ব হওয়ার পূেই পাগল হয়ে যায়্ ্ষেত্রে মেহেদীর নাবালকত্ব ও পাগল অবস্থায় অবসান এর তারিখ হতে তার তামাদির সময় গণনা করতে হবে।
৬(৩) উপধারায় বলা হয়েছে যে, যদি উক্ত ব্যক্তির মৃত্যু পর্যন্ত ইনগত অক্ষমতা ব্যাহত থাকে সে্ষেত্রে তার ইনগত প্রতিনিধি উপরে উল্লেখিত একই সময়ের মধ্যে মামলা বা দরখাস্ত পেশ করতে পারবে।
৬(৪) উপধারায় বলা হয়েছে যে, যদি মৃত ব্যক্তির প্রতিনিধি ও ইনগত অক্ষমতা থাকে সে্ষে্রে অত্র ইনে ৬(১) এবং ৬(২) উপধারা অনুযায়ী আবেদন করতে পারবে।
উল্লেখ্য যে মামলা করার কারণ ঘটলে একমাত্র জীবিত ব্যক্তির অনুকূলেই তামাদি আইনের ৬ ধারায় বিধি বিধান মতে সময় বৃদ্ধি করা যায়্ কিন্তু যে ব্যক্তির কোন অস্তিত্ব নাই সেই অজ্ঞাত ব্যক্তি উপরোক্ত ধারা সুবিধা পাবে না। কিন্তু গর্ভস্থ শিশু তামাদি আইনের  ৬ও ৮ দারার সুবিধা পেতে পারে। (ডিএল আর ১৫২০
আইনগত অক্ষমতার দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তি অক্ষমতার সময় তামাদির সময় সীমা নির্ধারনের ক্ষেত্রে অব্যাহতি পাবার অধিকারী কিন্তু তাই বলে এই ধারাটি সাবালকত্ব অর্জনের পূর্বে নাবালককে মামলা করার জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে অক্ষম ব্যক্তির সুবিধাগুলো অলোচনা করা যায়।
  


প্রশ্ন-৪ সময়ের অবিরাম চলন বলতে কি বুঝ? সময় একবার চলতে শুরু করলে পরবর্তী কোন অযোগ্যতা বা অক্ষমতা তাকে থামাতে পারে না ব্যতিক্রম সহ ব্যাখ্যা কর।
সময়ের অবিরাম চলন:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ৯ ধারায় সময়ের অবিরাম চলনের বিধিবিধান আলোচনা করা হযেছে।”একবার তামাদির মেয়াদ উত্তীর্ণ হতে শুরু করলে পরবর্তী কোন অক্ষমতা অথবা অযোগ্যতা দ্বারা বন্ধ করা যাবে না”। একেই তামাদি আইনের ভাষায় সময়ের অবিরাম চলন বলে।
তামাদি আইনের ৯ ধারা ভাষ্যমতে সময় একবার অতিবাহিত হতে আরম্ভ করলে পরবর্তীকালীন অক্ষমতা বা অসমর্থতা ইহাকে থামাতে পারে না তামাদি আইনের ইহাই বিধান। 
ধরা যাক রহিম জমি হতে বেদকর হওয়ার ১০ বঃসর পর সে পাগল হয়ে যায, পাগর অবস্তায় সে ৫ বৎসর ছিল এবং পরে সুস্থ হয়। এক্সেত্রে কিন্তু সে ভাল হয়ে আর মামলা করার সুযোগ পাবে না। তার দাবী তামাদি হয়ে যাবে। কারণ তামাদিকাল শুরু হওয়ার সময় সে ভাল ছির এবং ইতোমধ্যে ১৫ বৎসর বেদখর অবস্তায় চলে গিযেছে। তামাদি কাল আরম্ভ হওয়ার সময় নাবালক, পাগল অথবা হাবা থাকলে ৬/৮ ধারার সুবিধা পাওয়া যাবে কিন্তু একবার তামাদিকাল আরম্ভ

প্রশ্ন-৫ জবর দখল বলতে কি বুঝ? উহার উপাদানগুলি কি কি? জবর দখলের সময় লাগে কত দিন? কখন জবর দখলকৃত সম্পত্তিতে দখলকারীর স্বত্ব অর্জিত হয় এবং প্রকৃত মালিকের স্বত্ব বিলোপ হয়? জবর দখলকারী কি চুড়ান্ত মালিকানা অর্জন করতে পারে?

১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ২৮ ধারায় জবর দখল সম্পর্কে বিশেষ আলোচনা করা হয়েছে। এই ধারায় বলা হয়েছে যে কোন আইনগত স্বত্বের বিরুদ্ধে প্রতিকূল বা বিরুদ্ধ দখলকেই জবর দখল বলে। অর্থাৎ যখন কোন বিবাদীর দখল বাদীর প্রতিকূল হয় তখনই জবর দখলের সৃষ্টি হয়। অন্য কথায় ১২ বৎসর এর বেশী সময ধরে অপরের সম্পত্তি জোর পূর্বক দখলে রাখলে এবং উক্ত দখলের মধ্যে দখল পুনরুদ্ধারের জন্য সম্পত্তির প্রকৃত মালিক আদালতে শরণাপন্ন না হলে ঐ সম্পত্তির উপরে জবর দখলকারীর স্বত্ব অর্জিত হয় এবং তামাদি আইনের ভাষায় একেই জবর দখর বলে।

জবর দখল বা বিরুদ্ধ দখলের উপাদান:

১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ২৮ ধারার সম্পত্তির অধিকারের অবসান কথাটির আলোকে সম্পত্তি জবরদখল বা বিরুদ্দ দখলের জন্য যে সমস্ত উপাদানের কথা বলা হয়েছে তা নিম্নে আলোচনা করা হয়েছে -

১) জবরদখরকারীকে প্রকৃতপক্ষে জমিতে দখলদার থাকতে হবে। জবরদখরকারীর দখর নাই অথচ খতিয়ানে তার নামে দখল দেখা আছে এরুপ কাগজী দখলের কোন কাজ হবে না।
২)সম্পত্তির দখল নিরবচ্ছিন্ন, পকাশ্য এর্ং প্রকৃত মারিকসহ অন্যান্য সকলের বিরুদ্ধে হতে হবে। এজন্যই জাতীয় দখলের অপর নাম বিরুদ্দ দখল জনিত স্বত্ব।
৩) জবর দখরকারীর সম্পত্তিটি জোরে দখলে রাখার ইচ্চা থাকতে হবে।
৪) জবরদখল প্রকৃত মালিকের জ্ঞাত সারে হতে হবে।
৫) আইনসম্মতবাবে প্রথম দখল আরম্ব হলে , পরে জবরদখরদাবী উত্থাপন করা যাবে না।
৬) বাদীর স্বত্ব অঙ্গীকারে জবরদখরকারীকে নিজেরদাবীতে জমিতে দখরদার তাকতে হবে।

জবর দখলের ক্ষেত্রে সময় লাগে কতদিন:

যখন কোন বিবাদীর দখল বাদীর প্রতিকুল হয় তখনই উহা জবর দখর হয। ১২ বৎসর এর বেশী সময় ধরে অপর এর সম্পত্তি জোরপূবৃক দখলে রাখলে এবং উক্ত দখলের মধ্যে দখল পুনরুদ্ধারের জন্য সম্পত্তি প্রকৃত মালিক আদালতে শরণাপন্ন না হলে ঐ সম্পত্তির উপরে জবরদখরকারীর স্বত্ব অর্জিত হয়। তাই বলা যায় যে, ১২ বৎসর সমযকালই জবরদখলের সময হিসাবে গণনা করা হয়। যা ১৯০৮ সালের তামাদি আইনে ২৮ ধারায় বর্ণনা করা হয়েছে।কখন জবর দখলকারীর সম্পত্তিতে স্বত্ব অর্জিত হয়:

তামাদির সময় সীমা স্বত্বের মামলার জন্যে নির্ধারিত রয়েছে ১ বছর। ১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ২৮ ধারার বিধান মতে কোন বাদী যদি তার খাস দখলীয় জমি হতে বিবািদী কর্তৃক বেদখল হয় সেক্ষেত্রে বাদীকে অবশ্যই বেদখলের তারিখ হতে ১২ বৎসরের মধ্যে আদালতে হাজির হয়ে বিবাদীর বিরুদ্ধে স্বত্বসাব্যস্তে খাস দখলের জন্য মামলা করতে হবে। অন্যথায় দাবীকৃত জমিতে বাদীর সকল প্রকার অধিকার এবং স্বত্ব ধ্বংস হযে যাবে। অন্যদিকে এ আইনের ২৬ ধারায় বিধানের আলোকে বব্যবহার সিদ্ধ অধিকারের কারণেও উক্ত সম্পত্তিতে বিবাদীর অধিকার অর্জিত হয়। উল্লেখ্য এই জন্য তামাদি আইনের ২৬ ধারাকে অর্জনকারী প্রিশক্রিপশন বলে।

যে সময় হতে জবর দখলের কারণে বাদীর মালিকানা বিলুপ্তি হযে যাবে ঠিক ঐসময় হতেই জবর দখলকারীর উপর সংশ্রিষ্ট জমির মালিকানা বর্তাবে।আর এভাবেই জবর দখলের মাধ্যমে প্রকৃত মালিক ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তির সম্পত্তির উপর বৈধ বা আইনগত স্বত্ব অর্জিত হয়ে থাকে।

কখন প্রকৃত মালিকের স্বত্ব বিলুপ্ত হয়:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ২৮ ধারায় বলা হয়েছে যে কোন সম্পত্তির দখল প্রাপ্তির জন্য মামলা দায়ের করার ব্যাপারে এই আইনের যে মেয়াদ নির্ধারিত করে দেয়া আছে তা উত্তীর্ণ হবার পর উক্ত সম্পত্তিতে দাবীর বিলুপ্তি হয়ে যাবে। তাই তামাদি আইনের ২৮ ধারাকে বিলোপকারী প্রেসক্রিপশনও বলা হয়।
এই ধারার বিশ্লেষনে বলা যায় যে, দখর উদ্ধারের জন্য তামাদির মেয়াদ প্রথম তফসিলে বর্ণিত আছে। উক্ত নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হযে গেলে ঐ সম্পত্তির উপর দাবীকারীর স্বত্ব লোপ পায়। আর এই আইনের ১৪২ অনুচ্ছেদ মোতাবেক তামাদি গণনা করা হয়। 


খ বিভাগ-তামাদি আইন
প্রশ্ন-১
ক) তামাদি আইন কাকে বলে?
খ) তামাদি আইনের প্রয়োজনীতা বা যৌক্তিকতা আলোচনা কর।
গ) তামাদি আইন স্বয়ং সম্পূর্ণ কি না ব্যাখ্যা কর।
তামাদি আইন বা খরসরঃধঃরড়হ অপঃ কাকে বলে:
মামলা দায়েরের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা দেয়া থাকে ঐ নির্দিষ্ট সময়সীমা পার হলে আর মামলা করা যায না ঐ নির্দিষ্ট সময়সীমাকে তামাদি আইন বলে।
তামাদি একটি আরবী শব্দ এর আভিধানিক অর্থ হলো কোন কিছু বিলুপ্ত হওয়া কিংবা বাধা প্রাপ্ত হওয়া। মূলত ১৯০৮ সালের তামাদি আইন একটি পদ্ধতিগত আইন। এই আইন একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের পরে কোন আইনগত অধিকারের বিলুপ্তি ঘটায়। কতদিনের মধ্যে কোন মামলার আপীল , রিভিউ বা রিভিশনের জন্য আদালতে দরখাস্ত পেশ করতে হবে। কখন বিলম্ব মৌকুফ করা যাবে ইত্যাদি বিষয় তামাদি আইনে নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।
তামাদি আইন বা খরসরঃধঃরড়হ অপঃ হচ্ছে কোন সম্পত্তির উপর থেকে মালিকানার দ্বন্দ্বকে শেষ করে পক্ষগন যেন তাহাদের মধ্যে পারষ্পারিক বিরোধ অনেক বছর যাতে চলাতে না পারে সেজন্য তামাদি আইনের সৃষ্টি। তামাদি আইন বা খরসরঃধঃরড়হ অপঃ সকল প্রকার প্রতারণা মুলক কাজ বন্ধ করে দেয়। কোন মামলার দরখাস্ত কতদিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে হবে কতদিনের মধ্যে আপিল করা যাবে। কোন সময় মামলা করতে দেরি হবার পরও আদালত মামলার দরখাস্ত গ্রহন করতে পারেন এসব বিষয় সহ ইত্যাদি বিষয় তামাদি আইন বা খরসরঃধঃরড়হ অপঃ নির্দিষ্ট করে দেয়। তাই দাবী বা অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তামাদি আইন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এই আইন কোন ব্যক্তির তাহার স্বত্ব বা অধিকারের জন্য কতদিনের মধ্যে মামলা দায়ের করতে পারবে তার সময় নির্দিষ্ট করে দেয়। একবার এর সময়সীমা অতিক্রম হয়ে গেলে আর মামলা করা যায় না। মামলা মোকদ্দমা করার একটি নির্দিষ্ট সময় আছে। কোন মামলা ৩ বৎসর আবার কোন মামলা ১২ বৎসর মেয়াদের মধ্যে করতে হয়। মামলার মত আপীলেরও একটি নির্দিষ্ট সময় আছে। তামাদি আইনের প্রথম তফসিলে উক্ত নির্ধারিত সময়সীমা বর্ণনা করা হয়েছে।
সুতরাং উপরোক্ত উল্লেখিত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, তামাদি আইন বলতে এমন একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ আইন কে বোঝায় যে আইন দ্বারা সকল প্রকার দাবী বা স্বত্বের দ্বন্দ্বকে অবিরাম গতিতে বৃদ্ধি যা দীর্ঘায়িত করার সুযোগ না দিয়ে বরং তা চিরদিনের জন্য নিস্পত্তি করায় সাহায্য করে এরুপ ব্যবস্থাকে তামাদি আইন বলে।

বিলম্বের জন্য অনেকেই অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আদালতের শরনাপন্ন হতে পারেন না। আইনের সূত্র হচ্ছে বিলম্ব ন্যায় বিচারকে প্রতিহত করে” । আইনের অরো একটি নিয়ম হচ্ছে, যে নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সচেতন নয়, আইন তাকে সহায়তা করে না।
আইন সচেতনতার এবং অবহেলার কারণে মানুষের অধিকার আদায় করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। নিষ্ঠুর তামাদি আইনের প্রবল বাধা আর অতিক্রম করা যায় না। সময় একবার অতিবাহিত হয়ে গেলে আর তা ফিরে পাওয়া যায না, মামলা মোকদ্দমা আধিক্য কমাতে এবং নাগরিকদেরকে নিজ নিজ অধিকার প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট করতেই তামাদি আইনের জন্ম। এজন্য অনেকে বলে থাকেন তামাদি আইন জবর দখলকে সমর্থন করে। কারণ নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে জবর দখল কারীর বিরুদ্ধে উচ্ছেদ মামলা না করলে সংশ্লিষ্ট জমিতে জবর দখরকারীর একপ্রকার শক্তিশালী বিরুদ্ধ শর্ত জন্ম নেয়। যার ফলে তাকে আর উচ্ছেদ করা যায় না। বৈধ মালিক তার মালিকানা স্বত্ব হারায়।
সাধারণত কোন একটি বিষয়ে নালিশের উদ্ভব হলে অর্থাৎ কোন ব্যাপারে মামলা করার প্রয়োজন দেখা দিলে প্রশ্ন জাগে মামলাটি কখন করবো। আবার অনেকে মনে করেন- করবো এক সময় বলে বসে থাকেন। কিন্তু না ,কখন মামলা দায়ের করতে হবে সে প্রশ্নে সমাধান দিয়েছে তামাদি আইন। আর যারা মনে করেন যে করবো এক সময় তাদের সাবধান করেছে এ আইন। যে কোন সময় আপনার কেবল খুশিমত আপনি আপনার দাবীর সপক্ষে মামলা দায়ের করতে পারেন না, সব কিছুর যেমন একটি নিয়ম আছে , আইন আছে, মামলা দায়েরের ক্ষেত্রেও সময়ের সেই নিয়ম বেধে দিয়েছে তামাদি আইন। তামাদি আইন মানুষকে সাবধান করেছে যে , একটি বিশেষ সময়সীমা অতিক্রান্ত হওয়ার পরে আর মামলা করা যায় না।
দেশের প্রচলিত আইন এবং সরকার এটাই আশা করেন যে. প্রতিটি নাগরিক তাদের অধিকার সম্বন্ধে সদা জাগ্রত এবং সচেতন থাকবে। কেই তাদের অধিকারে হস্তক্ষেপ করলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি আইনের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিকারের জন্য আদালতে উপস্থিত না হয় , তবে সেই রকম ব্যক্তিকে আইন আদালত সাহায্য করবে না।
তামাদি আইন ধরেই নেই যে দাবী যার সত্য , সে তার দাবী আদায়ে তৎপর থাকবে।
মামলা মোকদ্দমার সময় সীমা বিষয়ে কোন বাধা নিষেধ না থাকলে দীর্ঘদিন পরে আমাদের নানাভাবে মামলা মোকদ্দমা জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকতো।
বিষয়টি নিয়ে সর্বদা চিন্তান্বিত থাকতে হতো, সে কারণে মানবিক শান্তি বিঘিœত হতো।
দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হেতু প্রয়োজনীয় সাক্ষী এবং নির্ভর যোগ্য সাক্ষ্যের অভাব হতো ফলে বিচারকের পক্ষে কোন বিষয় সঠিকভাবে নিস্পত্তি করা কঠিন হয়ে পড়তো। কোন সময়সীমা বাধা না থাকলে মামলা মোকদ্দমা কোন দিন শেষ হতো না।
তামাদি আইন ক্ষতি গ্রস্থ’ পক্ষকে মামলা আপীল, দরখাস্ত রিভিশন ও রিভিউ নির্ধারিত সীমার মধ্যে দাখিল করা নির্দেশ দিয়েছে।
 নির্ধারিত সময় সীমার মধ্যে না করলে প্রতিপক্ষ আপত্তি উত্থাপন করুক বা না করুক তামাদি আইনের নির্ধারিত নিয়মে আদালতে সেটা ডিসমিস করে দিবেন।
কোন বিশেষ ক্ষেত্রে এই আইন প্রয়োগ যত রুঢ়ই মনে হোক না কেন আদালতের এই আইনের বিধান মেনে চলতে হবে।
তামাদি আইনের প্রয়োজনীতা:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের প্রয়োজনীয়তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
১) দেওয়ানী মোকদ্দমা, আপীল ও কতিপয় দরখাস্ত আদালতে দায়ের করার মেয়াদ সম্পর্কিত আইন একত্রীকরণ ও সংশোধন করা হয়।
২) দখলের দ্বারা ব্যবহার স্বত্বের ও অন্যান্য সম্পত্তির অধিকার অর্জনের নির্ধারিত সময়সীমা প্রণয়ন করা হয়।
৩) তামাদি আইনের সময় সীমার দ্বারা সমাজের বিবাদ নিস্পত্তির মাধ্যমে শান্তি শৃংখলা বজায় রাখা হয়।
৪) মামলার দীর্ঘসূত্রীতা জিয়য়ে না রেখে জনসাধারনের ভোগান্তি  লাঘব করা হয়।
৫) মামলার জটিলতা অর্থাৎ বহুতা বা সময় এর সাশ্রয় করা হয়।
৬) মামলার দীর্ঘ সূত্রীতার বন্ধের জন্য অর্থের অপচয় রোধ করা হয়।
৭) প্রতারণামূলক কার্যক্রমকে প্রতিরোধ করা হয়।
৮) প্রতিষ্ঠিত অধিকার সংরক্ষনের জন্য সহায়তা করে অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হয়।
৯) সর্বোপরি তামাদি আইন দ্বারা সর্বপ্রকার দাবী ও স্বত্বের দ্বন্দ্বকে অবিরাম গতিতে দীর্ঘায়িত করে সুযোগ না দিয়ে বরং চির দিনের জন্য নিস্পত্তি করতে সাহায্য করে।
উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে,দেওয়ানী আইনে তামাদি আইনের প্রয়েজনীয়তা অপরিসীম।

তামাদি আইন একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ আইন কি না:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের সুস্পষ্ট বিধান হল এই আইনের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে কোন মামলা, আপীল কিংবা দরখাস্ত আদালতে দাখিল না করলে পরবর্তীতে আদালত তা গ্রহন করবে না।
তামাদি আইনের ৩ ধারা হতে ২৫ ধারা পর্যন্ত বর্ণিত বিধান মোতাবেক যে কোন ধরণের মামলা আপীল কিংবা দরখাস্ত দাখিলের মেয়াদ সম্পর্কে সাধারণ নিয়মাবলী ব্যতিক্রম সহ উল্লেখ করা হয়েছে। এই আইনের মধ্যে ৫ ধারায় তামাদি রেয়াত বা বিলম্ব মৌকুফের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তামাদি আইনের ২৮ ধারায় জবর দখলের মাধ্যমে স্থাবর সম্পত্তির মালিকানা স্বত্ব বিলপ্ত হয় এবং জবর দখলকারীর স্বত্ব অর্জনের সময়সীমার বিষয়ে নির্ধারিত বিধানাবলী বর্ণিত হয়েছে।
ইহা ছাড়া অত্র আইনের ১৬ ও ২৭ ধারায় ব্যবহার সিদ্ধ অধিকার অর্জনের সময়সীমা সম্পর্কে বিধান রয়েছে। তাই এই আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী বিলম্ব মৌকুফের যে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে উক্ত বিধান ছাড়া আদালত ন্যায় বিচার এর স্বার্থে তামাদি আইন দ্বারা অনুমোদিত সময় সীমার ব্যাপারে কোন অনুমান বা ক্ষমা প্রদর্শন করবেন না।
সুতরাং যে দাবী তামাদি হয়ে যায় তবে সময় সীমা বাড়ানোর এখতিয়ার আদালতের নেই এমনকি তামাদি কৃত দাবী বা অধিকারকে আদালতে পুনরুজ্জীবিত করতে পারে না।
তাই তামাদি আইন বলতে এমন এক স্বয়ংসম্পূর্ণ আইনকে বুঝায় যে আইন দ্বারা সর্ব  প্রকার দাবী বা স্বত্বের দ্বন্দ্বকে অবিরাম গতিকে  দীর্ঘায়িত করার সুযোগ না দিয়ে বরং তা চিরদিনের জন্য নিস্পত্তি করায় সাহায্য করে থাকে। তাছাড়া এই আইন প্রতারনা মূলক কার্যক্রম প্রতিরোধ করে। ১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ২৯টি ধারা ১ নং তফসিলে ১৮৩ টি অনুচ্ছেদ রয়েছে অতএব এই আইনে সব ধরনের বিধিবদ্ধ নিয়মাবলী সন্নিবেশিত রয়েছে বিধায় একে স্বয়ং সম্পূর্ণ বিধিবদ্ধ আইন বলে গন্য করা হয়। তাই উপরোক্ত আলোচনার সারতত্বে বলা যায় যে ১৯০৮ সালের তামাদি আইন একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ আইন।
প্রশ্ন-২
ক) তামাদির মেয়াদ বৃদ্ধিকরণ কি বা বিলম্ব মওকুফ বলতে কি বুঝ?
খ) এই বিলম্ব মওকুফের বিধান কি তামাদি আইনের মূল উদ্দেশ্যকে নস্যাৎ করে অথবা ধারা ৫ কি মূল মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য? যুক্তি দাও।
গ) কোন পরিস্থিতিতে এই বিলম্ব প্রয়োজ্য?
ঘ) কোন ব্যক্তি কি ৫ ধারা অধিকার হিসাবে দাবী করতে পারে?
ঙ) কোন কোন কারণগুলি বিলম্ব মৌকুফের কারণ বলে গন্য করা যায়?
চ) সময়ের অবিরাম চলন বলতে কি বুঝ?
ছ) সময় একবার চলতে শুরু করলে পরবর্তী কোন অযোগ্যতা বা অক্ষমতা তাকে থামাতে পারে না ব্যতিক্রম সহ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর:
বিলম্ব মৌকুফ:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ৫ ধারায় বর্ণিত বিলম্ব মওকুফের বিষয়টির আইনগত  মূল্য অপরিসীম। এই ধারা মতে কোন আপীলকারী বা দরখাস্তকারী যদি প্রমান করতে পারেন যে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেও কোন আপীল , রিভিউ বা রিভিশন করতে না পারার পর্যাপ্ত কারণ ছিল মর্মে আদালতকে সন্তোষ্ট করতে পারে সে ক্ষেত্রে তামাদির মেয়াদ বৃদ্ধি করা যেতে পারে তখন এই ব্যবস্থাকেই আইনের ভাষায় বিলম্ব মওকুফ বলে। বিলম্ব মওকুফ করা হলে তামাদির কারণে বারিত মোকদ্দমা গৃহীত হতে পারে।
যেমন- ১৯৮৫ সালের ১লা জানুয়ারী একটি আপীল পেশ করার শেষ তারিখ। অপীলকারী ভুলক্রমে সরল বিশ্বাসে আপীলটি সে তারিখেই অন্য একটি ভুল আদালতে পেশ করে। পরে ২২ এপ্রিল শুনানীর সময় দেখা গেল আপীলটি প্রকৃত আদালতে পেশ করা হয়নি। ভুল ধরা পড়ার সাথে সাথে আপীলকারী প্রকৃত আদালতে আপীলটি পেশ করে। এক্ষেত্রে সরল বিশ্বাসে ভুল হওয়ায় আদালতে বিলম্ব কওকুফ করতে পারেন। এরুপ অবস্থায় অপীলটি তামাদির কারণে বারিত হবে না।
বিলম্ব মৌকুফের ক্ষেত্রে দুইটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ-
প্রথমত: পর্যাপ্ত কারণ
দ্বিতীয়ত: আদালতকে সন্তুষ্টি করণ
এই ধারাটি আপীল ,বিভিশন,রিভিউ মামলার জন্য প্রযোজ্য এমনকি ফৌজদারী আপীল মামলার জন্যও। মূল মামলা দায়ের করার সময় এই ধারার সাহায্য পাওয়া যাবে না।
৫ ধারা কি মূল মামলার জন্য প্রযোজ্য:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ৫ ধারাটি কেবরমাত্র আপীল এবং রিভিউ ,রিভিশন সহ অন্যান্য উল্লেখিত ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে এমনকি ফৌজদারী মামলার আপীলের ক্ষেত্রেও ৫ ধারা প্রযোজ্য হবে। মূল মামলার ক্ষেত্রে এ তামাদি আইনের ৫ ধারাটি প্রযোজ্য হবে না। কারণ অধিকাংশ দেওয়ানী মামলার ক্ষেত্রে তামাদির মেয়াদ ৩ বৎসর হতে ১২ বৎসর পর্যন্ত সম্প্রসারিত কিন্তু এই ধারার বিধান মতে আপীল এবং আবেদনের তামাদির মেয়াদ ৭ দিন হতে ৬ মাস। যেহেতু আপীরের সময়সীমা কম সেহেতু যুক্তিসংগত কারনে আপীল দাযের করতে কিংবা রিভিশন সহ অন্যান্য দরখাস্ত দাখিল করতে বিলম্ব হলে এই ধারা মতে উপযুক্ত কারণ সাপেক্ষে সেই বিলম্ব মৌকুফ করা যেতে পারে। তাই মূল মামলায় অনেক সময় পাওয়া যায় বিধায় মূল মামলায় ৫ ধারা ব্যবহার যোগ্য নহে।
উল্লেখ্য যে যথেষ্ট কারণে বিষয়টি তথ্যগত প্রশ্ন আবার আদালতের কাছে যদি প্রতীয়মান হয় যে,যুক্তিসংগত স্বত্ব এবং মনোযোগের সাথে কাজ করলে বিলম্বটি এড়ানো যেত তাহলে ঐ ক্ষেত্রে আদালতে বিলম্বটি গ্রহন নাও করতে পারেন তাছাড়া তামাদি আইনের ৫ ধারা মোতাবেক বিলম্ব মৌকুফের জন্য কোন ব্যক্তি আবেদন করলে তাকে বিলম্বের জন্য প্রত্যেক দিনের জন্য ব্যাখ্যা অথবা কৈফিয়ত আদালতের নিকট দিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে একটি মামলার রায়ে মাদ্রাজ হাইকোট বলেন, প্রত্যেক মামলায় বাদীর কর্তব্য হল তার মামলার আপীল দাখিলের তারিখ জেনে রাখা; যদি তার নিজের কারণে আপীল দাযের করতে বিলম্ব ঘটে এবং এই ধারার আওতাভূক্ত আদালতের স্বীয় বিবেচনা ক্ষমতা তার পক্ষে অথবা অনকূলে বিলম্ব মৌকুফের জন্য পর্যাপ্ত প্রমান আদালতে উপস্থাপন করতে হবে।
অধিকার হিসাবে ৫ ধারা দাবী প্রসঙ্গে:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনে বিলম্ব মৌকুফ এর ক্ষেত্রে কোন দরখাস্তকারী এই মর্মে আদালতের সন্তুষ্টি বিধান করতে পারে যে, নির্ধারিত সময় সীমার মধ্যে অনুরুপ আপীর রিভউ ,রিভিশন দাখিল না করার ক্ষেত্রে পয়াপ্ত কারণ ছিল তাহলে তামাদি আইনের ৫ ধারা বিধানে বিলম্ব মওকুফের সুবিধা পাবে।
তবে এই সুবিধা কেউ অধিকার হিসাবে দাবী করতে পারেন না। কারণ আদালতের স্বেচ্ছাধীন(উরংপৎবঃরড়হধৎু চড়বিৎ) , বিবেচনামূলক ক্ষমতার উপর নির্ভরশীল কাজেই এধারার সুবিধা পেতে হলে পর্যাপ্ত কারণ প্রমান করতে হবে এবং তা আদালতকে সন্তুষ্ট চিত্তে গ্রহন করতে হবে। উহা কোন অধিকার নহে, ইহা একান্তই আদালতের বিবেচ্য বিষয়।
বিলম্ব মওকুফের ক্ষেত্রে আইন, সরকারী ও বেসরকারী মামলাকারীর মধ্যে কোন পার্থক্য করেনি। সরকারের কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী অসাবধানতা বা অবহেলা বিলম্ব মওকুফের ক্ষেত্রেও পর্যাপ্ত কারণ হিসাবে গন্য হয়না। অর্থাৎ এক্ষেত্রে সরকার বিশেষ  কোন সুবিধা পাওয়ার অধিকারী নয়।তবে উপযুক্ত কারণে বা পরিস্থিতিতে সরকার এর পক্ষে বিলম্ব মওকুফের সুবিধা পাওয়া যাইতে পারে।
উপরোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে বলা যায় যে, ১৯০৮ সালের তামদি আইনের ৫ ধারাকে অধিকার হিসাবে কেহ দাবী করতে পারে না ইহা একান্তই আদালতের ইচ্ছাধীন ক্ষমতা ও পর্যাপ্ত কারণ।
তামাদি মার্জনার জন্য কি কি শর্ত পূরণ করতে হয়:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী তামাদি মার্জনা পাওয়া যায়। কিন্তু তামাদি মার্জনা পাওয়ার ক্ষেত্রে আদালতকে কিছু বিষয় সন্তুষ্ট করতে হয়,
নি¤েœ শর্তগুলি দেওয়া হলো-
    বিলম্ব হওয়ার কারণটি ১৯০৮ সালের তামাদি াাইনের ৫ ধারা মোতাবেক যথেষ্ট কারণ থাকতে হবে।
    বিলম্ব হওয়ার ক্ষেত্রে দরখাস্তকারীর কোন গাফিলতি ছিল না।
    দরখাস্তকারী সরল বিশ্বাসে প্রতিকার পেতে এসেছে।
অত্র আইনে যথেষ্ট কারণ বলতে কোন কোন কারনকে যথেষ্ট কারন বলা যেতে পারে তেমন কিছুই বলা নেই। তবে উচ্চ আদালতের নজিরের মাধ্যমে অসুস্থতাকে যথেষ্ট কারন বলা যেতে পারে।
যে সকল কারণে সাধারণত তামাদি মওকুফ পাওয়া যেতে পারে। তা নিচে দেওয়া হলো-
ক) আদালতের আদেশ দ্বারা বিভ্রান্ত হওয়া
খ) জাবেদা নকল;
গ) সরল বিশ্বাসের ভুল;
ঘ) ভুল আদালতের মামলা দাখিল;
ঙ) অফিসের ভুল;
চ) ভুল পরামর্শ;
ছ) বাদীর কারগারে থাকা;
জ) প্রাকৃতিক দূর্যোগ;
ঝ)কোর্ট ফির অপ্রতুলতা;
ঞ) বাদীর অসুস্থতা
ট) কৌশলীর ভুল;
ঠ) রায বা ডিক্রীর সার্টিফাই কপিতে ভুল
ড) আইনের অজ্ঞতা
ঢ) তামাদি সময় গননায় ভুল হলে।
ণ) মৃত্যু
এসকল কারণে সাধারণত তামাদি মওকুফের দরখাস্ত করা যায়। যদি এসকল কারণ আদালতের নিকট যথেষ্ট কারণ বলে বিবেচিত হয়।

সময়ের অবিরাম চলন:
একবার তামাদির মেয়াদ উত্তীর্ণ হতে আরম্ভ হলে তৎপরবর্তী  মামলা দায়েরের কোন অযোগ্যতা কিংবা অক্ষমতা উহা রোধ করতে পারে না।
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ৯ ধারায় বর্ণিত এই বিধানকে ’সময়ের অবিরাম চলন’ হিসেবে অখ্যায়িত করা হযেছে।

তামাদি আইনের ৯ ধারা ভাষ্যমতে সময় একবার অতিবাহিত হতে আরম্ভ করলে পরবর্তীকালীন অক্ষমতা বা অসমর্থতা ইহাকে থামাতে পারে না তামাদি আইনের ইহাই বিধান।
এ আইনে আরও বলা হয়েছে যে,তবে শর্ত হয়,যেক্ষেত্রে কোন পাওনাদারকে দেনাদারের সম্পত্তি ব্যবস্থাপনার পত্রনামা প্রদান করা হয়েছে, উক্ত ব্যবস্থাপনা অব্যাহত থাকাকালে ঋণ উসুলের জন্য মামলা করার নির্ধারিত মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া মুলতবী থাকবে।
    অক্ষমতা( উরংধনরষরঃু ) হলো,মামলা করার নিমিত্ত পরবর্তী শারীরিক সক্ষমতার অভাব যেমন- অসুস্থতা,দারিদ্রতা ইত্যাদি।
    অযোগ্যতা (ওহধনরষরঃু) হলো, মামলা করার আইনগত যোগ্যতার অভাব ,যেমন- নাবালকত্ব, অপ্রকৃতিস্থ,মূর্খ হওয়া ইত্যাদি।
ধরা যাক রহিম জমি হতে বেদখল হওয়ার ১০ বৎসর পর সে পাগল হয়ে যায, পাগর অবস্থায় সে ৫ বৎসর ছিল এবং পরে সুস্থ হয়। এক্ষেত্রে কিন্তু সে ভাল হয়ে আর মামলা করার সুযোগ পাবে না। তার দাবী তামাদি হয়ে যাবে। কারণ তামাদিকাল শুরু হওয়ার সময় সে ভাল ছিল এবং ইতোমধ্যে ১৫ বৎসর বেদখল অবস্থায় চলে গিযেছে। তামাদি কাল আরম্ভ হওয়ার সময় নাবালক, পাগল অথবা হাবা থাকলে ৬/৮ ধারার সুবিধা পাওয়া যাবে কিন্তু একবার তামাদিকাল আরম্ভ

ছ)
সময় একবার চলতে শুরু করলে পরবর্তী কোন অযোগ্যতা বা অক্ষমতা তাকে থামাতে পারে না ব্যতিক্রম সহ ব্যাখ্যা:
তামাদি আইনের ৬ ধারায় বলা হয়েছে যে,
যে ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তি নাবালক ,পাগল অথবা হাবা থাকে,তবে নাবালক থাকলে সাবালক হয়ে,পাগল বা হাবা থাকলে মানুষিকভাবে সুস্থ হয়ে মামলা করতে পারে।
আবার যদি নাবালক থাকা অবস্থায় সে উন্মাদ হয়ে পড়ে তবে নাবালকত্ব ও উন্মাদতা উভয় প্রকার অসমর্থতা অবসানের পর তার মামলার তামাদি মেয়াদ গণনা শুরু হবে।
তামাদি আইনের ৭ ধারায় বলা হয়েছে যে,
কতিপয় ব্যক্তি যৌথভাবে একটি মামলা করার বা ডিক্রি জারি দেওয়ার আধিকার আছে। কিন্তু তাদের মধ্যে একজন আইনগত অসমর্থ অর্থাৎ নাবালক,পাগল বা হাবা এবং সেই অসমর্থ ব্যক্তির অনুমতি ছাড়াই মামলা পরিচালনা করা যায় তাদের সকলের বিরুদ্ধে তামাদি মেয়াদ অতিবাহিত হতে থাকে যদি এমন অবস্থা হয় যে ঐ অসমর্থ ব্যক্তির সম্মতি ব্যতীত মামরা চালনা সম্ভব নহে তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আইনগত অসমর্থতার অবসান না হওয়া পর্যন্ত তাদের সকলের বিরুদ্ধে তামাদিকাল স্থগিত থাকবে।
ব্যতিক্রম:
সময়ের অবিরাচলন- বিধানটির চুড়ান্ত ও অলঙ্গনীয় কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে যে ক্ষেত্রে তামাদিকাল স্থগিত যায় সেগুলি নি¤œরুপ-
১) তামাদির আইনের ৯ ধারার শেষে একটি শর্ত যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে যে, যেক্ষেত্রে কোন পাওনাদারকে দেনাদারের সম্পত্তি ব্যবস্থাপনার পত্রনামা প্রদান করা হয়েছে, উক্ত ব্যবস্থাপনা অব্যাহত থাকাকালে ঋণ উসুলের জন্য মামলা করার নির্ধারিত মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া মুলতবী থাকবে।
২) তামাদি আইনের ৯ ধারা বিধানের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য  মোতাবেক আপীল অথবা দরখাস্ত দাখিলের জন্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বা প্রমানাদি যেমন- রায়, আদেশ ডিক্রি বা রোয়েদাদের নকল নিতে আইনগত যে সময় অতিবাহিত হবে ঐ সময়টুকু তামাদি মেয়াদকালে বাদ দিতে হবে। তাছাড়া যেদিন হতে তামাদির সময় আরম্ভ হবে উক্তদিনকেও তামাদির গণনা হতে বাদ দিতে হবে।
৩) তামাদি আইনের ১৩ ধারা সারমর্ম অনুযায়ী বিবাদি যতদিন বাংলাদেশের বাইরে অবস্থান করবে ততদিন পর্যন্ত তামাদির  গণনা স্থগিত থাকবে।
৪) তামদি আইনের ১৪ ধারার মূল বক্তব্য অনুযায়ী যদি বাদী যতœ সহকারে সরল বিশ্বাসে কোন মূল মামলা চালাতে থাকে এবং পরবর্তীতে ধরা পড়ে যে, ঐ আদালতের সংশ্লিষ্ট মামলাটির বিচার করা এখতিয়ার নেই, তাহলে অনুরুপ এখতিয়াবিহীন আদালতে মামলা করার সময় তামাদির সময় গণনা হতে তা বাদ যাবে।
৫) তামাদি আইনের ১৫ ধারার ১ উপধারায় বলা হয়েছে যে, যে মামলা বা ডিক্রিজারীর দরখাস্ত দােেয়র কিংবা জারি কোন নিষেধাজ্ঞা অথবা আদেশ দ্বারা স্থগিত রাখা হয়েছে , তার জন্য নির্ধারিত তামাদির মেয়াদ গণনার সময়, যতদিন তা নিষেধাজ্ঞা বা আদেশ বলবৎছিল, যেদিন তা প্রদত্ত হয়েছিল এবং যেদিন তা প্রত্যাহার করা হয়েছিল , তা বাদ দিতে হবে।
এই ধারা ২ উপধারায় আরও বর্ণিত আছে যে, যে মামলার জন্যে বর্তমানে বলবৎ  কোন আইনের বিধান অনুযায়ী নোটিশ দেয়া হয়েছে, তার জন্যে নির্ধারিত মেয়াদ গণনায় নোটিশের সময় বাদ দিতে হবে।
৬) এই আইনের ১৬ ধারা মোতাবেক ডিক্রিজারীর নিলামে খরিদ সম্পত্তি দখল পাবার জন্যে নিলাম খরিদ্দার কর্তৃক মামলা দায়ের করারর জন্য নির্ধারিত তামাদির মেয়াদ সময়সীমা গণনার সময় নিলাম রদের জন্যে  দাখিলকৃত কার্যধারা যতদিন চলতে, তা ঐ সময় গণনা হতে বাদ দিতে হবে।
বস্তুত এই সমস্ত ব্যতিক্রম সাপেক্ষে অপরাপর সমস্ত ক্ষেত্রে সমযের অবিরাম চলন বিধানটি যতার্থভাবে প্রযোজ্য।
প্রশ্ন-৩
ক) তামাদি আইনে কিভাবে অধিকারকে শুধু ধ্বংস করে না,পরোক্ষভাবে অধিকার প্রদানও করে ব্যাখ্যা কর।
খ) ব্যবহার সিদ্ধ বা সুখাধিকার বা ইজমেন্ট কি?
গ) ব্যবহার সিদ্ধ বা সুখাধিকার অর্জনের জন্য কোন কোন উপাদানের উপস্থিতি আবশ্যক অথবা তামাদি আইনে কিভাবে ইজমেন্ট এর অধিকার অর্জন করা যায়?
ঘ) ব্যবহার সিদ্ধ অধিকারের ক্ষেত্রে সাধারণ সম্পত্তি ও সরকারী সম্পত্তির ক্ষেত্রে কত দিন সময় লাগে অথবা কখন কোন ব্যক্তি দলিল ব্যতীত অন্যের স্থাবর সম্পত্তিতে স্বত্ব অর্জন করতে পারে?
ঙ) ব্যবহার সিদ্ধ অধিকার নষ্ট বা বিলোপ হতে কত সময় লাগে?
ক)
তামাদি আইন অধিকারকে শুধু ধ্বংস করে না,পরোক্ষভাবে অধিকার প্রদানও করে ব্যাখ্যা:
নির্দিষ্ট মেয়াদ পার হওয়ার পর তামাদি আইন মামলা দায়ের করার অধিকার বিলুপ্ত করে। মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর কেউ মামলা দায়ের করতে পারে না।এক্ষেত্রে এক পক্ষের অধিকার বিলুপ্ত হবার সাথে সাথে অন্য পক্ষের অধিকার জন্ম লাভ করে। তামাদি আইনের চতুর্থ অধ্যায়ে দখল বলে মালিকানা স্বত্ব অর্জনের অধিকার বর্নিত হয়েছে। যেমন- কোন ব্যক্তি ২০ বৎসর যাবৎ অব্যাহতভাবে আপন অধিকারে আলো,বাতাস,পথ,পানি, জলপথ ভোগ করে থাকে, তবে সে আলো,বাতাস,পথ ,পানি, জলপথ এর উপর তার অধিকার পাকা হয়ে যায়।[ ধারা ২৭] অন্যের সম্পত্তি যদি কেউ ১২ বৎসরের বেশী সময় বিনা আপত্তিতে ভোগ দখল করতে থাকে তবে সে সম্পত্তিতেও উক্ত দখলকারীর স্বত্ব অর্জিত হয়। [ধারা-২৮]
অতএব দেখা যায়, উপরোক্ত ক্ষেত্র দুটিতে একজনের অধিকার বিলুপ্তির সাথে সাথে অপরজনের অধিকার সৃষ্টি হয়েছে। কাজেই যথার্থভাবেই বলা যায় তামাদি আইন শুধু অধিকার বিলুপ্ত করে না, অধিকার সৃষ্টিও করে।
খ)
ইজমেন্ট রাইট বা সুখাধিকার:
 ইজমেন্ট বা সুখাধিকার বলতে এমন এক সুবিধাভোগী স্বত্বের অধিকারকে বুঝায় যা দ্বারা কোনো জমির মালিক বা দখলকার তা জমির সুবিধাজনক ভোগের জন্য অপর কোনো ব্যক্তির জমির উপর দিয়ে কিছু করতে বা করা অব্যাহত রাখতে, কোনো কিছু নিবৃত্ত করতে বা নিবৃত্ত অব্যাহত রাখতে পারে । (১৯৮২ সালের
ইজমেন্ট রাইট এক্ট এর ৪ ধারা)
 ব্যবহার সিদ্ধ বা সুখাধিকার অর্জন সম্পর্কে ১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ২৬ ধারায় বলা হয়েছে যে, কোনো ব্যক্তি শান্তিপূর্ণভাবে এবং প্রকাশ্যভাবে কোনো ব্যক্তির ভূ-সম্পত্তি বাঁধাহীন ভাবে ও নিরবচ্ছিন্ন ভাবে ২০ বৎসর কাল ধরে ভোগ দখল করে থাকলে তাতে তার পথ চলার অধিকার জনিত স্বত্ব অর্জিত হয় ।
গ)
ব্যবহার সিদ্ধ বা সুখাধিকার অর্জনের জন্য কোন কোন উপাদানের উপস্থিতি আবশ্যক অথবা তামাদি আইনে কিভাবে ইজমেন্ট এর অধিকার অর্জন করা যায়:
তামাদি আইনের ২৬ ধারাটি বিশ্লেষণ করলে প্রতিয়মান হয় যে, ব্যবহার সিদ্ধ অধিকার অর্জন করতে হলে নি¤œ বর্ণিত শর্তাবলী পূরণ করতে হয়:
১) প্রকাশ্য ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করতে হবে।
২) অনুরূপ ভোগ দখল অধিকার হিসাবে করতে হবে।
৩) কোন রকম বাধা কিংবা আপত্তি ব্যতীত উক্ত ভোগ দখল করে যেতে হবে।
৪) অনুরুপ ভোগ দখল ইতিবাচক কিংবা নেতিবাচক হলেও চলবে।
৫) সাধারণ সম্পত্তির ক্ষেত্রে বিশ বছর এবং সরকারী সম্পত্তির বেলায় ষাট বছর অনুরূপ ভোগ দখল করতে হবে।
৬) তামাদির সময় সমাপ্ত হবার দু’বছর সময়ের মধ্যেই ব্যবহার সিদ্ধ অধিকার সম্পর্কিত মামলা দায়ের করতে হবে
  
ঘ)
ব্যবহার সিদ্ধ অধিকার অর্জনের ক্ষেত্রে সরকারী সম্পত্তি এবং সাধারণ সম্পত্তি অর্জনের জন্য কতদিন সময় লাগে: ব্যবহার সিদ্ধ অধিকার অর্জনের ক্ষেত্রে সরকারী সম্পত্তি ক্ষেত্রে ৬০ বছর এবং সাধারণ সম্পত্তি অর্জনের জন্য ২০ বছর সময় লাগে।
ঙ)
ব্যবহার সিদ্ধ অধিকার নষ্ট হতে কতদিন সময লাগে:
দুই বছর পর্যন্ত একাধিকক্রমে ব্যবহার সিদ্ধ অধিকার প্রয়োগ বাধা প্রাপ্ত হয়ে থাকলে তার বিলুপ্তি ঘটে থাকে।
উল্লেখ্য যে, ব্যবহার সিদ্ধ অধিকার লাভ করতে সময় প্রয়োজন হয় বিশ বছর এবং উক্ত অধিকার লোপ পেতে সময়ের প্রয়োজন হয মাত্র দুই বছর। তাছাড়া ইজমেন্ট আইন বা ব্যবহারসিদ্ধ আইনের বিধান মতে সময়সীমা শেষ হয়ে গেলেও ব্যবহার সিদ্ধ অধিকার বিলুপ্ত হয়।
২৭ ধারায় বলা হয়েছে যে,ব্যবহার জনিত অধিকারের সাথে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির দখলকার যদি জীবনস্বত্বে বা ৩ বছরের অধিককালের ইজারা স্বত্বে দখলকার হয়, তবে ২৬ ধারানুযায়ী মেয়াদ গণনার সময় জীবন স্বত্বাধিকারী বা ইজারা স্বত্বের অধিকারী যতদিন দখলকার ছিলেন সে সময়টা বাদ যাবে এবং সম্পূর্ণ স্বত্বের মালিক সংশ্লিস্ট জমির দখল নেওয়ার পর ৩ বছরের মধ্যে ব্যবহারজনিত অধিকারীকে বাধা প্রদান করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবহার জনিত অধিকারীর কোন দাবী টিকবে না।
কখন নির্ধারিত সময় থেকে দেরি করলেও মামলা বা আপীল করা যাবে-
 খরসরঃধঃরড়হ অপঃ, ১৯০৮ এর ৬ ধারা কিছু ক্ষেত্রে কোন মামলা বা আপীলের জন্য নির্ধারিত সময় দেরি করার বা সময় গণনাতে দেরি করার বৈধতা দিয়েছে। এগুলো নিম্নরূপঃ
১। যদি মামলা বা কার্যধারা দায়ের করার কিংবা ডিংক্রী জারির জন্য দরখাস্ত দাখিলের অধিকারী ব্যক্তি, যে সময় হতে তামাদির মেয়াদ গণনা করতে হইবে, সেই সময় নাবালক, উন্মাদ বা জড়বুদ্ধি থাকে, সেক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তি তার উক্ত অপারগতার অবসান হবার পর, অপারগতা না থাকলে, প্রথম তফসিলের তৃতীয় স্তম্ভে অথবা ১৯০৮ সালের দেওয়ানী কার্যবিধির ৪৮ ধারায় বর্ণিত যে মেয়াদের মধ্যে সে ওটা করতে পারতো, সেই মেয়াদের মধ্যে মামলা বা কার্যধারা দায়ের কিংবা দরখাস্ত দাখিল করতে পারবে।
২। যদি অনুরূপ কোনো ব্যক্তি, যে সময় হইতে তামাদির মেয়াদ গণনা করিতে হইবে, সে সময় উপরে বর্ণিত যেই কোনো দুইটি অপারগতার অবসান হইবার পূর্বেই সে আরেকটি অপারগতায় পতিত হয়, সেক্ষেত্রে সেই ব্যক্তি তাহার উভয় অপারগতার অবসান হইবার পর, অপারগতা না থাকিলে, উপরে বর্ণিত যে মেয়াদের মধ্যে সে ওটা করতে পারতো, সেই মেয়াদের মধ্যে মামলা দায়ের কিংবা দরখাস্ত দাখিল করতে পারবে।
৩। যদি অনুরূপ কোনো ব্যক্তির মৃত্যু পর্যন্ত তাহার অপারগতা অব্যাহত থাকে, সেইক্ষেত্রে তাহার আইনানুগ প্রতিনিধি ঐ ব্যক্তির মৃত্যুর পর অপারগতা না থাকিলে উপরে বর্ণিত যে মেয়াদের মধ্যে ওটা করা যেতো, সেই মেয়াদের মধ্যে মামলা দায়ের কিংবা দাখিল করতে পারবে।
৪। যদি উপরোক্ত ব্যক্তির মৃত্যু তারিখে তাহার আইনানুগ প্রতিনিধি অনুরূপ কোনো অপারগতায় পতিত হয়, সেক্ষেত্রে তাদের ক্ষেত্রেও (১) ও (২) উপধারায় বিধৃত বিধানসমূহ প্রযোজ্য হবে।
প্রশ্ন-৪
ক) জবর দখলের সংজ্ঞা দাও অথবা বিরুদ্ধ দখল কি?
খ) জবর দখলের উপাদানগুলি কি কি?
গ) জবর দখলের ক্ষেত্রে কত সময় লাগে?
ঘ) কখন জবর দখলকৃত সম্পত্তিতে দখলকারীর স্বত্ব অর্জিত হয় এবং প্রকৃত মালিকের স্বত্ব বিলোপ হয়? কখন কোন ব্যক্তি দলিল ব্যতীত অন্যের স্থাবর সম্পত্তিতে স্বত্ব অর্জন করতে পারে?
ঙ) জবর দখলকৃত সম্পত্তিতে জবর দখলকারী কি চুড়ান্ত মালিকানা অর্জন করতে পারে?
জবর দখলের সংজ্ঞা:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ২৮ ধারায় জবর দখল সম্পর্কে বিশেষ আলোচনা করা হয়েছে। এই ধারায় বলা হয়েছে যে কোন আইনগত স্বত্বের বিরুদ্ধে প্রতিকূল বা বিরুদ্ধ দখলকেই জবর দখল বলে। অর্থাৎ যখন কোন বিবাদীর দখল বাদীর প্রতিকূল হয় তখনই জবর দখলের সৃষ্টি হয়। অন্য কথায় ১২ বৎসর এর বেশী সময ধরে অপরের সম্পত্তি জোর পূর্বক দখলে রাখলে এবং উক্ত দখলের মধ্যে দখল পুনরুদ্ধারের জন্য সম্পত্তির প্রকৃত মালিক আদালতে শরণাপন্ন না হলে ঐ সম্পত্তির উপরে জবর দখলকারীর স্বত্ব অর্জিত হয় এবং তামাদি আইনের ভাষায় একেই জবর দখর বলে।

জবর দখল বা বিরুদ্ধ দখলের উপাদান:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ২৮ ধারার সম্পত্তির অধিকারের অবসান কথাটির আলোকে সম্পত্তি জবরদখল বা বিরুদ্দ দখলের জন্য যে সমস্ত উপাদানের কথা বলা হয়েছে তা নিম্নে আলোচনা করা হয়েছে -
১) জবরদখরকারীকে প্রকৃতপক্ষে জমিতে দখলদার থাকতে হবে। জবরদখরকারীর দখল নাই অথচ খতিয়ানে তার নামে দখল লেখা আছে এরুপ কাগজী দখলের কোন কাজ হবে না।
২) সম্পত্তির দখল নিরবচ্ছিন্ন, প্রকাশ্য এবং প্রকৃত মালিকসহ অন্যান্য সকলের বিরুদ্ধে হতে হবে। এজন্যই এজাতীয় দখলের অপর নাম বিরুদ্ধ দখল জনিত স্বত্ব।
৩) জবর দখরকারীর সম্পত্তিটি জোরে দখলে রাখার ইচ্ছা থাকতে হবে।
৪) জবর দখল প্রকৃত মালিকের জ্ঞাত সারে হতে হবে।
৫) আইনসম্মতভাবে প্রথম দখল আরম্ভ হলে, পরে জবরদখলদাবী উত্থাপন করা যাবে না।
৬) বাদীর স্বত্ব অঙ্গীকারে জবরদখলকারীকে নিজের দাবীতে জমিতে দখলদার থাকতে হবে।
৭) জবর দখল জনিত কারনেই বেদখল অনুষ্ঠিত হতে হবে।
৮) বে-আইনিভাবে দখল অথবা জবর দখল অনুষ্ঠিত না হলে জবর দখল প্রতিষ্ঠিত হবে না।
৯) জবর দখর হবার সময হতে ১২ বছরের মধ্যে অবশ্যই দখল পুন:রুদ্ধারের জন্য বাদীকে মামলা দায়ের করতে হবে। অন্যথায় বিবাদীর সম্পত্তির স্বত্ব অর্জিত হবে।

জবর দখলের ক্ষেত্রে সময় লাগে কত দিন:
যখন কোন বিবাদীর দখল বাদীর প্রতিকুল হয় তখনই উহা জবর দখল হয়। ১২ বৎসর এর বেশী সময় ধরে অপর এর সম্পত্তি জোরপূবক দখলে রাখলে এবং উক্ত দখলের মধ্যে দখল পুনরুদ্ধারের জন্য সম্পত্তি প্রকৃত মালিক আদালতে শরণাপন্ন না হলে ঐ সম্পত্তির উপরে জবর দখরকারীর স্বত্ব অর্জিত হয়। তাই বলা যায় যে, ১২ বৎসর সমযকালই জবর দখলের সময হিসাবে গণনা করা হয়। যা ১৯০৮ সালের তামাদি আইনে ২৮ ধারায় বর্ণনা করা হয়েছে।
কখন জবর দখলকারীর সম্পত্তিতে স্বত্ব অর্জিত হয়:
তামাদির সময় সীমা স্বত্বের মামলার জন্যে নির্ধারিত রয়েছে ১২ বছর। ১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ২৮ ধারার বিধান মতে, কোন বাদী যদি তার খাস দখলীয় জমি হতে বিবাদী কর্তৃক বেদখল হয় সেক্ষেত্রে বাদীকে অবশ্যই বেদখলের তারিখ হতে ১২ বৎসরের মধ্যে আদালতে হাজির হয়ে বিবাদীর বিরুদ্ধে স্বত্ব সাব্যস্তে খাস দখলের জন্য মামলা করতে হবে। অন্যথায় দাবীকৃত জমিতে বাদীর সকল প্রকার অধিকার এবং স্বত্ব ধ্বংস হযে যাবে। অন্যদিকে এ আইনের ২৬ ধারায় বিধানের আলোকে বব্যবহার সিদ্ধ অধিকারের কারণেও উক্ত সম্পত্তিতে বিবাদীর অধিকার অর্জিত হয়। উল্লেখ্য এই জন্য তামাদি আইনের ২৬ ধারাকে অর্জনকারী প্রিশক্রিপশন বলে।
যে সময় হতে জবর দখলের কারণে বাদীর মালিকানা বিলুপ্তি হযে যাবে ঠিক ঐসময় হতেই জবর দখলকারীর উপর সংশ্লিষ্ট জমির মালিকানা বর্তাবে। আর এভাবেই জবর দখলের মাধ্যমে প্রকৃত মালিক ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তির সম্পত্তির উপর বৈধ বা আইনগত স্বত্ব অর্জিত হয়ে থাকে।
কখন প্রকৃত মালিকের স্বত্ব বিলুপ্ত হয়:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ২৮ ধারায় বলা হয়েছে যে, কোন সম্পত্তির দখল প্রাপ্তির জন্য মামলা দায়ের করার ব্যাপারে এই আইনের যে মেয়াদ নির্ধারিত করে দেয়া আছে তা উত্তীর্ণ হবার পর উক্ত সম্পত্তিতে দাবীর বিলুপ্তি হয়ে যাবে। তাই তামাদি আইনের ২৮ ধারাকে বিলোপকারী প্রেসক্রিপশনও বলা হয়।
এই ধারার বিশ্লেষনে বলা যায় যে, দখল উদ্ধারের জন্য তামাদির মেয়াদ প্রথম তফসিলে বর্ণিত আছে। উক্ত নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হযে গেলে ঐ সম্পত্তির উপর দাবীকারীর স্বত্ব লোপ পায়। আর এই আইনের ১৪২ অনুচ্ছেদ মোতাবেক তামাদি গণনা করা হয়।
প্রশ্ন-৫
ক) আইনগত অক্ষমতা বা অযোগ্যতা  কি ?
খ) মামলা করার অধিকার উদ্ভব হওয়ার পূর্বেই মৃত্যু এবং প্রতারণার ফলাফলের ব্যাপারে ১৯০৮ সালের তামাদি আইনের প্রাসঙ্গিক বিধানগুলো ব্যাখ্যা কর।
গ) লিমিটেশন, প্রেসক্রিপশন এবং এস্টোপেলের মধ্যে পাথক্য লিখ।
ঘ)তামাদি হওয়া কোন দাবি পরিশোধ করলে উহা কি পুনরুদ্ধারযোগ্য?
ঙ)তামাদির ক্ষেত্রে প্রতারনার ফলাফল আলোচনা কর।

আইনগত যোগ্যতা:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ৬ ধারায় শিশু এবং অক্ষম ব্যক্তিদের অযোগ্যতার কথা বলা হয়েছে, সাধারণত অক্ষম ব্যক্তি ও শিশুরা তাদের নিজ অধিকারের প্রকৃতি উপলব্ধি করে তা আদাযের জন্য আইনকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে সক্ষম হয় না। তাই অক্ষম ও নাবালক শিশুদের ক্ষেত্রে দেশের প্রচলিত আইন বিশেষ সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা করেছে। যার ফলে অক্ষম  ও শিশুরা আইনি সহায়তার জন্য  অক্ষমতা অথবা শিশুর সাবালকত্ব অর্জন না করা পর্যন্ত তামাদি সময় সীমা গণনা করা হয় না অর্থাৎ সক্ষম এবং সাবালক হওয়ার পর নিযম অনুযায়ী মামলা করতে পারবে। উহাতে আইনি বাধা নাই।
অতএব বলা যায় যে কোন ব্যক্তির কোন কার্যে আইনগত যোগ্যতার অভাবই আইনগত অক্ষমতা বলে আইনে গন্য করা হয়ে থাকে। এই তামাদি সময় শুধুমাত্র আইনগত অক্ষমতায় আক্রান্ত হওয়ার ফলেই কার্যকরী। এক্ষেত্রে নাবালকত্ব, পাগলত্ব এবং জড়বুদ্ধি সম্পন্ন ব্যক্তিরাই আইনগত অক্ষম বলে বিবেচিত হবে।
খ) মামলা করার অধিকার উদ্ভব হওয়ার পূর্বেই মৃত্যু এবং প্রতারণার ফলাফলের ব্যাপারে ১৯০৮ সালের তামাদি আইনের প্রাসঙ্গিক বিধানগুলো ব্যাখ্যা কর।
তামাদি আনের ১৭ ধারায় মোকদ্দমা রুজু করার অধিকার অর্জনের পূর্বে মৃত্যুর ফলাফল সম্পর্কে বলা হয়েছে। ১৭ ধারায় বলা হয়েছে-
১) যেক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি জীবিত থাকলে একটা মামলা দায়ের বা দরখাস্ত দাখিল করার অধিকারী হত, কিন্তু সেই ব্যক্তি উক্ত অধিকার সৃষ্টি হবার পূর্বেই মৃত্যুবরণ করে, সেইক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির আইনানুগ প্রতিনিধি উক্ত মামলা দায়ের বা দরখাস্ত দাখিল কবার যোগ্যতাসম্পন্ন হওয়ার সময় হতে তামাদি মেয়াদ গণনা করা হবে।
(২) যেক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি জীবিত থাকলে তার বিরুদ্ধে কেউ একটা মামলা দায়ের বা দরখাস্ত দাখিল কবার অধিকার লাভ করত, কিন্তু সে ব্যক্তি উক্ত অধিকার সৃষ্টি হওয়ার পূর্বেই মৃত্যুবরণ করে, সেক্ষেত্রে যখন মৃত ব্যক্তির এরূপ কোনো আইনানুগ প্রতিনিধি থাকবে, যার বিরুদ্ধে বাদী মামলা দায়ের বা দরখাস্ত দাখিল করতে পারবে, তখন হতে তামাদি মেয়াদ গণনা করা হবে।
(৩) সম্পত্তি প্রয়োগের অগ্রাধিকার প্রয়োগের মামলা অথবা স্থাবর সম্পত্তি সম্পর্কিত দখল বা বংশগত কোনো পদলাভ সম্পর্কিত মামলার ক্ষেত্রে উপরোক্ত (১) ও (২) উপধারার কোনো কিছুই প্রযোজ্য নহে।

ঙ) তামাদির ক্ষেত্রে প্রতারণার ফলাফল:
কোনো জিনিস মিথ্যে বা তার অস্তিত্ব নেই জানা সত্ত্বেও কোনো ব্যক্তিকে ওই জিনিসের অস্তিত্ব সঠিক -এ বিশ্বাস স্থাপনে কোনো কিছু করাকে সাধারণত 'প্রতারণা' বলা যায়।
সক্রিয় উদ্যেগে সত্য গোপন করে মিথ্যা বর্ণনাকারীর মাধ্যমে কৌশলের আশ্রয়ে কোন ব্যক্তিকে তার প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করার নাম প্রতারণা।
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৫৫ ধারা অনুসারে বিক্রেতা তার বিক্রীত বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ ক্রটি ক্রেতার কাছে প্রকাশ না করলে এক্ষেত্রে বিক্রেতা প্রতারণা করেছেন বলে গণ্য হবেন।
তামাদি আইনের ১৮ ধারায় প্রতারণার ফলাফল সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, 'যে ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি একটি মামলা দায়ের বা দরখাস্ত দাখিল করবার অধিকারী হয়, কিন্তু প্রতারণার মাধ্যমে তাকে সেই অধিকারের বিষয় অথবা যে স্বত্বের ওপর অধিকার প্রতিষ্ঠিত, সে বিষয় জানতে দেয়া হয় নাই অথবা যে ক্ষেত্রে ওই অধিকার প্রতিষ্ঠিত করবার জন্য যে দলিল প্রয়োজনীয়, তা প্রতারণা করে তার কাছ থেকে গোপন রাখা হয়েছে, সেই সকল ক্ষেত্রে-
 ক. প্রতারণার বিরুদ্ধে দোষী ব্যক্তির বা তার সহযোগীর বিরুদ্ধে, অথবা খ. যে ব্যক্তি সরল বিশ্বাসে এবং মূল্যের বিনিময়ে ভিন্ন অন্য প্রকারে ওই দোষী ব্যক্তির মাধ্যমে স্বত্ব দাবি করে, তার বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি সর্বপ্রথম যে দিন প্রতারণার কথা জানতে পারে, সেদিন থেকে অথবা দলিল গোপন করা হয়ে থাকলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি সর্বপ্রথম যেদিন দলিলটি উপস্থাপন করতে সমর্থ হয় বা অপরপক্ষকে তা উপস্থাপন করার জন্য বাধ্য করতে পারে, সেদিন থেকে মামলা দায়ের বা দরখাস্ত দাখিলের জন্য নির্ধারিত তামাদির মেয়াদ গণনা করতে হবে।'
২৩ ডিএলআর-এর 'নিম ফিন্যান্স লিমিটেড বনাম বশির আহমেদ রফিক'
মামলার সিদ্ধান্ত অনুসারে, তামাদি আইনের ১৮ ধারার সুবিধে পেতে হলে প্রতারণার কথা প্লিডিংয়ে উল্লেখ করতে হবে।
এ ধারার সাধারণ নীতি অনুসরনে ১ নং তফসিলের ৯২ নং অনেুচ্ছেদে আছে যদি কারও বিরুদ্ধে গোপনে কোন জাল দলিল সৃষ্টি করত তা রেজিষ্ট্রি করে রাখা হয়, তবে বাদীর এই গোপন দলিলের বিষয় জানার পর হতে তার বিরুদ্ধে তামাদিকাল গণনা শুরু হবে এবং এই গোপন জাল দলিলের বিষয় জানার তারিখ হতে তিন বৎসরের মধ্যে তার মামলা করা চলবে। অনুরুপভাবে কাউকে প্রতারণা করার উদ্দেশ্যে গোপনে তার বিরুদ্ধে কোন ডিক্রি হাসিল করে রাখলে, যেইদিন বাদী সবপ্রথম এরকম গোপন ডিক্রির বিষয় জানতে পারবে সেইদিন হতে এই প্রকার ডিক্রি রদের মামলা করা যাবে।
সময়সীমা কারণে যাতে কেহ প্রবঞ্চনা দ্বারা তার ন্যায্য অধিকার হতে বঞ্চিত বা প্রতারিত না হয় সেইজন্য প্রতারিত ব্যক্তি সুবিধার্থে তামাদি আ্ইনের এই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতারণা প্রমান করতে পারলে বাদী এই ধারার সুযোগ দাবী করতে পারবে অন্যথায় নয়। প্রতারণা প্রমানের ভার সর্বদায় বাদী উপর থাকবে।
দন্ডবিধির ৪১৫ ধারায় প্রতারণার সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে এবং ৪১৭ থেকে ৪২৪ ধারায় বিভিন্নভাবে প্রতারণার শাস্তি সম্পর্কে বিধান বর্ণিত হয়েছে।

একটি অক্ষমতা শেষ হবার পূর্বে আরেকটি অক্ষমতা শুরু হলে ঐ ব্যক্তি তামাদি আইনের কি কি সুবিধা পাবে:
১৯০৮ সালের ৬ ধারার বিধান মতে অক্ষমতার জন্য যে সমস্ত সুবিধা পাবে তা নিম্নরুপ:
অত্র আইনের ৬(২) উপধারায় বলা হযেছে যে যখন কোন ব্যক্তি ডিক্রী জারির বা দরখাস্ত দাখিলের জন্য অধিকারী হয় এবং যে সময় থেকে তামাদির মেয়াদ গণনা করা হবে সেই সময় ঐ ব্যক্তি নাবালক পাগল বা নির্বোধ থাকে তবে সেই ব্যক্তি আইনগত অক্ষমতা অবসান ঘটার পর অত্র আইনের ১ম তফসিলের তৃতীয় অনুচ্ছেদ বা ১৯০৮ সালের দেওয়ানী কার্যবিধির ৪৮ ধারার উল্লেখিত সময় বাদ দিয়ে মামলা করার অধিকারী।
অত্র আইনের ৬(১) উপধারায় বলা হয়েছে যে যখন কোন ব্যক্তির একটি আইনগত অক্ষমতার অবসান   ঘটাবার পূর্বেই আর একটি আইনগত অক্ষমতা শুরুহয় তবে অনুরুপ ব্যক্তি উভয় আইনগত অক্ষমতার অবসান ঘটার পর তামাদি মেয়াদ গণনা শুরু হবে। ধারা ৬(১) উপধারা তামাদি মেয়াদ শেষ হওয়ার পর মামলা করার সুযোগ থাকবে।
উদাহরণ স্বরুপ বলা যায় যে, নাবালক থাকা কালে মেহেদী একটি মামলা করার অধিকার লাভ করে। সে সাবালকত্ব হওয়ার পূবেই পাগল হয়ে যায়।এই ক্ষেত্রে মেহেদীর নাবালকত্ব ও পাগল অবস্থায় অবসান এর তারিখ হতে তার তামাদির সময় গণনা করতে হবে।
৬(৩) উপধারায় বলা হয়েছে যে, যদি উক্ত ব্যক্তির মৃত্যু পর্যন্ত আইনগত অক্ষমতা অব্যাহত থাকে সে ক্ষেত্রে তার আইনগত প্রতিনিধি উপরে উল্লেখিত একই সময়ের মধ্যে মামলা বা দরখাস্ত পেশ করতে পারবে।
৬(৪) উপধারায় বলা হয়েছে যে, যদি মৃত ব্যক্তির প্রতিনিধি ও আইনগত অক্ষমতা থাকে সেক্ষেত্রে অত্র আইনে ৬(১) এবং ৬(২) উপধারা অনুযায়ী আবেদন করতে পারবে।
উল্লেখ্য যে মামলা করার কারণ ঘটলে একমাত্র জীবিত ব্যক্তির অনুকূলেই তামাদি আইনের ৬ ধারায় বিধি বিধান মতে সময় বৃদ্ধি করা যায়। কিন্তু যে ব্যক্তির কোন অস্তিত্ব নাই সেই অজ্ঞাত ব্যক্তি উপরোক্ত ধারা সুবিধা পাবে না। কিন্তু গর্ভস্থ শিশু তামাদি আইনের  ৬ ও ৮ দারার সুবিধা পেতে পারে। (ডিএল আর ১৫২০
আইনগত অক্ষমতার দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তি অক্ষমতার সময় তামাদির সময় সীমা নির্ধারনের ক্ষেত্রে অব্যাহতি পাবার অধিকারী কিন্তু তাই বলে এই ধারাটি সাবালকত্ব অর্জনের পূর্বে নাবালককে মামলা করার জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে অক্ষম ব্যক্তির সুবিধাগুলো অলোচনা করা যায়।








তামাদি





১) তামাদি আইন কাকে বলে?/তামাদিও সংজ্ঞা দাও। তামাদি আইনের প্রয়োজনীয়তা বলতে কি বুঝ? তামাদি আইনের উদ্দেশ্য কি? ”তামাদি আইন অধিকারকে মুধু ধ্বংস কওে না, পরোক্ষভাবে অধিকার প্রদানও করে”-ব্যাখ্যা কর। তামাদি ও প্রেসক্রিপশনের মধ্যকার পার্থক্য নির্ণয় কর।
তামাদি আইনের সংজ্ঞা:
তামাদি একটি আরবী শব্দ এর আভিধানিক অর্থ হলো কোন কিছু বিলুপ্ত হওয়া কিংবা বাধা প্রাপ্ত হওয়া।মূলত ১৯০৮ সালের তামাদি আইন একটি পদ্ধতিগত আইন। এই আইন একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের পরে কোন আইনগত অধিকারে এর বিলুপ্তি ঘটায়। কতদিনের মধ্যে কোন মামলার আপিল , রিভউ বা রিভিশনের জন্য আদালতে দরখাস্ত পেশ করতে হবে। কখন বিলম্ব মৌকুফ করা যাবে ইত্যাতি বিষয় তামাদি আইনে নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।
মামলা মোকদ্দমা করার একটি নির্দিষ্ট সময় আছে।কোন মামলা ৩ বৎসর আবার কোন মামলা ১২ বৎসর মেয়দের মধ্যে করতে হয়। মামলার মত আপিলেরও একটি নির্দিষ্ট সময় আছে। তামাদি আইনের প্রথম তফসিলে উক্ত নির্ধারিত সময়সীমা বর্ণনা করা হয়েছে।
সুতরাং উপরোক্ত উল্লেখিত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, তামাদি আইন বলতে এমন একটি স্বয়ংসম্পূণ আইন যে আইন দ্বারা সকল প্রকার দাবী বা স্বত্বের দ্বন্দ্বকে অবিরামগতিতে বৃদ্ধি যা দীর্ঘায়িত করার সুযোগ না দিয়ে বরং তা চিরদিনের জন্য নিস্পত্তি করায় সাহায্য করে।এরুপ ব্যবস্থাকে তামাদি আইন বলে।
তামাদি আইনের প্রয়োজনীতা:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের প্রয়োজনীয়তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
১) দেওয়ানী
মামলা দায়েরের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা দেয়া থাকে ঐ নিদিষ্ট সময়সীমা পার হলে আর মামলা করা যায় না ঐনির্দিষ্ট সময়সীমাকে তামাদি আইন বলে।
২) তামাদির মেয়াদ বৃদ্ধিকরন (বিলম্ব মওকুফ) বলতে কি বুঝ? ধারা ৫ কি মূল মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যুক্তি দাও। কোন ব্যক্তি কি ধারা ৫ অধিকার হিসাবে দাবী করতে পারে? কোন কোন কারন সমূহ যুক্তি সংগত কারণ বলে গন্য করা যায? বিলম্ব মওকুফের বিধান কি তামাদি আইনের মূল উদ্দেশ্যকে নস্যাৎ করে?
তামাদি আইনের ৫ ধারায় বর্ণিত ”বিলম্ব মওকুফ”- এর বিষয়টি আইনগত মূল্য অপরিসীম। প্রথমেই স্বরণ করিয়ে দেয় যে, এই ধারিিট মূখ্যত আপীল মামলার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, এমনকি ফৌজদারী আপীলের ক্ষেত্রেও এই ধারাটি প্রয়োগ করা যায়।
না,ধারা ৫ কি মূল মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
কোন ব্যক্তি কি ধারা ৫ অধিকার হিসাবে দাবী করতে পারে না। এটা আদালতের ই”ছাধীন ক্ষমতার উপর নির্ভরশীল।
আপীল, রিবিউ ও রিভিশনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য:
৭ দিন থেকে ৬ মাস পর্যন্ত।
মূল মামলা ৩ বছর থেকে ১২ বৎসর পর্যন্ত।

এই ধারা মতে কোন আপীলকারী বা দরখাস্তকারী যদি প্রমান করতে পারেন যে , নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেও কোন অপীল, রিভিউ বা রিবিশন করতে না পারার পর্যাপ্ত কারণ ছিল তাহলে সেক্ষেত্রে তামাদির মেয়াদ বৃদ্ধি করা যেতে পারে। আর একেই আইনের ভাষায় বিলম্ব মওকুফ বলে।

৩) আইনগত অক্ষমতা/ অযোগ্যতা বলতে কি বুঝ? একটি আইনগত অক্ষমতার পূর্বেই যদি আরেকটি অক্ষমতার উৎপত্তি বা অবতীর্ণ হয় তাহলে উক্ত ব্যক্তি কি তামাদি আইনের কোন সেকশনের সুবিধা ভোগ করতে পারবে?
খরসরঃধঃরড়হ অপঃ, ১৯০৮ এর ৬ ধারা কিছ ক্ষেত্রে কোন মামলা বা আপীলের জন্য নির্ধারিত সময় দেরি করার বা সময় গণনাতে দেরি করার বৈধতা দিয়েছে। এগুলো নিম্নরূপঃ
১। যদি মামলা বা কার্যধারা দায়ের করার কিংবা ডিংক্রী জারির জন্য দরখাস্ত দাখিলের অধিকারী ব্যক্তি, যে সময় হতে তামাদির মেয়াদ গণনা করতে হইবে, সেই সময় নাবালক, উন্মাদ বা জড়বুদ্ধি থাকে, সেক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তি তার উক্ত অপারগতার অবসান হবার পর, অপারগতা না থাকলে, প্রথম তফসিলের তৃতীয় স্তম্ভে অথবা ১৯০৮ সালের দেওয়ানী কার্যবিধির ৪৮ ধারায় বর্ণিত যে মেয়াদের মধ্যে সে ওটা করতে পারতো, সেই মেয়াদের মধ্যে মামলা বা কার্যধারা দায়ের কিংবা দরখাস্ত দাখিল করতে পারবে।
২। যদি অনুরূপ কোনো ব্যক্তি, যে সময় হইতে তামাদির মেয়াদ গণনা করিতে হইবে, সে সময় উপরে বর্ণিত যেই কোনো দুইটি অপারগতার অবসান হইবার পূর্বেই সে আরেকটি অপারগতায় পতিত হয়, সেক্ষেত্রে সেই ব্যক্তি তাহার উভয় অপারগতার অবসান হইবার পর, অপারগতা না থাকিলে, উপরে বর্ণিত যে মেয়াদের মধ্যে সে ওটা করতে পারতো, সেই মেয়াদের মধ্যে মামলা দায়ের কিংবা দরখাস্ত দাখিল করতে পারবে।
৩। যদি অনুরূপ কোনো ব্যক্তির মৃত্যু পর্যন্ত তাহার অপারগতা অব্যাহত থাকে, সেইক্ষেত্রে তাহার আইনানুগ প্রতিনিধি ঐ ব্যক্তির মৃত্যুর পর অপারগতা না থাকিলে উপরে বর্ণিত যে মেয়াদের মধ্যে ওটা করা যেতো, সেই মেয়াদের মধ্যে মামলা দায়ের কিংবা দাখিল করতে পারবে।
৪। যদি উপরোক্ত ব্যক্তির মৃত্যুর তারিখে তাহার আইনানুগ প্রতিনিধি অনুরূপ কোনো অপারগতায় পতিত হয়, সেক্ষেত্রে তাদের ক্ষেত্রেও (১) ও (২) উপধারায় বিধৃত বিধানসমূহ প্রযোজ্য হবে।


৪) সময়ের অবিরাম চলন বলতে কি বুঝ? সময় একবার চলতে শুরু করলে পরবর্তী কোন অক্ষমতা বা অযোগ্যতা তাকে থামাতে পারবে না ব্যতিক্রম উল্লেখ সহ ব্যাখ্যা কর।
তামাদি আইনের ৯ ধারা অনুযায়ী,একবার তামাদির সময় উত্তীর্ণ হতে শুরু করলে পরবর্তী কোন অক্ষমতা অথবা অযোগ্যতার দ্বারা তা বন্ধ করা যাবে না। তবে শর্ত হলো যে, যেখানে পাওনাদারের সম্পত্তির পরিচালনার দায়িত্ব দেনাদারের উপর অর্পন করা হয়েছে সেখানে যতোদিন তার উপর উক্ত দায়িত্ব ন্যাস্ত থাকবে ততোদিন পর্যন্ত অনুরুপ দেনার অর্থ আদায়ের মামলার জন্য তামাদির সময়সীমা অতিবাহিত হওয়া মূলতবী থাকবে।
প্রশ্ন-৫ তামাদির সময় গণনার ক্ষেত্রে কোন কোন দিন বাদ যায়?
ধারা-১২


প্রশ্ন-৭ জবর দখল/বিরুদ্ধ দখল বলতে কি বুঝ? জবর দখরের উপাদান গুলি কি? কখন জবর দখরকৃত সম্পত্তিতে দখরকারীর স্বত্ব অর্জিত হয় এবং প্রকৃত মালিকের স্বত্ব বিলুপ্ত হয়? জবর দখলকৃত সম্পত্তিতে জবর দখলকারী ব্যক্তি কি চুড়ান্ত মালিকানা অর্জন করতে পারে?
জবরদখল:
আইনগত দখলের বিরুদ্ধে যে দখল তাকেই জবর দখল বলে।
কোন আইনগত স্বত্বের বিরুদ্ধে প্রতিকূল দখলকেই বিরুদ্ধ দখল বা জবর দখল বলে। অর্থাৎ যখন কোন বিবাদীর দখল বাদীর প্রতিকূল হয় তখনই জবর দখলের সৃষ্টি হয়। অন্য কথায় ১২ বছরের বেশী সময় ধরে অপরের সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করে রাখলে এবং উক্ত দখলের মধ্যে দখল পুনরুদ্ধারের জন্য সম্পত্তির প্রকৃত মালিক আদালতে শরনাপন্ন না হলে ঐ সম্পত্তির উপরে জবর দখলকারীর স্বত্ব অর্জিত হয় এবং তামাদি আইনের ভাষায় একেই জবর দখল বলে।এই বিষয় সম্পর্কিত বিধান তামাদি আইনের ২৮ ধারায় বর্ণিত আছে।
জবর দখলের উপাদান:
১) জবরদখলকারীকে প্রকৃতপক্ষে জমিতে দখলদার থাকতে হবে প্রকৃত দখল ছাড়া খতিযানের দখল গ্রহনযোগ্য নয়।
২) জবর দখলজনিতকারণেই জমিতে বেদখল অনুষ্ঠিত হতে হবে।
৩) অবশ্যই দখল নিরবিচ্ছন্ন, প্রকাশ্য এবং প্রকৃত মালিক সহ অন্যান্য সবার বিরুদ্ধে হতে হবে।
৪) জবরদখল জনিত কারণেই বেদখর অনুষ্ঠিত হতে হবে। বেআইনিভাবে দখল অথবা জবর দখল অনুষ্ঠিত না হলে জবর দখল প্রতিষ্টিত হবে না।
৬) বিবাদীর জবর দখল অবশ্যই বাদীর বিরুদ্ধেই হতে হবে।
৭) প্রকৃত মালিকের জ্ঞাতসারে জবরদখল হতে হবে।
৮) জবর দখল হবার সময় হতে ১২ বছরের মধ্যে অবশ্যই দখল পুনরুদ্ধারের জন্য বাদীকে মামলা দায়ের করতে হবে। অন্যথায় বিবাদীর সম্পত্তি অর্জিত হবে।
৯) জবর দখল পূর্বক সম্পত্তিটি দখলে রাখবার চেষ্টায় বিবাদীকে লিপ্ত থাকতে হবে।
১০) জবর দখলকারীকে বাদীর স্বত্ব অস্বীকারে নিজের দাবীতে জমিতে দখলদার থাকতে হবে।
১১) জবরদখল অর্থাৎ বিবাদীর দ্বারা জবরদখল জনিত কারণে বাদী সম্পত্তির উপর তার শর্ত হারাবে এবং বিবাদীর অনুকূলে সম্পত্তিতে স্বত্ব অর্জিত হবে।
১২) আইনসঙ্গতভাবে প্রথম দখল শুরু হলে পরবর্তীতে জবর দখলের দাবী উত্থাপন করা যাবে না।
কখন জবর দখলকৃত সম্পত্তিতে দখলকারীর স্বত্ব অর্জিত হয় এবং প্রকৃত মালিকের স্বত্ব বিলুপ্ত হয়:
তামাদির সময়সীমা অতিবাহিত হয়ে গেলে অধিকার লংঘনের প্রতিকার ধ্বংস হয়ে যায়, তবে অধিকারটি ধ্বংস হয় না। কিন্তু তামাদি আইনের ২৮ ধারাটি উপরোক্ত বিধানের ব্যতিক্রম। তামাদির সময়সীমা স্বত্বের মামলার জন্য নির্ধারিত রয়েছে ১২ বছর। খাস জমি হতে বাদী বেদখল হলে বেদখলের তারিখ হতে ১২ বছরের মধ্যে বিবাদীর বিরুদ্ধে স্বত্বে সাব্যস্তে খাসদখলের মামলা করতে ব্যর্থ হলে বাদীর শুধু প্রতিকারই নষ্ট হয় না। উপরন্ত সম্পত্তিতে বাদীর অধিকার পর্যন্ত বিনষ্ট হয়ে যায়। অন্যদিকে এই আইনের ২৬ ধারার বিধানের অলোকে ব্যবহার সিদ্ধ অধিকারের কারণে উক্ত  সম্পত্তিতে বিবাদীর অধিকার অর্জিত হয়। উল্লেখ্য যে তামাদি আইনের ২৬ ধারা বিধানকে বলা হয় অর্জনকারী প্রেসক্রিপশন এবং ২৮ ধারা বিধানকে বলা হয় বিলোপকারী প্রেসক্রিপশন।
জবর দখলকৃত সম্পত্তিতে জবর দখলকারী ব্যক্তি কি চুড়ান্ত মালিকানা অর্জন করতে পারে:
তামাদি আইনের ২৮ ধারায় বলা হয়েছে যে, কোন সম্পত্তির দখলপ্রাপ্তি জন্য মামলা দায়ের করার ব্যাপারে এই আইনের যে মেয়াদ নির্ধারিত  করে দেয়া হয়েছে তা উত্তীর্ণ হবার পর উক্ত সম্পত্তিতে দাবীর বিলুপ্তি হয়ে যাবে।
সুতরাং এই আইনের ২৮ ধারা বিধান মোতাবেক কোন বাদী যদি তার খাস জমি হতে বিবাদী কর্তৃক বেদখল হয় , তাহলে সে ক্ষেত্রে বাদীকে অবশ্যই বেদখলের তারিখ হতে ১২ বছরের মধ্যে আদালতে হাজির হয়ে বিবাদীর বিরুদ্ধে স্বত্ব সাব্যস্তে খাস দখরের মামলা করতে হবে। অন্যথায় দাবীকৃত জমিতে বাদীর সর্বপ্রকার অধিকার এবং স্বত্ব ধ্বংস হয়ে যাবে। যে সময় হতে জবর দখলের কারণে বাদীর মালিকানা বিলুপ্তি হয়ে যাবে ঠিক ঐ সময় হতেই জবর দখলকারীর উপর সংশ্লিষ্ট জমির মালিকানা বর্তাবে। আর এভাবেই জবর দখলের মাধ্যমে প্রকৃত মালিক ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তির সম্পত্তির উপর বৈধ বা আইনগত স্বত্ব অর্জিত হয়ে থাকে।






























তামাদি আইন - ১৯০৮
ঞযব খরসরঃধঃরড়হ অপঃ
৯নং আইন/১লা জানুয়ারী ১৯০৯
ধারা ১ - সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, আওতা
ধারা ২ - সংজ্ঞা
ধারা ৩ - তামাদির মেয়াদ অন্তেদায়েরকৃত মামলা ইত্যাদি খারিজ ।
ধারা ৪ - আদালত বন্ধ থাকিলে তখনকার কার্য পদ্ধতি ।
ধারা ৫ - ক্ষেত্রবিশেষে মেয়াদ বৃদ্ধিকরন ।
ধারা ৬ - বৈধ অপারগতা/আইনগত অক্ষমতা ।
ধারা ৭ - একজনের অক্ষমতা বা অপারগতা ।
ধারা ৮ - বিশেষ ব্যতিক্রম ।
ধারা ৯ - সময়ের অবিরাম চলন ।
ধারা ১২ - আইনানুগ কার্যদ্বারায় যে পরিমান সময় গননা হইতে বাদ দিতে হইবে ।
ধারা ১৩ - বাংলাদেশ এবং কয়েকটি এলাকা হইতে বিবাদির অনুপস্থিত থাকাকালীন সময় গননা হইতে বাদ দিতে হইবে ।
ধারা ১৪ - এখতিয়ার বিহীন আদালতে সত্ উদ্দেশ্যমূলক কার্যদ্বারায় যে পরিমান সময় গননা হইতে বাদ দিতে হইবে ।
ধারা ১৫ - কার্যক্রম স্থগিত থাকাকালীন সময় যে পরিমান সময় গননা হইতে বাদ দিতে হইবে ।
ধারা ১৬ - ডিক্রজারীতে বিক্রয় রদ করিবার কার্যদ্বারা মুলতবী থাকাকালীন যে পরিমান সময় বাদ দিতে হইবে ।
ধারা ১৭ - মামলা করিবার অধিকার অর্জনের পূর্বে মৃত্যু র ফলাফল ।
ধারা ১৮ - প্রতারনার ফলাফল ।
ধারা ১৯ - লিখিত প্রাপ্তিস্বীকার ।
ধারা ২০ - উত্তর দায় সংক্রান্ত ঞ্চিন পরিশোধ অথবা সুদ প্রদানের ফলাফল ।
ধারা ২১ - অক্ষম ব্যক্তির প্রতিনিধি ।
ধারা ২৩ - অবিরাম চুক্তিভঙ্গ বা অন্যায় করা ।
ধারা ২৫ - দলিলের সময়ের গননা ।
ধারা ২৬ - সুখাধিকার ।
ধারা ২৮ - সম্পত্তির অধিকার বিলুপ্তি ।
ধারা ২৯ - সংরক্ষন ।